নিষিদ্ধ_চাহনা
পর্ব_১৭
লেখিকাসারাচৌধুরী
🚫অনুমতি বাদে কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ🚫
-“তো এখানে কারে আশা করেছিলি…?
সাদির এমন কথাই পিহুকি বলবে বুজে উঠতে পারে না।চুপ হয়ে যায়।পিহুকে চুপ থাকতে দেখে সাদি বলে উঠে..
-“কি আমার কথার উত্তর দিলি না কেন…?
পিহু মুখ নিচু রেখেই মিনমিনিয়ে বলে..
-“ক..কি বলবো…?
পিহুর এমন মিনমিন করা শুনে সাদির রাগ উঠে মাথায় তবে এই সকাল সকাল রাগ করতে চাই না তাই ঠান্ডা কন্ঠে বললো…
-“চোখে পানি কেনো…?
পিহু চুপ রইলো,,পিহুর চুপ থাকা সাদির কাছে সব উত্তর পাওয়া হয়ে গেলো তবে পিহুর নিস্তব্ধতা সাদির খুব রাগ লাগে। সাদি কথস ঘুরাতে এবার একটু শক্ত কন্ঠে বলে…
-“তোর নাবিলের সাথে সম্পর্ক কিসের…?
নাবিলের কথা শোনা মাত্রই পিহু কেপে উঠে।ভুত দেখার মতো চমকায় মনে মনে।এখন কি উত্তর দিবে সে। পিহুকে চুপ থাকতে দেখে সাদি ভারি কন্ঠে আবারো বলে উঠে…
-“বল নাবিলের সাথে তোর সম্পর্ক কি..?
পিহু চুপ থাকে কোনো কিছু বলতে পারে না।কাল রাতে সাদি তার কিছু ছেলেপুলের কাছ থেকে নাবিল এর বায়ো ডাটা নিয়েছে শুধু মাত্র পিহুকে চিনে বলে।আর তারপর দেখে খেলা অন্য জায়গায় খেলা হচ্ছে।সাদির তখনই রাগ হয় তবে প্রকাশ করে না।রাতেই মনে হচ্ছিলো পিহুকে গলা চেপে দিতে আর নাবিল কে মেরে দিতে।তবে সেতো সম্ভব না।পিহুকে চুপ থাকতে দেখে সাদির মাথায় রক্ত উঠে যায়।দরজার পাশ থেকে রুমে ঢুকে আসে।
সাদি কে রুমে আসতে দেখে পিহু জড়োসড়ো হয়ে যায়।ভয় পাই সে সাদিকে আর আজ নাবিলের বিষয়ে জানতে চাচ্ছে।সাদির পিহুর ঠিক এক হাত দূরে এসে থেমে খুব কষ্টে ঠান্ডা গলাই বলে…
-“শেষ বার বলছি নাবিলের সাথে তোর কিসের সম্পর্ক…?
পিহু জানে এবার কোনো উত্তর না দিলে তাকে কয়েকটা জোরালো চড় এর স্বাদ নিতে হবে তবে পিহু তাতেও রাজি।তাও এই নাবিলের বিষয়ে বলবে না। কারন সে জানেনা নাবিল কিছু বলেছে কি আদেও সাদিকে।এখন যদি পিহু উলটা পালটা কিছু বলে ওদিকে নাবিল যদি অন্য কিছু বলে তবে দুজনেই ধরা খেয়ে যাবে।সেজন্য পিহু হাটুর ভিতরে মুখ গুজে আরো জড়সড়ো হয়ে যায়।সাদি পিহুর চুপ থাকা দেখে প্রচন্ড রেগে যায় তার দুটো জিনিস খুব অপছন্দ প্রথম কেও তার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে চুপ থাকলে আর দ্বিতীয়ত কেও তার জিনিস এ চোখ দিলে।
হটাৎ পিহু অনুভব করে বাতাসে ভাসছে সে।সাথে পুরুষালি একটা গন্ধ তার নাকে এসে বার বার ধাক্কা দিচ্ছে।পিহু চোখ পিট পিট করে খুলতেই চোখের সামনে সাদির মুখের একপাশ টের পায় প্রচন্ড গম্ভীর। তখন সাদি নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে পিহুকে জোর করে কোলে তুলে নিয়ে নিজের রুমের দিকে হাটা শুরু করে।এদিকে পিহু সাদির কোলে নড়ে উঠে ভয়ে তার কলিজা শুকিয়ে যায়।
সাদি খুব শান্ত ভাবে নিচে একবার তাকিয়ে পিহুকে নিয়ে নিজের রুমে ঢুকে বিছানার কাছে এসে বিছানায় এক প্রকার ছুড়ে মারে পিহুকে।তারপর সাদি গটগট হেটে গিয়ে দরজার ছিটকানি সব গুলো লাগিয়ে দেয় সাথে জানালা দরজা সব লাগিয়ে লাইট জালিয়ে দেই।সাদির এমন করা দেখে পিহু ভয় পেয়ে যায় এদিকে বিছানায় পড়ে নিজের কোমরে বেশ ব্যাথা পেয়েছে পিহু।চোখের কোনে পানি এসে জমা হয়।সাদির এবার পিহুর সামনে এসে পকেটে হাত গুজে দাঁড়ায় তারপর পিহুকে পরখ করে শান্ত কন্ঠে বলে..
