সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman #familytime #love
পর্ব ১৫৩
সাদাফ সাথে সাথে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বললো,”দরজা খোল সো*না পাখি ।লক্ষী আমার কথাটা শোন ।প্লিজ দরজা খোল নূর ?দরজা খোল।”
নিচে থেকেই তাকিয়ে আছে রিহা ।রিহা অবাক হয়ে যাচ্ছে সাদাফ কেন একটি মেয়ের জন্য এতটা পা*গল হয়ে যাচ্ছে।
রিহা আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো। পুরো বাড়ি বিয়ের আমেজে সাজানো ।যেন কারো বিয়ে হচ্ছে ।রিহা এখনো জানে না যে সাদাফের বিয়ে হচ্ছে যদিও সাদাফের সাথে রিহার কোন সম্পর্ক নেই ।একটি বছর রিহার সাথে কখনো দেখা হয়নি সাদাফের ।সেদিনের ঘটনার পর থেকে কখনোই দেখা হয়নি কিন্তু রিহা যেন আর তর সইছিল না ।ভেবেছে রিহা এখানে এসে পরিবারের সাথে মিশলে হয়তো রিহাকে মেনে নেবে সাদাফ।
যেহেতু ভালবাসি বলে কোন সম্পর্ক করতে পারেনি তাই পারিবারিকভাবেই বিয়ের জন্য এগোতে চেয়েছিল রিহা কিন্তু এখানে এসে মনে হচ্ছে ভুল করে ফেলেছে ।অনেক দেরি হয়ে গেছে হয়তো এটি সেই মেয়ে যার জন্য সাদাফ ওকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।
রিহা তাকিয়ে রইল উপরে ।সাদাফ দরজা নক করছে ।বলছে ,”নুর প্লিজ দরজাটা খোল ।কথা শোন আমার ।লক্ষ্মী পাখি আমার ।দরজা খোল ।”
নুর বললো,” খবরদার আমার নাম আপনার মুখে নিবেন না ।যান ওই রিহাকে নিয়ে রুমে যান ।রুমে গিয়ে জড়িয়ে ধরে ঢলাঢলি করুন।”
সাদাফ জোরে জোরে চেঁচিয়ে বলতে লাগলো ,”আমার কোন রিহা টিহার দরকার নেই ।আমার শুধু নুরকে চাই ।ইহকাল পরকাল সব জায়গায় আমার শুধু নুর কেই প্রয়োজন ।নুর ছাড়া আমার চলবে না।”
নুর বললো,” ইহকালে যা আপনার রঙ্গলীলা দেখছি পরকালে আর কি কি দেখবো।পরকালে তো ৭০ টা হুরপরী আপনি লাইসেন্স করে পেয়ে যাচ্ছেন ।লীলা তো সেখানেও কম দেখতে হবে না।”
সাদাফ বললো,” সোনা আমার এই যে আজকে থেকে আমি তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে চাইবো আমার ৭০ টা হুরপরী দরকার নেই ।আমার একটা নূর পরী হলেই চলবে ।আমার আর কিছু দরকার নেই ।ইহকাল পরকাল সবকালে আমার শুধু তোকে চাই সো*না আমার দরজা খোল প্লিজ।”
“আপনার সাথে সম্পর্ক না থাকলে এই মেয়ে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসলো কি করে ?আপনার বাড়ির ঠিকানা পেল কি করে ?আর এই মেয়ের দুঃসাহস হয় কি করে আপনাকে জড়িয়ে ধরার সবার সামনে ?যে মেয়ে সবার সামনে আপনাকে জড়িয়ে ধরতে পারে ৬ বছর আমেরিকা আপনার পিছনে পড়ে ছিল সেখানে কি করেছে সেটা তো আমি কিছুই জানিনা।
যান আমার দরজার সামনে থেকে ।আপনার কথাই এই মুহূর্তে আমার শুনতে ইচ্ছা করছে না ।আপনি আপনার রেহার কাছে যান ।যার সাথে একটু আগে জড়িয়ে ধরে ছলা কলা করছিলেন।”
সাদাফের এবার নিজেরও বিরক্ত লাগল রিহার উপর ।এই মেয়ের সাহস কি করে হয় বাড়ি শুদ্ধ লোকের সামনে ওকে দৌড়ে এসে এভাবে জড়িয়ে ধরার ?আমেরিকায় যেদিন একা বাড়িতে ঢুকে ছিল সেদিন ওতো জড়িয়ে ধরেনি আজ কি হল কেন এরকম করলো অবশ্যই জবাব চাইবে সাদাফ।
কিন্তু তার আগে ওর নুর পাখিকে ঠান্ডা করতে হবে ।তাই বললো,” নূর কসম করে বলছি আমি জানিনা সো*না আমার প্লিজ দরজা খোল।”
নূর দরজা খুলছে না ।সাদাফ অধৈর্য হচ্ছে ।বুক ফেটে যাচ্ছে ।সাদাফের পিছন ফিরে তাকালো । দেখলো রিহা এদিকেই তাকিয়ে আছে ।সাদাফের জিদ লাগছে খুব জিদ লাগছে ।মনে হচ্ছে নিচে গিয়ে মেয়েটাকে চাপকে দাঁতগুলো ফেলে দিবে ।কিন্তু এই মুহূর্তে নূরের দরজার কাছ থেকে সরা যাবে না ।না জানি পাগলি কি করে বসবে ?সাদাফ বললো,” তুই কি দরজা খুলবি নাকি আমি দরজা ভেঙে ফেলবো ?তুই চাচ্ছিস সবাই দেখুক?”
