Dark_Desire (১৮+🔞 এলার্ট)
পর্ব —২
ডার্ক_ডিজায়ার
দূর্বা_এহসান
তরুর গলা এক হাতে চেপে ধরেছে মৃন্ময়। অন্যহাতে দুই হাত ধরেছে।
“কেন অবাধ্য হলি?”
তরুর ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে বললো মৃন্ময়।এই ছোঁয়ায় কোনো সুখ নেই,আছে কেবল হিংস্রতা।তরুর দম বন্ধ হয়ে আসছে।নিজেকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে,কিন্তু এই বলিষ্ঠ হাত থেকে কিছুতেই পারছে না।
মৃন্ময় তরুর নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরলো। এতটাই জোরে যে তরু ব্যথায় কঁকিয়ে উঠলো। মৃন্ময় ওই অবস্থাতেই বললো,”কেন অবাধ্য হলি,পাখি?”
তরু জবাব দিতে পারল না।জবাব দিবেই বা কিভাবে? জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে সে।
মৃন্ময় যেনো আরো হিংস্র হয়ে উঠলো। তরুর ঠোঁট চেপে ধরলো। হিংস্র বাঘের মতো হয়ে গেলো সে। এক মিনিট… দুই মিনিট…. নাহ্ প্রায় আধা ঘন্টা একটানা চলল তাঁর অত্যাচার তরুর ঠোঁটের উপর।এক সময় নিস্তেজ হয়ে গেলো তরু।হাতের বাধন হালকা হলো।গলা থেকে হাত সরিয়ে নিল মৃন্ময়। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে জোরে জোরে নিশ্বাস নিলো সে। আগলে নিলো তরুকে বুকে।মেয়েটা জ্ঞান হারিয়েছে। সিট থেকে তুলে নিজের কোলে বসালো।এক হাতে মাথা চেপে ধরে থাকলো বুকে।
“আ’ম সরি,জান”
মাথায় একটা চুমু দিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করলো প্রত্যয়।
রুমের জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে হালকা আলো ঢুকতে শুরু করেছে।রাতের ঘন অন্ধকার নরম ধূসর আলোতে গলে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।জানালার বাইরে পাখিদের প্রথম ডাক ভোরের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে।দূরের আকাশে গোলাপি আর কমলা রঙের মিশেলে নতুন দিনের আভা ছড়িয়ে পড়েছে।
পিটপিট কিরে চোখ খুলে তাকালো তরু।নিজেকে আবিস্কার করলো সেই রুমে। যেখান থেকে সে পালিয়েছিল। ধীরে উঠে বসলো। সারা শরীরে অদ্ভুত রকমের ব্যথা। যেনো ভারী কিছুর নিচে সে চাপা পড়ে ছিল। রাতের সেই করুন কাহিনী মনে পড়তেই আঁতকে উঠলো সে।কিভাবে টেনে হিঁচড়ে মৃন্ময় তাকে গাড়িতে তুলেছিল।তারপর,, নাহ্ ভাবতে পারছে না সে। গা গুলিয়ে আসছে।মুখ চেপে বাথরুমের দিকে ছুটে গেলো।সাথে সাথে যেনো কিসের ঝনঝন শব্দ হচ্ছে।কিন্তু খেয়াল করলো না সে। গলগলিয়ে বমি করে দিলো। মুখে পানি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ট্যাব ছাড়তেই দেখতে পেলো বাম হাতে চিকন মতো শিকল।কেঁপে উঠল সে।ধীরে ধীরে শিকল টাকে অনুসরণ করে এগিয়ে এলো। খাটের সাথে বাঁধা।বিশাল শিকল। সে বন্দী?এভাবে বন্দী? কোনো মানুষ কিভাবে এতটা জঘন্য হতে পারে। তাকে এভাবে আটকে রেখেছে।
মাথা ঘুরালো তরুর।শরীর খারাপ লাগছে।বিছানায় বসলো।শরীরের দিকে নজর যেতেই দেখতে পেলো শার্ট আর জিন্স পরা। সে তো চেঞ্জ করেনি? তাহলে কি!আর কিছু ভাবতে পারল না তরু।ডুকরে কেঁদে উঠলো।
হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো মৃন্ময়।তরুকে মেঝেতে বসে এভাবে কাদতে দেখে তার কাছে এলো। উদগ্রীব গলায় বলল,”কি হয়েছে পাখি? কোথায় কষ্ট হচ্ছে? বলো আমাকে”
“আ,,,আপনি একটা জানোয়ার। সব শেষ করে দিয়েছেন আমার”
কিছুক্ষন লাগলো বুঝতে মৃন্ময়ের। তরু ততক্ষণে দুই হাতে তার শার্টের কলার ধরে ফেলেছে।ঝাকিয়ে বার বার বলছে “আপনি একটা জানোয়ার “
মুচকি হাসলো মৃন্ময়।তরুর কোমর চেপে কাছে টেনে নিয়ে গলায় চুমু দিয়ে বলল,”তুমি বাধ্য করেছো, জানোয়ার হতে”
তরু ভেজা চোখে তাকিয়ে রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলল,
“ছাড় আমাকে। ছাড় বলছি।আপনি একজন কাপুরুষ”
মুহূর্তের মধ্যে মৃন্ময়ের চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো। চোখ দুটো রক্তিম আগুনের মতো জ্বলতে লাগলো।
“কি বললে?”
