প্রতিতা*লয়ে আসা নতুন সতেরো বছর বয়সী মেয়েটা বর্তমানে মাফিয়া কিং জহির আদনানের সামনে দাঁড়িয়ে কান্না করছে। হাঁটু পর্যন্ত লম্বা চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে। চোখ দিয়ে অনবরত গড়িয়ে পড়ছে নোনাজল। অতিরিক্ত কান্নার ফলে চোখ কিছুটা ফুলে উঠেছে। গালগুলো লাল হয়ে গেছে। জহির আদনান পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সেই মেয়েটির দিকে। মেয়েটি কান্না করেই যাচ্ছে। থামার কোনো নাম নেই।
“তুমিই সেই ভাগ্য বতী মেয়ে যে কি না জহির আদনানের সাথে শুয়ার সুযোগ পাচ্ছো। যদি আমাকে খুশি করতে পারো, তাহলে অনেক টাকা পাবে।”
নিজের সামনে বসে থাকা সুদর্শন পুরুষের মুখে এমন কথা শুনে লজ্জায় আরো গুটিয়ে যায় সেই সতেরো বছর বয়সী মেয়েটা। কান চেপে ধরে মাথা নিচু করে চোখের জল বিসর্জন দিচ্ছে আদ্রিয়ানা। হ্যাঁ, সতেরো বছর বয়সী মেয়েটার নাম আদ্রিয়ানা। বাবা মা মারা গেছে বছর দুয়েক আগে। বাবা মা মা,রা যাওয়ার পর আদ্রিয়ানার ঠাঁই হয়ছিলো খালামনির বাসায়। খালা মনি আদ্রিয়ানা কে দুই বছর দেখে রেখেছিলো শুধু সম্পত্তির লোভে। সম্পত্তি লিখে নেওয়ার সাথে সাথেই আদ্রিয়ানা কে প্রতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়ে যায়। আজ বাবা মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে আদ্রিয়ানা। বাবা মা থাকলে তাঁকে আজ প্রতিতালয়ে এসে একটা ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে কান্না করতে হতো না। আদনানের কথায় আদ্রিয়ানা বাস্তবে ফিরে।
“এই মেয়ে! আমার কথা কি তোমার কানে যাচ্ছে না?”
আদ্রিয়ানা কান্না করেই যাচ্ছে, কোনো কথা বলছে না।
“এই মেয়ে, তোর এইসব নেকা কান্না বন্ধ করে শরীর থেকে উড়না টা সরা।”
আদ্রিয়ানা কেঁপে উঠে আদনানের কথায়। উড়নাটা শরীরে আরো ভালো করে পেঁচিয়ে নিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে, “আ…আমাকে য…যেতে দিন প্লিজ। আ…আমি এম…মন মেয়ে না।”
“তুই যদি এমন মেয়ে না হোস, তাহলে প্রতিতালয়ে কী করছিস? কেনো এসেছিস এখানে?”
“আ…আমি আসিনি, আমাকে নিয়ে আসা হয়েছে।”
“কে নিয়ে এসেছে তোকে?”
“আমার খালু আমাকে এখানে বিক্রি করে দিয়ে গেছে।”
“তোর বাবা-মা নেই?”
আদ্রিয়ানা না-বোধক মাথা নাড়ায়।
আদনান এইবার শান্ত কন্ঠে বলে
“তোমার নাম কী?”
“আদ্রিয়ানা।”
“বয়স কতো?”
“সতেরো।”
আদনান আদ্রিয়ানার দিকে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বলে, “পানিটুকু খেয়ে নাও।”
আদ্রিয়ানা আদনানের দিকে চোখ তুলে তাকায়। আদনান একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে, “ভয় পেও না, পানিটুকু খেয়ে নাও।”
আদনানের কথায় আদ্রিয়ানা একটু ভরসা পায়। আদনানের হাত থেকে পানিটুকু নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নেয়। আদনান আদ্রিয়ানার হাত ধরে আদ্রিয়ানাকে বেডের উপর বসায়।
“রিলেক্স, আদ্রিয়ানা। ভয় পেও না।”
এই কথা বলে পকেট থেকে ফোনটা বের করে আদনান। কল দেয় প্রতিতালয়ের মেন সর্দারকে। রিং পড়ার সাথে সাথেই রিসিভ হয়ে যায়।
“আপনার সাথে কথা আছে, এক্ষুনি আমার সাথে দেখা করুন।”
এই কথা বলে আদনান ফোন কেটে দেয়। আদ্রিয়ানার দিকে তাকিয়ে দেখে আদ্রিয়ানা এখনো কান্না করছে। আদনান যত্নসহকারে আদ্রিয়ানার চোখের পানি মুছে দেয়।
“কান্না করতে বারণ করলাম না। তার পরও কান্না করছো কেনো?”
