নিষিদ্ধ_চাহনা
পর্ব_০২
লেখিকাসারাচৌধুরী
🚫অনুমতি ব্যাতিত কপি করা নিষিদ্ধ🚫
আমি যেহেতু আপনাদের পারিবারিক ডাক্তার সেহেতু আমি কিছু বললাম না..কিন্তু এটা কিন্তু রেপ কেস।। পুলিশ জানলে মিনিমাম পাঁচ বছরের জেল হবে..!আতিয়া বেগম কেপে সে কখোনো ভাবতেও পারি নি তার ছেলে এত খারাপ কাজ করবে..মেয়েটাকে সে সহ্য করতে পারতো না ঠিক আছে তাই বলে এভাবে ধর্ষ*ন করে মেয়েটার পুরো ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিতে পারলো…!
পুরান ঢাকার বেশ নাম করা চৌধুরী বাড়ি..এহসান চৌধুরী হাতে তৈরী এই বাড়ি তার নাম্মানুসারেই চৌধুরী বাড়ি রাখা হয়..চৌধুরী বাড়িকে চেনার আর একটা বিশাল উপাই চৌধুরী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিস যার বর্তমান মালিক ইলিয়াস চৌধুরী।।এহসান চৌধুরীর দুই ছেলে বড় ছেলে ইলিয়াস চৌধুরী আর ছোট ছেলে আহাদ চৌধুরী..ইলিয়াস চৌধুরীর স্ত্রী আতিয়া বেগম..ইলিয়াস চৌধুরীর দুই ছেলে এক মেয়ে।। বড় ছেলে ইশান চৌধুরী বর্তমান বাবার ব্যাবসা সামলাচ্ছে.বয়স আঠাস বছর।।আর ছোট ছেলে সাদিকুর চৌধুরী ডাক্তারি পড়ছে..বয়স বাইশ।।আর মেয়ে ইরিনা চৌধুরী বিয়ে হয়ে গেছে কিছুদিন আগেই।। ইলিয়াস চৌধুরীী ছোট ভাই আহাদ চৌধুরী।। স্ত্রী মাহিয়া খাতুন..আহাদ চৌধুরীর দুই মেয়ে এক ছেলে বড় মেয়ে মেহু চৌধুরী।। বিয়ে হয়ে কিছু বছর আগে বর্তমান ইন্ডিয়া তে থাকে…ছোট মেয়ে পিহু চৌধুরী বয়স পনেরো।। দশম শ্রেনিতে পড়ে।।আর ছেলে সাইম চৌধুরী।।
চার বছর আগে গ্রামে ঘুরতে গিয়েছিলো তারা পুরো পরিবার সেখান থেকে আশার সময় তাদের একটা গাড়ি খাদে পড়ে যায় ফলে গাড়ির ভিতরে থাকা সকলেই মারা যায়..গাড়িতে ছিলো আহাদ চৌধুরী.. সাইম..এহসান চৌধুরী আর মাহিয়া খাতুন আর আহাদ চৌধুরীর আম্মা ফাল্গুনি শেখ।। সবাই সাথে সাথেই হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয় রাস্তায় যেতে যেতে আহাদ চৌধুরী ইলিয়াস চৌধুরীর হাত ধরে বলে ভাই আমার মেয়ে দুটোকে দেখে রাকিস তারপর ই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে ইলিয়াস চৌধুরীর কলিজা প্রায় ভাই আহাদ…একদিনেই ঝরে যায় চৌধুরী পরিবার থেকে পাচ পাচটি প্রান..!
