#অন্তরালে_আগুন
#পর্ব:৩
#তানিশা_সুলতানা
তালুকদার মহল যতটা বিশাল এখানে বসবাস কারী লোকজনের সংখ্যাও তেমন বেশি। মজনু তালুকদারে তিন সন্তান এবং এক মেয়ে। বড় ছেলে রাজিব তালুকদার। তার স্ত্রী নীরা এবং তিন সন্তান। দুই মেয়ে সিনথিয়া এবং স্নেহা। এবং এক ছেলে নিরব। সিনথিয়া দেশের বাইরে থাকেন। স্নেহা দেবেন্দ্র কলেজে অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়াশোনা করছে। আর নিরব ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার।
মজনু তালুকদারের মেঝো ছেলে নায়েব তালুকদার। যিনি গত চার বছর যাবত শিক্ষা মন্ত্রীর আসনে বসেছে। তাছাড়াও আরও কিছু বিজনেস রয়েছে তার। আরএফএল কোম্পানি ওনারই।
নায়েব তালুকদারের স্ত্রী আমিনা এবং ওনাদের একটাই সন্তান। নওয়ান রিশাদ মুসতালিন।
মজনু তালুকদারের ছোট ছেলে রাশেদুল। তার স্ত্রী আছিয়া এবং এক মেয়ে রিতি। ক্লাসস ফাইভ এ পড়ছে।
তেরোজন সদস্য নিয়ে মজনু তালুকদারের সংসার।
তার মেয়ে মাফুজা হাজব্যান্ড এর সঙ্গে সিঙ্গাপুর থাকেন। বছরে দুই একবার আসে তালুকদার মহলে।
তাছাড়াও কাজের মহিলা আছে আট জন। তাদের কাজ শুধুমাত্র তালুকদার বাড়ির বউদের কাজে সহায়তা করা।
তাছাড়াও মজনু তালুকদারের স্ত্রীর জন্য দুজন মহিলা রাখা হয়েছে।
আমিনা তালুকদার ভীষণ যত্ন সহকারে পায়েস রান্না করছে। রান্না করতে ভীষণ ভালোবাসেন তিনি৷ ছেলের পছন্দের সব রান্না নিজে হাতেই করেন। ভীষণ মেধাবী স্টুডেন্ট ছিলেন। ইচ্ছে ছিলো চাকরি করার। কিন্তু তেরো বছরে পা রাখতেই বাবা বিয়ে দিয়ে দেয়। পনেরো বছরে পুত্র সন্তানের জননী হয়। এক বছরের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে এসএসসি পরিক্ষার আসনে বসেন। ৮৫% মার্কস নিয়ে এসএসসি পরিক্ষায় পাস করেন।
তারপর সন্তান বড় হতে থাকে। সেই সাথে আমিনা বেগমও পড়ালেখা চালিয়ে যায়।
নওয়ানকে স্কুলে দিয়ে তারপর তিনি ক্লাস করতে যেতেন।
স্নেহা বড়ই আশাহত হয়ে কিচেনে ফিরে আসে। আমিনার পাশে মোড়া টেনে বসে পড়ে গালে হাত দিয়ে। আঁখি পল্লবে অশ্রু জমে উঠেছে ইতোমধ্যেই। নওয়ান যে না খেয়েই বেরিয়ে গেলো। কান্না পাবে না?
“শাশুড়ী মা আপনার ছেলে না খেয়েই বেরিয়ে গেছে সিগারেট টানতে টানতে। সত্যি করে বলুন তো ছেলে পেটে নিয়ে আপনিও সিগারেট টেনেছেন কি না?