আদ্রিয়ানা কান্না করেই যাচ্ছে।
দরজা ধাক্কার শব্দ পেয়ে আদনান দরজার দিকে এগিয়ে যায়। দরজা খুলে দেখে প্রতিতালয়ের সর্দার এসেছে।
“স্যার, কোনো সমস্যা হয়েছে? মেয়েটা কি কোনো সমস্যা করছে?”
“মেয়েটাকে কত টাকা দিয়ে কিনেছেন?”
“পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে।”
“আমি ওকে নিয়ে যেতে চাই। কত টাকা দিতে হবে?”
“পঞ্চাশ লাখ টাকা।”
আদনান পকেট থেকে একটা চেক বের করে প্রতিতালয়ের সর্দারকে দিয়ে দেয়। সর্দার হাঁসি মুখে আদ্রিয়ানা কে নিয়ে যেতে বলে। আদনান আদ্রিয়ানাকে কোলে তুলে নিয়ে প্রতিতালয় থেকে বের হয়ে আসে। আদ্রিয়ানাকে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে নিজেও গাড়িতে উঠে বসে। গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট দেয় আদনান।
আদনান গাড়ি ড্রাইভ করছে আর একটু পরপর আদ্রিয়ানার দিকে তাকাচ্ছে। যা আদ্রিয়ানার চোখ এড়ায় না।
“আআআমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”
আদনান কিছু বলে না। আদ্রিয়ানা আবারও বলে
“আআমাকে কোর্থায় নিয়ে যাচ্ছেন?”
আদ্রিয়ানা কথা টা বলে শেষ করতে না করতেই আদনান গাড়ি ব্রেক করে। গাড়ি থেকে নেমে আদ্রিয়ানাকেও গাড়ি থেকে নামায়। আদ্রিয়ানা গাড়ি থেকে নেমে বেশ অবাক হয়। কারণ বর্তমানে সেই একটা বড় শপিং মলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিয়ানার হাত ধরে আদ্রিয়ানাকে শপিং মলে নিয়ে যায়।
“যা ইচ্ছে নিয়ে নাও। আমি এখানেই আছি।”
“মামানে বুঝলাম না।
বলছি যা ইচ্ছে হয় তাই নাও।
আমি কেনো নিবো? আমি নিতে পারবো না।”
“তাহলে আমিই নিচ্ছি।”
এই কথা বলে আদনান শপিং মলে থাকা একটা মেয়েকে বলে, “আপনাদের এখানে Engagement + বিয়েতে পড়ার জন্য বেস্ট শাড়ি, লেহেঙ্গা ইত্যাদি ইত্যাদি যা আছে সবগুলো প্যাক করে দিন। সাথে মেকআপ থেকে শুরু করে সব কিছু দিন।”
“ওকে স্যার।”
আধা ঘন্টার মধ্যে দশটা মেয়ে সবকিছু নিয়ে হাজির হয়। ওদেরকে দেখে আদনান বলে, “বাইরে গাড়ি আছে, সব গাড়িতে তুলে দিয়ে এসো।”
“ওকে স্যার।”
মিনিট দশেকের মধ্যে সব শপিং গাড়িতে তুলে দিয়ে আসে।
“কত টাকা হয়েছে, হিসাব করো।”
“স্যার, হিসাব করা হয়েছে। পাঁচ লাখ নিরানব্বই হাজার টাকা হয়েছে।”
আদনান নিজের ওয়ালেট থেকে কার্ড বের করে দেয়। পেমেন্ট করে আদ্রিয়ানাকে নিয়ে শপিং মল থেকে বের হয়ে আসে। গাড়ির দরজা খুলে আদ্রিয়ানাকে উঠতে বলে। আদ্রিয়ানা গাড়িতে উঠে বসে। আদনান গাড়ির দরজা লক করে নিজেও উঠে বসে। গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট দেয় আদনান।
গাড়ি চলছে অনেকক্ষণ ধরে। আদ্রিয়ানা ভয়ে কাঁপছে। ওর মাথায় এখনো অনেক প্রশ্ন ঘুরছে। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ওকে এই লোক? কী চায় উনি?