তরু দাঁতে দাঁত চেপে আবার বলল,
“হ্যাঁ, কাপুরুষ। পুরুষ বলার যোগ্যও না আপনি।”
শব্দগুলো যেনো ছুরি হয়ে বিঁধলো মৃন্ময়ের। এক নিমিষে সে ঝাঁপিয়ে পড়লো তরুর উপর।দুই হাত দিয়ে তার কাঁধ চেপে ধরে বিছানায় ঠেসে ফেলল।
মৃন্ময়ের কণ্ঠ গর্জে উঠলো।
“আমি কাপুরুষ? আমি তোমাকে দেখাবো কাপুরুষ কারা হয়!”
তরু প্রাণপণে হাত-পা ছুঁড়ে ফেলছে। গলায় কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছে। চিৎকার করতে গিয়েও শব্দ বেরোচ্ছে না। চোখ ভিজে উঠেছে, কিন্তু চোখে জল নয়,আগুন।
“ছাড়ুন আমাকে!” গলা ফেটে বেরোল আওয়াজ।
এক ঝটকায় পাশের টেবিলে রাখা কাঁচের শোপিসটা হাতে তুলে নিলো তরু। মৃন্ময়ের মুখের দিকে আঘাত করলো। কাঁচ ভেঙে টুকরো টুকরো ছড়িয়ে পড়ল। মৃন্ময়ের গালের পাশে রক্ত ঝরে পড়ছে।তরুর চোখ পড়তেই বুকটা কেঁপে উঠলো। মাথা ঘুরে উঠল।শরীর ঠান্ডা হয়ে এলো। রক্তের গন্ধ, সবকিছু একসাথে যেনো তার ভেতরটা উল্টে দিলো।সে কাঁচটা হাত থেকে ফেলে দিলো। মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেল। এক মুহূর্তের জন্য চারপাশ অন্ধকার হয়ে এলো।
“না… না…!” ফিসফিস করে উঠলো তরু।
তারপরই চোখ উল্টে গিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়লো মেঝেতে।মৃন্ময় ব্যথায় কুঁকড়ে গিয়েছিলো, কিন্তু তরুকে এভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে দেখে হোঁচট খেয়ে তার পাশে বসে পড়লো।
“পাখি… পাখি…!” হাত কাঁপতে কাঁপতে তরুর গাল ছুঁয়ে দেখলো। নিঃশ্বাস আছে, কিন্তু খুবই হালকা।
“পাখি… আমি তোকে কষ্ট দিতে চাইনি… আমি তোকে ছাড়া বাঁচতে পারি না,” সে ফিসফিস করে বললো।
ধীরে ধীরে তরুকে কোলে তুলে খাটে শুইয়ে দিল। মাথার নিচে বালিশ গুঁজে দিলো।তারপর তাড়াহুড়ো করে টেবিল থেকে পানির বোতল নিয়ে এসে তরুর মুখে ছিটাতে শুরু করলো।
মৃন্ময় বারবার তরুর মুখে পানি ছিটাচ্ছে। কিন্তু তরুর চোখ খুলছে না। নিঃশ্বাস দুর্বল, ঠোঁট সাদা।সে হঠাৎ নিজের হাতে তাকালো। আঙুল বেয়ে রক্ত ঝরছে, মেঝেতে দাগ ছড়িয়ে গেছে। তখনই মনে পড়লো,তরুর রক্তের ভয় আছে।তাড়াহুড়ো করে পাশের তোয়ালে নিয়ে নিজের হাত পেঁচিয়ে বাঁধলো। মেঝেতে ছড়ানো রক্ত মুছে দিতে লাগলো ঘাবড়ে ঘাবড়ে। যেন তরু জেগে উঠে আবার কিছু না দেখে ফেলে।তারপর ছোট্ট বালতি ভর্তি পানি এনে পুরো মেঝেটাই ধুয়ে দিলো। নিজের ব্যথা ভুলে শুধু রক্তের চিহ্ন মুছে ফেলার জন্য পাগলের মতো ছুটলো।সবকিছু পরিষ্কার করে এসে আবার তরুর পাশে বসল। আলতো করে কপালে হাত বুলালো। ফিসফিস করলো,