আমিনা হাসে। ভীষণ সুন্দরী মহিলা তিনি। বয়স বিয়াল্লিশ ছুঁয়েছে কিছুদিন আগেই। তবুও সৌন্দর্যের কমতি নেই এতটুকুও।
” আমাকে শাশুড়ী বলে ডাকছিস। বাজান শুনতে পেলে তোকে ধমকে আধমরা করে ফেলবে।
বেহায়া আঁখি পল্লব থেকে গড়িয়ে পড়া অশ্রুকণা হাতের উল্টো পিঠে মুছে নেয় স্নেহা। তেঁজি স্বরে বলে
“ধমকাক মারুক কাটুক।
তবুও উনি শুধু আমার হোক।
আপনি জলদি আমাদের বিয়ে দিয়ে
বাকিটা শেষ করতে পারে না স্নেহা। তখুনি তার মা নীরা কিচেনে ঢুকে পড়ে। বড়ই শক্ত গলায় বলে
” আজকে তোমার ক্লাসস আছে না? এখানে কেনো তুমি? যাও
স্নেহা মাথা নিচু করে চলে যায়। মাকে বড্ড ভয় পায় সে। শুধু মা নয় মেঝো মা ছাড়া আর কারো সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নেই।
স্নেহা যেতেই নীরা আমিনাকে উদ্দেশ্য করে বলে
“আমিনা তুমি যদি ভেবে থাকো আমি মেয়েকে দিবো তোমার ছেলের সাথে। সেটা তোমার ভুল ধারণা।
তোমার বেয়াদব ছেলে
বাকিটা শেষ করার আগেই আমিনা বলে
” ভাবি বুঝেছি আমি।
স্নেহাকেও বুঝিয়ে বলবো। তাছাড়া আমার ছেলে মেয়ে তুলে নিয়ে আসবে দেখিও। আমার কথা শুনবে না।
নীরা আর কিছু বলে না। বেরিয়ে যায় কিচেন থেকে। আমিনা পায়েস ছোট ছোট বাটিতে বেরে নেয়। এবার এগুলো ঠান্ডা করে ফ্রীজে ঢুকিয়ে রাখবে৷ ঠান্ডা ঠান্ডা পায়েস খেতে বড্ড ভালোবাসে নওয়ান। মধ্য রাতে ফ্রীজ খুলে পায়েস, জুস, সেমাই এসব না পেলে মাথা গরম হয় তার।
___
মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র কলেজের সামনে ছোট্ট একটা পুকুর রয়েছে। সেই পুকুর পার হওয়ার জন্য ছোট্ট ব্রিজ। ব্রিজের সামনে একটা মিষ্টির দোকান তারপরই কোর্ট চত্তর। মানে বিশাল জায়গা জুড়ে উকিলদের চেম্বার, জেল খানা এবং কোর্ট। ভীষণ সুন্দর করে সাজানো কলেজসহ কোর্ট চত্তর।
নুপুর মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আসমান জুড়ে মেঘ সেজেছে। যখন তখন ঝুমঝুম করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করবে।
বিরক্ত নুপুর চোখ মুখ কুঁচকে আসমান পানে তাকায় এক পলক পরপরই ফোনের স্কিনে। সেই কখন থেকে বাবাকে কল করছে। কোর্টের ভেতরে ঢুকেছে বাবা। নুপুরের মামা আনোয়ার উকিল। আজকে একটা কেসের শুনানি রয়েছে। সেটার মেইন শাক্ষী নুপুরের বাবা নাসির।
হঠাৎ করে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়তে শুরু করে। আর তখনই কোর্ট চত্তর থেকে হৈ-হুল্লোড়ের আওয়াজ ভেসে ওঠে।
ছাত্র জনতার উল্লাস। মানে কেসটা জিতে গেলো নওয়ান রিশাদ মুসতালিন?