হঠাৎ গাড়ি থেমে যায়। আদ্রিয়ানা চোখ খুলে তাকায়। বাইরে দেখে, ঘন জঙ্গলের ভেতরে একটা দুই তালা বাড়ি। বাড়িটার চারপাশে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। বাড়ির সামনে দিয়ে একটা সুন্দর রাস্তা চলে গেছে, যেটা গভীর জঙ্গলের ভেতরে হারিয়ে গেছে। বাড়ির ভেতরে আলো জ্বলছে, কিন্তু বাইরে অন্ধকার।
আদনান গাড়ি থেকে নেমে আদ্রিয়ানার দরজা খুলে দেয়। “এসো।”
আদ্রিয়ানা ভয়ে ভয়ে নামে। আদনান ওর হাত ধরে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়। ভেতরে ঢুকতেই আদ্রিয়ানা দেখে, একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ। আলো কম, চারপাশে অজানা ভয়।
আদনান বাড়ির লাইট অন করে। চারদিকে আলোকিত হয়ে যায়। বাহির থেকে দেখতে ভুতের বাড়ির মতো লাগলে ও ভিতর টা রাজ প্রাসাদের মতো।
আদনান আদ্রিয়ানার দিকে তাকিয়ে হাসে। “তুমি এখানেই থাকবে। এখন থেকে।”
আদ্রিয়ানা ভয়ে কাঁপতে থাকে। “আআমাকে এ… এখানে কেনো নিয়ে এসেছেন? ক…কী চান আপনি?”
আদনান একটা ঠাণ্ডা হাসি দেয়। “তুমি জানতে চাও না। তোমার জন্য এটা স্বর্গ। এখানে তুমি আমার। শুধু আমার।”
আদ্রিয়ানা পেছনে যেতে চায়, কিন্তু আদনান ওর হাত ধরে ফেলে। “ক…কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করো না। এখান থেকে বের হওয়া অসম্ভব।”
আদ্রিয়ানা চিৎকার করতে চায়, কিন্তু গলা দিয়ে আওয়াজ বের হয় না। আদনান ওকে টেনে নিয়ে যায় একটা রুমে। নিয়ে যায়।
ফ্রেশ হয়ে নাও আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি।
আদ্রিয়ানা হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়িয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়। হঠাৎ করে চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। আদ্রিয়ানা অন্ধকার রুমে বসে কাঁপছে। হঠাৎ দরজা খুলে আদনান ঢুকলো। আদ্রিয়ানা ভয়ে পেছনে যায়।
চা…চারদিক এমন অন্ধকার হয়ে গেলো কেনো ?” আদ্রিয়ানা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করে।
জঙ্গলের গভীরে তো তাই মাঝে মাঝে একটু আকটু লোড সিডিং হয়।
আদ্রিয়ানা আবার ও আদনান কে জিজ্ঞেসা করে।
আআমাকে এখানে নিয়ে আসার কারণ কি ?
আদনান একটা খারাপ হাসি দেয়। “হুমম… তোমাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছি তা জানতে চাও বুঝি?”
আদ্রিয়ানা হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ায়। “
আদনান কাছে এসে বলে, “তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছি… তোমাকে পাছার করে দেবো বলে!
আদ্রিয়ানা ভয়ে চোখ বড় করে তাকায়। “ক…কী?! ন…না! প্লিজ…”
আদনান হাসতে হাসতে বলে, “না বললে তো হবে না। তোমাকে পাছার করে দিবো। তুমি অনেক সুন্দর, তোমার দামও অনেক।”
আদ্রিয়ানা ভয়ে কাঁদতে শুরু করে। “এ…এইসব কী বলছেন? প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন…”
আদনান হাসতে হাসতে বলে, “আহা, ভয় পেও না। তোমার মতো সুন্দরী মেয়েকে পাছার না করে ছাড়বো না।
দ্যাআনপ্রেডিক্টেবললাভ
পর্ব : ০১
লেখক : #Jahirul_islam_Mahir
( রেসপন্স অনুযায়ী গল্প বড় হবে। আজকের পর্বে ভালো রিকেট আসলে পরের পর্ব তাড়াতাড়ি পাবেন। নয়তো একদিন, দুইদিন পর পর গল্প পাবেন। )
( ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ )
Share On:
TAGS: জাহিরুল ইসলাম মাহির, দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ৪
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ২
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ গল্পের লিংক
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ৬
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ৩
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ৫