-“এই মেয়ে তোর উড়না কই…?
সাদির কথায় পিহু নিজের দিকে তাকায় এতক্ষন তো গায়ে উড়না ছিলো এখন কই গেলো..পিহু তাড়াতাড়ি করে দুই হাত বুক জড়িয়ে ধরে সাদির কম্ফর্টার টা টেনে নিলো।সাদি শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তার ছোট সপ্তাদশীর দিকে। সাদির নাবিলের কথা মনে পড়তেই হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে গেলো মুখের ভাব গতি শক্ত হয়ে গেলো।সাদি এবার বেশ কঠিন কন্ঠেই বললো…
-“এবার বল নাবিলের সাথে তোর সম্পর্ক কি এবার না বললে তোরে মেরেই ফেলবো..!
পিহু কেপে উঠে তবে কি বলবে সে,, যে নাবিল তার বয়ফ্রেন্ড,,না এই কথা বললে সাদি তাকে মেরে ফ্বলবে।পিহু এবার ফুফিয়ে কেদে উঠলো এটাই একমাত্র উপাই।পিহুর এমন কান্না দেখে সাদি বেড সাইড এ রাখা কাচের পানির জগ টা ছুড়ে মারলো মেঝেতে সাথে সাথে বিকট শব্দে ভেঙে গেলো জগটা।পিহুর কান্না থেমে গেলো।সাদির রাগী দৃষ্টি দেখে পিহু আস্তে করে বলে উঠলো…
-“নাবিল ভাই হলো জেরিনের ভাই।
-“জেরিন কে…?
-“নাবিল ভাইয়ের বোন..!
-“জেরিন তোর কি হয়..?
-“বেস্ট ফ্রেন্ড..!
-“তো নাবিল তোর কি হয়…?
-“ভা..ভা..ভাইয়া…?
-“তুতলাচ্ছিস কেন..?
-“ক..কই..?
-“তো আজ কাল মানুষ ভাইয়ার সাথে ফেসবুকে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দেই বাহহ।
কথাটা বেশ ব্যাঙ্গ করেই বলে সাদি।তবে পিহুর আত্মা কেপে উঠে পরশু রাতে নাবিল ওর বন্ধুদের সাথে ডেয়ার নেওয়ার কারনে স্ট্যাটাস দিয়েছিলো সেটা ডিলেট করতে মনে নেই।পিহুর চুপ থাকা দেখে সাদির রাগ উঠে তবে কিছু বলে না মাথা গরম মেয়েটা এখন কথা না বললে নির্ঘাত মার খেয়ে অসুস্থ হয়ে যেতো।সাদি শান্ত দৃষ্টি রেখে আবার বললো…
-“তুই কোন ক্লাস এ পড়িস…?
-“ইন্টার ফাস্ট ইয়ার..!
-“তোর বয়স কত…?
-“সতেরো বছর…?
-“কয় মাস..?
-“নয় মাস…?
-“ওহ..?
-“তোরে কৈফিয়েত দিবো কেনো…?
সাদির কথায় পিহু কেপে উঠে চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়তে থাকে। সাদি পিহুর দিকে তাকিয়ে বলে..
-“চোখে পানি কেন আমি কিছু বলেছি…?