এক বছর আগে বেশ নামকরা উকিল আতোয়ার খালেক খু*ন হয়। মধ্য দুপুরে মানিকগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে জনগনের সামনে শিক্ষা মন্ত্রী নায়েব তালুকদারের একমাত্র ছেলে নওয়ান রিশাদ মুসতালিন তার দলবল নিয়ে খু*ন করেছিলো আতোয়ার খালেককে।
তার অপরাধ ছিলো নায়েব তালুকদারের বিরুদ্ধে কেস ফাইল করেছিলো।
মজার ব্যাপার হলো এতো এতো মানুষের সামনে খু/ন করার পরেও একজন শাক্ষী পাওয়া যায় নি তার বিরুদ্ধে।
দীর্ঘ এক বছর কেস চললো। কিন্তু অপরাধী শাস্তি পেলো না। এক ঘন্টাও নওয়ানকে জেলে রাখা যায় নি।
নুপুর সেইদিন কলেজে এসেছিলো। বরাবরের মতো দেবেন্দ্র কলেজের সামনে থাকা শহিদ মিনারের সামনে বসে সিগারেট খাচ্ছিলো। পুলিশ আসলো সালাম দিলো এবং নত স্বরে বললো
“স্যার একটু থানায় যেতে হবে।
রিশাদ তার দলবল নিয়ে চলে যায় থানায়৷ এসিপির আসনে বসে সিগারেট শেষ করে কয়েকটা। সেই মুহুর্তেই ওপর মহলের এসিপি কল করে জানায় নওয়ানকে ছেড়ে দিতে হবে।
ব্যাসস হৈ হুল্লোড় করতে করতে থানা থেকে বেরিয়ে যায় নওয়ান।
নওয়ানের ভাষায় ” পুলিশ তার একটা চুলও ছিঁড়তে পারলো না”
কোর্ট চত্তরের গেইট দিয়ে বের হয় নওয়ান। বরাবরের মতো ঠোঁটের ভাজে সিগারেট। চোখে কালো রোদ চশমা। পরনে ব্যান্ডের কালো রংয়ের টিশার্ট। নুপুর ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে থাকে নওয়ানের মুখ পানে। জয়ের উল্লাসে মুখ খানা চকচক করছে।
ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করে সেই মুহুর্তেই। বৃষ্টির ফোঁটায় ভিজে যেতে নেয় নওয়ান। বল্টু তারাহুরো করে মাথার ওপরে ছাতা ধরে। তাতেও রক্ষা হয় না। কয়েক ফোঁটা পানি ভিজিয়ে দেয় নওয়ান এর বড়বড় চুল গুলো। কালো রংয়ের জিপ খানা গেইটের বাইরেই রাখা।
কি মনে করে গাড়িতে ওঠে না নওয়ান। বরং মিষ্টির দোকানের দিকে পা বাড়ায়।
নুপুর ভ্রু কুঁচকায়। এখন দলবল নিয়ে এই ছোট্ট দোকান খানা দখল করবে না কি? বিরক্তিকর পরিস্থিতি।
হলোও তাই। নওয়ান ঠিকঠিক নুপুরের পাশে এসে দাঁড়ায়। তার চেলাপেলারা সবাই বৃষ্টির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকে। তাদের বস ভেতরে ঢুকেছে মানে তাদের ঢোকার পারমিশন নেই।
নুপুর ব্যাগ থেকে ফোন বের করে তাতে মনোযোগ দেয়। ইতিমধ্যেই বাবাকে কয়েকবার কল করে ফেলেছে। কিন্তু উনি কল রিসিভ করছে না। পাশ থেকে চন্দন কাঠের এবং সিগারেটের গন্ধ ভেসে আসছে। নুপুরের নাকে লাগছে বেশ।
দোকানদার তাড়াহুড়ো করে একটা চেয়ার এগিয়ে দেয় নওয়ানের দিকে। সেটা নিজের শার্ট দ্বারা মুছে বলে
“বস বসুন প্লিজজজ।
বেয়াদবটা চট করেই বসে পড়ে। এক খানা সিগারেট ঠোঁটের ভাজে ঢুকিয়ে চেয়ারের হাতলে তবলার মতো বাজাতে বাজাতে গান ধরে
“বৃষ্টি ভেজা স্বপ্ন দে
রোদেলা কিছু গল্পতে