সেদিনের পর থেকে পুরো পরিবার টাকে আগলে রেখেছেন ইলিয়াস চৌধুরী।। পিহুকে নিজের মেয়ের মতো করে ভালোবেসেছেন।।মেহুকে ভালো পরিবারে বিয়ে দিয়েছেন..ছোট থেকেই সাদি আর পিহুর সম্পর্ক ভালো ছিলো কিন্তু হটাৎ কি হলো জানেনা বিনা কারনে মারামারি বেধে যায় দুজনের।।বর্তমানে মেহু গুছিয়ে নিয়েছে তার পাসপোর্ট এর ভিসা শেষ যেহেতু বিয়ে আর হচ্ছে না এই ঝামেলায় সেহেতু চলে গিয়েও তার আফসোস নেই।।সে খুব জোর করলো পিহুকে নেওয়ার তবে আতিয়া বেগম রাজি না..এক সময় হতাশ হয়ে বোনের কপালে চুমু খেলেন..তার নিস্পাপ বোনটার সব শেষ।।রাগে চোখ জল জল করে উঠলো। আতিয়া বেগম কে জড়িয়ে দজরে মেহু কেদে উঠলো তার খুব একা লাগে তবুও মেয়েদের আসল ঠিকানা শশুর বাড়ি।।তাই আর দেরি না করে পিহুর খেয়াল রাখতে বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো মেহু গন্তব্য এয়ারপোর্ট।।
ইলিয়াস চৌধুরী নিচে এসে ।মেইন দরজা থেকে বের হতে যাবে ঠিক তখনই একটা ছেলে এসে দাড়ালো তার সামনে হাতে একটা খাম..ইলিয়াস চৌধুরী কিছু বলার আগেই ছেলেটি বলে উঠে ইলিয়াস চৌধুরী কে একটু ডেকে দিবেন…ইশান এতক্ষন কিছু না বলে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো এখন সে বেশ জোরেই রাসভারি কন্ঠে বলে উঠলো। যার সাথে কথা বলছো তার কাছেই তার খোজ করছো..! ছেলেটি হতভম্ব হয়ে হাতের খামটি ইলিয়াস চৌধুরীর হাতে দিলো তারপর কাপাকাপা কন্ঠে বললো..সাদি ভাই পাঠিয়েছে..ইশান ছেলেটির কলার চেপে ধরলো ছেলেটির ভয়ে জান যায় যায় অবস্থা দেখেই বুজতে পেরেছে এরা সব রেগে আছে..ইশান বেশ কঠিন কন্ঠেই বললো..
ইশান:- সাদি কই…?
ছেলেটি:- ভাই তো একটু আগে এইটা আমার হাতে দিয়ে বললেন দিয়ে আসতে আপনাদের কাছে।।
ইশান:-তুই সাদিরে ভাই বলছিস তাহলে আমাদের চিনিস না কেন..?
ছেলেটি :- আসলে ফারজু আপুর সাথে সাদি ভাইয়া পেম করতো আর আমি ফারজু আপুর বাড়ির পাশেই থাকি…?
এবার ইলিয়াস চৌধুরী আর ইশান দুজনেই চমকে গেলো তার মানে সাদি এই জন্য গম্ভীর ছিলো ফারজুর সাথে ইশান এএ বিয়ে হচ্ছে বলে কিন্তু সে তো কখোনো বলে নি এসব…ইশান ছেলেটিকে ছেড়ে দিলো সাথে সাথে ছেলেটি দৌড়ে চলে গেলো সে জেনো এটার অপেক্ষা করছিলো..ইশান ইলিয়াস চৌধুরীর হাত থেকে খাম নিয়ে ভিতরে এসে বসতেই মেহু আসলো..মেহু সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যেতেই ইলিয়াস চৌধুরী ইশানকে চিঠি টা পড়তে বলেন..ইশান চিঠির ভাজ খুলে দেখে দুটো চিয়াথি প্রথম চিঠি টা হাতে নিয়ে খুলে পড়া শুরু করলো ইশান……
প্রিয় আব্বু,,
জানি আজ আমি কত বড় ভুল করে ফেলেছি কখোনো মাফ করবা কি জানিনা তাও মাফ করে দিও।।আমি জানি চিঠিটা তুমি পড়বা না ভাইয়া পড়বে. আমি কানাডা চলে যাচ্ছি.. যদি মনে চাই কোম্পানির শেয়ার এর কানাডার অংশ টুকু আমাকে দিয়ে দিও।।আর না দিলেও লাগবে না..আমি ডাক্তারি শেষ করছি প্রায় তিন বছর লাগবে..তোমার সপ্ন পুরন করবো..আমার ভুকের জন্য মাফ করে দিও..আম্মুকে দেখে রাখিও..আমি ঠিক থাকবো আমি সব ঠিক করে নিয়েছি আমার কোনো যোফাযোগ পাবে না..খুজলেও তবে একদিন তোমার সামনে আসবো এক চরম সত্যি নিয়ে ইনশাল্লাহ ভালো থাকবা..!