-“আপনি চাচিকে বলে দিবেন সব উনি খুব কষ্ট পাবে দয়া করে বলিয়েন না।
-“সেটা আমার বেপার তুই যা এখান থেকে রাগাস না।
পিহু সাদির হাত ধরে ফেলে পিহুর চোখের এক ফোটা অশ্রু এসে পড়ে সাদির হাতে।পিহু কেদে ফেলে সাদি বিরক্ত রাগ মিশ্রিত এক অনুভুতির শিকার এক নিষিদ্ধ চাহনা তার মনে উতলে পড়ছে।সাদি পিহুর হাত ঝাড়া মেরে ছাড়িয়ে সপাটে চড় বসালো পিহুর গালে।
পিহু টাল সামলাতে না পেরে বিছানায় পড়ে গেলো।সাদিও বুজলো না নাবিলের বেপার মাথায় আসলেই কেন তার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে শেষ করে দিতে ইচ্ছা হচ্ছে সব কিছু।সাদির চড় খেয়ে পিহু হতভম্ব, চোখের কার্নিস বেয়ে অশ্রু গড়াতে লাগলো।সাদি বেশ ভারী কন্ঠে বলে উঠলো…
-“আমার রুম থেকে বের হো.. আই ছে গেট আউট..!
সাদির কথা পিহুর কানে গেলো না। তবে পিহুর প্রচন্ড রাগ হলো সাথে প্রচন্ড অভিমান তবে অভিমান টা কার উপরে হলো হয়তো নিজের উপরে।সাদি পিহুর হাত ধরে জোরে টেনে উঠে দাড় করালো তবে পিহুর সাদা মুখশ্রী কাদ মতে কাদতে লাল বর্ন ধারন করেছে।সাদির সেদিকে তাকিয়ে মায়া হলো তাই ধীর কন্ঠে বললো…
-“মার না খেতে চাইলে বের হো আমার রুম থেকে..!
পিহুর ও আর মন চলছে না ভেঙে যাচ্ছে হৃদয়। খুব কষ্ট হচ্ছে সব কথা মনে পড়ছে অল্প করে যত কষ্টের কথা।পিহুর রাগ হয় সেটা নিজের উপর এমন পরিবারে জন্ম নেওয়ার জন্য প্রচন্ড রাগ।পিহু উলটো পাশ ঘুরতেই সাদির চোখ গেলো পিহুর ঘাড়ের পাশ দিয়ে কয়েক ফোটা রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। সাদি কিছু না ভেবেই পিহুর ঘাড়ে হাত দেই।
সাদির হাত দিতে দেরি তবে পিহুর ঘুরে সাদিকে চড় দিতে দেরি হয়না। পিহু রাগের বশে বেশ জোরেই চড় লাগাই সাদির লাগে।সাদি চোখ বড় করে তাকায় পিহু বেশ কঠিন কন্ঠেই বলে…
-“এখন কি আবার আমার শ/রীর লাগবে আপনার,,তিন বছর আগে এই মেয়েটাকে একবার নরক যন্ত্রনা দিয়ে ভালো লাগে নি আপনার,,পুরো বিয়ে বাড়ির মানুষের সামনে অপদস্ত হয়েছি আমি এখন আবার একা পেয়ে রাগ ঝাড়বেন আমার শ/রীরের উপর কি পেয়েছেন কি আপনি।আমার জীবন টাকে জাহান্নাম বানিয়ে দিয়েছেন আপনি।আমার সব কিছু কেড়ে নিচ্ছেন আওনি সব কিছু জা/নো/য়ার এর চেয়েও নৃ/কিষ্ট আপনি।
পিহু কথা শেষ করতে পারে না তার আগেই রক্ত লাল চোখ নিয়ে সাদি…..
চলবে….
-(কেও বাজে মন্তব্য করবেন না।গল্পটার গল্পের মতোই দেখবেন,,আর সামনে কি হবে গেজ করুন,,আমি জানি আপনারা অনেকে ঠিক গেজ করতে পারেন,,আশা করি ভালো লাগবে)-
Share On:
TAGS: নিষিদ্ধ চাহনা, সারা চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৮
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ২
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ২৪
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৯
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৯
-
চার বছরের চুক্তির মা গল্পের লিংক
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৭
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১২
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৪
-
নিষিদ্ধ চাহনা গল্পের লিংক