বাসবো ভালো কাছে আয়
ও জানে না
মানতেই হবে নওয়ান এর কন্ঠস্বর ভীষণ সুন্দর। যে কেউ মুগ্ধ হবে তার গান শুনে। নুপুরও তার ব্যতিক্রম নয়। এই প্রথমবার বোধহয় মন দিয়ে গান শুনলো।
গান শেষ করে নুপুরের ওড়নায় হাত দেয়। চমকায় নুপুর দুপা পিছিয়ে যায়। নওয়ান বরাবরের মতো আড়াআড়ি ভাজে ভ্রু কুচকে সিগারেটে টান দেয়। গাল ভর্তি ধোঁয়া নিয়ে বলে
” বাল দেখতেছিস না ভিজে গেছি। মাথা মুছে দে।
নুপুর দাঁতে দাঁত চেপে নিজের ওড়না খানা নওয়ানের হাত থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা চালায়।
“ডোন্ট ক্রস ইউওর লিমিট মিস্টার বেয়াদব।
নওয়ান চোখে থাকা চশমা খানা নাক ওবদি নামায়। এবং নুপুরের চোখে চোখ রেখে বলে
“লিমিট তো তোর বাপ ক্রস করে ফেলেছে মিস ইঁদুর।
নওয়ান রিশাদ মুসতালিন এর বিরুদ্ধে অভিযোগ? আবার আদালতে শাক্ষী দিয়েছে।
তোর বাপের সামনে তোরে ধর্ষণ করবো। তারপর দেখবো শা
বাকিটা শেষ করতে পারে না নওয়ান। নুপুর ঠাসস করে থাপ্পড় বসিয়ে দেয় নওয়ানের গালে।
আঙুল তুলে বলে
” জানোয়ার
বুঝে শুনে কথা বলবেন। আমার বাব
নওয়ান নুপুরের কোমর জড়িয়ে ধরে। কামিজের ফাঁকা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দেয়। চিৎকার করে ওঠে নুপুর। ইতিমধ্যেই আঁখি পল্লবে অশ্রু জমেছে।
নওয়ান দাঁতে দাঁত চেপে বলে
“শালী পাবলিক প্লেসে নওয়ান এর গায়ে হাত তুলেছিস?
আই নো রোমান্টিক ওয়েদার সামনে হট একটা ছেলে বসে আছে। নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছিস না? বেডে যাওয়ার জন্য গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে?
নুপুর দাঁতে দাঁত চেপে নওয়ানের পায়ে পারা দেয়। উঁচু জুতো হওয়ার ফলে বেশ ব্যাথা পায় বেয়াদবটা। নুপুরকে ছেড়ে দেয়।
সেই সুযোগেই দু পা পিছিয়ে যায় নুপুর। হিজাব করেছে। তাই এক্সট্রা ওড়নাটা যেটা নওয়ান ধরেছিলো সেটা নওয়ানের মুখে ছুঁড়ে মেরে বলে
“যেটায় জানোয়ারের হাত পড়ে
নুপুর সেটা ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে।
বলেই বড় বড় পা ফেলে চলে যায়। বৃষ্টি কমে গেছে।
নওয়ান ঠোঁটের ভাজে থাকা সিগারেট হাতে নিয়ে চশমা খানা খুলে ফেলে।
” বল্টু শালিরে খেয়ে ছেড়ে দিবো না।
ডিসাইড করে ফেলেছি রেখে দিয়ে সারাজীবন খাবো।
বল্টু মাথা নেরে বলে
“যেমনটা বলবেন ভাই।
মিষ্টির দোকান থেকে কিছুটা এগোলেই দুই পাশে সারি সারি আরও দোকানপাট রয়েছে। যেমন ঘড়ি, সানগ্লাস, ফাস্টফুড, মুদি দোকান এমনকি অনেক গুলো ফুলের দোকানও রয়েছে।
নুপুর গুড়ি গুড়ু বৃষ্টির মধ্যে একা একা হাঁটছে। কোথা থেকে স্নেহা দৌড়ে আসে। তার মাথায় ছাতা।
ছাতা খানা নুপুরের মাথার ওপর ধরে আর কাঁপা স্বরে বলে
” আপু তুমি না ওর বিহেভিয়ার এ কষ্ট পেয়ো না। অভিশাপও দিও না ঠিক আছে?