ইতি তোমার এখন কার অপদার্থ।
চিঠি টা পড়ে ইশান ইলিয়াস চৌধুরীর দিকে তাকালেন।। ইলিয়াস চৌধুরী শান্ত কন্ঠে বললেন পরের চিঠি পড়ো.ইশান আবার পরের চিঠি টুকু পড়া শুরু করলো।।
প্রিয় ভাইয়া,,,
আমি জানি তুই পড়ছিস..ফারজুরে আমি সেই ক্লাস টেন থেকে ভালোবাসি আর আজ তোর সাথে বিয়ে হলো।।ওরে কখোনো ভাবি হিসাবে মানতে পারবো না তাই খুব রাগ উঠছিলো আমি কখোনো নেশা করিনা।।তবে রুম থেকে আশার পর আমার রুমে দেখলাম তোর বন্ধুরা রেখে যাচ্ছে হয়তো পরে খাবে।। আমি কস্ট ভুলতে খেয়ে ফেলছি আর জানিনা আর যখন আমি নিজের মধ্যে আসলাম তখন দেখলাম আমি পিহুকে নষ্ট করে ফেলছি।।ভাইয়া তুই তো জানিস আমি কেমন।।আমারে ভুল বুজিস না..আমি যখন নিজের ভুল পারছি তাই চলে আসলাম এ দেশে নইতো বাংলাদেশ থাকতাম..প্রথমত ফারজু তোর বউ আর দ্বিতীয়ত পিহুর জীবন সেই কস্ট আমি নিতে পারতাম না চলে এসেছি এখানে..পিহু বড় হলে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিস.. আজ কের পর থেকে আমারে ও ঘৃনা শুরু করবে আমি জানি।। তবুও বলছি ওর বিয়ে দিতে সমস্ত খরচ আমি বহন করবো..ভালো থাকিস ভাইয়া।।।
ইতি তোর।। পিচ্চি ডাক্তার
ইশান এর চোখ পানিতে টলমল করলো সেও জানে তার ভাই কেমন তবে আজ যা করছে এর ভুল মাফ হয় না..ইলিয়াস চৌধুরী রেগে বলে উঠলেন..অমানুষ ততৈরি করেছি মেয়েটাকে মৃত্যু যন্ত্রনা দিয়ে বলে কিনা মাফ করে দিতে তার বিয়ের খরচ সে বহন করবে..!
এদিকে সাদি এয়ারপোর্টে আছে সব কিছু পার করে এবার প্লেনে গিয়ে বসলো।।কিছুক্ষন যেতেই প্লেন টি রানওয়ে ছেড়ে আকাশের মেঘের মাঝে হারাতে লাগলো শত শত যাত্রী শত রকমের সপ্ন..সাদি চোখের উপর হাত দিয়ে সিটে হেলান দিতেই ভেসে উঠে পিহুর সেই কান্নার দৃশ্য..সাদি তড়িৎ বেগে চোখ খোলে তারপর বিড়বিড় করে বলে…
-“সরি রে পিহু আমি অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি.. তবে একদিন আমি ফিরবো।। তোর জিবন থেকে হারানো সব কিছুর বদলা নিবো। তুই আমি ঘৃনার খাতায় রেখে হলেও মনে রাখিস।।
সাদি দীর্ঘশাস ছাড়লো আজথেকে তার নতুন করে জীবন শুরু।। পিহুর মুখ টা সব সময় ভাসছে তার মনে..সাদি এক দৃষ্টিতে সিটের পাশে জানালার দিকে তাকালো রাতের আকাশে চারিদিক অন্ধকার।। সাদি চোখের উপর হাত রেখে ঘুমিয়ে গেলো।।
চলবে……………..
-(নতুন এক ডাক্তার+রোমান্টিক+রিভেঞ্জ রিলেটেড গল্প হাজির..তোমাদের ভালো রেসপন্স পেলে পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আসবে…আজকের পর্ব কেমন হয়েছে বলে জাও আশা করি ভালো লাগবে)-
Share On:
TAGS: নিষিদ্ধ চাহনা, সারা চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৮
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১৪(ক+খ)
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৬
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৬
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১৩
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৩
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৩
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ২০
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৫
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৯(ক+খ)