“পাখি, আর কিছু দেখবি না।আমি আছি। আমি তোকে কষ্ট দেবো না আর।”
একসময় তার চোখে অদ্ভুত কোমলতা নেমে এলো। মাথা নিচু করে তরুর কপালে চুমু দিলো।
“আমি হয়তো ভুল করেছি, কিন্তু আমি শুধু তোকে চাই। তোকে ছাড়া আমি কিছুই না, পাখি।”
মৃন্ময় তখন সযত্নে তার পাশে বসে থাকলো। একটা হাত তরুর মাথায়, আরেকটা হাত তার হাতে। যেনো এই পৃথিবীতে আর কিছুই দরকার নেই।শুধু তরু জেগে উঠুক, শ্বাস নিক, কথা বলুক।
রাতের অন্ধকারে হঠাৎই চিরে দিয়েছিল এক বিকট শব্দ।
আকাশ ছুঁয়ে আগুনের ফুলকি ছিটকে উঠেছিল চারদিকে।
একটা মুহূর্তে আগুন গ্রাস করে নিয়েছিল পুরোনো বাড়িটা।
ফায়ার সার্ভিস খবর পেয়ে ছুটে আসে, কিন্তু তখন অনেক দেরি।
বাড়িটার কাঠের দরজা, জানালা, আসবাব—সবই আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই।ভোরবেলায় যখন আগুন নেভে, চারপাশ নিস্তব্ধ।শুধু ভিজে কালো ধোঁয়া আর দমবন্ধ করা পোড়া গন্ধ।মানুষ জড়ো হয়েছে, কিন্তু কেউ এগোতে পারছে না।দমকল কর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করলো দুটি পোড়া দেহ।
চেনার কোনো উপায় নেই।মুখাবয়ব গলে গেছে, শরীরের গঠনও অস্পষ্ট।শুধু পোশাকের ছাইচাপা টুকরো, আর পুড়ে যাওয়া কিছু অলংকার দেখে ধারণা—এরা ওই বাড়ির মা আর মেয়ে।পুলিশ কর্ডন করে রেখেছে এলাকা।
এক অফিসার গম্ভীর গলায় বললেন,
“সব জলে মিশে গেছে, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ডিএনএ টেস্ট ছাড়া নিশ্চিত হওয়া যাবে না, এ কারা।”
ক্যামেরার ফ্ল্যাশে ধরা পড়ছে ভয়ংকর দৃশ্য।ছাইচাপা দেয়াল, ভাঙা সিঁড়ি, ধোঁয়া ওঠা কূপের মতো গর্ত, আর ভিজে মাটি।
মিডিয়ার খবর শিরোনামে একটাই লাইন,
“ভয়াবহ বিস্ফোরণে মা-মেয়ের মৃত্যু, সব পুড়ে ছাই।”
প্রতিবেশীরা কাঁপা গলায় বলছে,
“আগুন এমনভাবে ছড়িয়েছে… কাউকে বাঁচতে দিল না। কাল রাতেই যেন সব শেষ।”
চলবে ,,,
Share On:
TAGS: ডার্ক ডিজায়ার, দূর্বা এহসান
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৬
-
ডার্ক ডিজায়ার গল্পের লিংক
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১৭
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১৬
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৯
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৩(প্রথমাংশ + শেষাংশ)
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১০
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৭
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৪