আমার কাছে সাদা ওড়না আছে। একদিনও ইউজ করি নি।
বলতে বলতে ব্যাগ থেকে ওড়না খানা বের করে নুপুরের সামনে ধরে। দাঁড়িয়ে পড়ে নুপুর। ছোট ছোট চোখ করে তাকায় স্নেহার পানে। মেয়েটা বোধহয় ঘাবড়ালো। কিন্তু দমলো না।
“প্লিজজ আপু রাগ করিও না। ওড়নাটা নাও আর ওনাকে ক্ষমা করে দাও।
নুপুর মৃদু হেসে স্নেহার মাথায় হাত বুলায়।
” তুমি বড্ড সরল। তবে এতোটা সরল হওয়া ভালো নয়। একটু চালাক হও।
নাসির রিকশা নিয়ে এসেছে। নুপুরকে উঠতে বলে রিকশায়। স্নেহার পানে আরেক পলক তাকিয়ে রিকশায় উঠে পড়ে নুপুর। এবং মুহুর্তেই চলে যায় চোখের আড়ালে।
স্নেহা নুপুরের চলে যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বিরবির করে বলে
“সরল হয়ে যদি তাকে পাওয়া যায় তবে আমি গোটা জীবন এমনই থাকতে চাই।
___
নায়েব তালুকদার মানিকগঞ্জ ফিরেছে। সবার প্রথমে থানায় যায়। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে পরামর্শ সেরে নিজের বাড়িতে প্রবেশ করে।
আমিনা চাতক পাখির ন্যায় অপেক্ষা করতে থাকে স্বামীর অপেক্ষায়। যেদিন বাসায় আসে তার এক সেকেন্ড দাঁড়ানোর সময় হয় না। তিনি কি খাবেন? কোন শার্ট পড়বেন? কোথায় ঘুমবে এসব নিয়ে ছোটাছুটি করতে করতেই দিন যায়।
আজকেও তার ব্যতিক্রম নয়৷ আমিনা নিজ হাতে সব রান্নাবান্না শেষ করেছে।
এখন টেবিলে খাবার সাজিয়ে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করছে। ইতিমধ্যেই মজনু তালুকদার খাবার টেবিলে এসে বসেছে। বড় ছেলে কিছু কাজে শহরের বাইরে গিয়েছে। নিরব এসে দাদার পাশে বসে।
সিঁড়ি বেয়ে নায়েব তালুকদারকেও নামতে দেখা যায়। এখনই বলবে “বাজান কোথায় আমার?”
তাই আমিনা দৌড় লাগায় নওয়ানের কক্ষের পানে।
মহারাজ ঠোঁটের ভাজে সিগারেট পুরে গিটারে টুংটাং আওয়াজ তুলছে।
সেই সঙ্গে তাল মেলাচ্ছে
“মনে লয় চাহিয়া
দেখি নয়ন ভরিয়া
দেখি না বন্ধু তোমায় আজ বহুদিন
আমিনা মুচকি হাসে। এগিয়ে গিয়ে হাত বুলিয়ে দেয় নওয়ানের মাথায়।
” বাজান খেতে এসো। বাবা অপেক্ষা করছে।
নওয়ান মাথা নেরে গিটার রাখে। ঠোঁটের ভাজের সিগারেট ফেলে মায়ের পেছন পেছন উপস্থিত হয় খাবার টেবিলে।
একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ে। স্নেহা তারাহুরো করে খাবার বেরে দেয়। ভাত ডাল আর সবজি । নায়েব নিজের প্লেটে এক পিচ ইলিশ মাছ নিয়ে খুবই যত্ন সহকারে কাটা বেছে নওয়ান এর প্লেটে দিতে থাকে। এবং বলে
“বাজান যে কোনো মূল্যে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসতেই হবে আমায়। ক্ষমতা একবার হাতে চলে আসলে বাংলাদেশ হাতের মুঠোয় থাকবে।
জীবনে ক্ষমতা পাওয়া আর টাকা ছাড়া আর কিছুই ইমপটেন্ট নয়।
নওয়ান মুখে ভাত পুরে বাবাকে আশ্বস্ত করে বলে
” সব হয়ে যাবে।
মজনু বলে
“তোমার কোর্টের শুনানি কি হলো?
” পজেটিভ।
বাট চেয়ারম্যান বড্ড জ্বালিয়েছে।
আমি ডিসাইড করে ফেলেছি চেয়ারম্যান এর মেয়েকে বিয়ে করবো।
স্নেহার হাত থেকে ডালের বাটিটা পড়ে যায়।
চলবে
Share On:
TAGS: অন্তরালে আগুন, তানিশা সুলতানা
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ১১
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ৫(৫.১+৫.২)
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ৯
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ১৬
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ২২
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ১০
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ১ (১ম অংশ+ শেষ অংশ)
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ২১
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ৮
-
অন্তরালে আগুন পর্ব ২৮