নুর জানে এই মুহূর্তে এসব করা ঠিক হচ্ছে না ।বাড়ি ভর্তি আত্মীয়-স্বজন মেহমান সবাই আছে মুরুব্বিরা আছে ।নুর তাই চুপচাপ উঠে এসে দরজা খুলে দিল কিন্তু তাকালো না সাদাফের দিকে।
নুর রাগে গচগজ করতে করতে খাটে গিয়ে বসল ।সাদাফ সেই আগের মতই নূরের পায়ের কাছে বসে জোর করে নূরে পা দুটো ধরে বললো,” সত্যি করে বলছি এই যে তোকে ছুয়ে বলছি ওর সাথে আমার কখনো এরকম ধরনের কোন সম্পর্ক ছিল না ।ও যেদিন আমাকে সরাসরি ভালোবাসি বলেছে সেদিন আমি ওকে প্রত্যাখ্যান করেছি ।বলেছি আমার অন্য একজন আছে যাকে আমি ভালোবাসি। আমি সরাসরি বলেছি আমি আমার নুরকে ভালোবাসি ।যে আমার জন্য বাংলাদেশে আছে আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে ।সত্যি করে বলছি ওর সাথে আমার এমন কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু কেন এখানে চলে এসে এই কাহিনী করল তুই নিচে চল একসাথে গিয়ে জিজ্ঞেস করবো।”
নুর মানছে না ।চোখের পানি টই টুম্বুর হয়ে আছে ।শুধু বললো,” এ জায়গায় যদি আমার জায়গায় আপনি হতেন আর আপনার জায়গায় আমি হতাম ?কেউ এসে এভাবে সবার সামনে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতো তাহলে কি করতেন?”
সাদাফ এক মুহূর্ত সময় ব্যয় করল না ।বললো ,”খুন করে ফেলতাম যে এসে তোকে এভাবে জড়িয়ে ধরতো আমার সামনে ।তাকে আমি খুন করে ফেলতাম ।তুই করলি না কেন ?তুই কেন আমাকে অবজ্ঞা করে উপরে চলে এলি ?তুই ওকে মা*রলি না কেন?
আমার নুরকে স্পর্শ করা তো দূরের কথা ও ছায়া ও যদি কেউ স্পর্শ করতো আমি ওইখানে ওকে খুন করে ফেলতাম ।তুই কেন অধিকার খাটালি না ?তুই কেন ওর সাথে আমাকে এভাবে ছেড়ে চলে আসলি?”
নুর তাকালো সাদাফের দিকে ।সাদাফে চোখ মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে সাদাফ মিথ্যা বলছে না ।কারণ একটা মিথ্যাবাদীর চোখ মুখ এরকম হতে পারেনা ।নুর নিজের মুখ দুহাত দিয়ে ঢেকে ঝরঝরিয়ে কান্না করে দিল।
কান্না করতে করতে বললো,”দৃশ্যটা আমি সহ্য করতে পারছিলাম না ।এখনো পারছিনা ।বারবার শুধু মনে হচ্ছে আমার অসহায়ত্ব আমার অপূর্ণতা এই জন্যই বুঝি এই দৃশ্যটা আমাকে দেখতে হয়েছে।
অধিকার খাটাতে পারিনি কেন যেন মনে হয়েছে আমি তো পরিপূর্ণ না ।আমি তো আপনাকে সেই পরিপূর্ণ সুখ কখনো দিতে পারবো না ।কোন একটা জায়গায় গিয়ে যেন আমি আটকে গিয়েছি ।আমি তো এ বন্ধন থেকে বের হতে পারছি না।”
“আমি তোকে ভালবাসি নূর ।তোকে আমি কোনদিন অপূর্ণ মনে করি না ।যার জন্য আমি পা*গল হয়ে থাকি দিনরাত আমি মুখিয়ে থাকি এক নজর দেখার জন্য সেই মেয়ে তো কখনো অপরিপূর্ণ হতে পারে না ।তাও আবার সে রিহার কাছে যে কিনা সাত সমুদ্র তেরো নদী পার করে এসেও আমাকে পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারবে না কোনদিনও সেই মেয়ের কাছে তুই কিভাবে হেরে গেলি নূর? রিহা যাকে পাওয়ার জন্য এত কিছু করে এখানে চলে এসেছে তাকে তুই না চাইতে পেয়ে গেছিস। তুই জানিস না তুই কবে থেকে পেয়ে গেছিস ?যেদিন তুই পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়েছিস সেদিন থেকে তোর হাতের রেখায় আমার নাম লেখা হয়ে গেছে ।তুই কিভাবে হেরে গেলি ওই মেয়ের কাছে?
যাকে পাওয়ার জন্য ওই মেয়ে নির্লজ্জের মত আমার সাথে এখানে চলে আসলো সেই তোকে পা*গলের মতো ভালোবাসে অথচ তুই তাকে পাওয়ার জন্য এক ফোঁটা সাহস নিচে দেখালি না।
তুইতো অযোগ্য না অযোগ্যতা আমি হয়ে গেছি ।দেখ না তোকে আমি পা*গলের মতো ভালোবাসি কিন্তু আমার ভালোবাসা তোর কাছে প্রমাণই করতে পারছি না ।কি করলে প্রমাণ হবে নুর ?বলতো আমি তোকে পাগলের মতো ভালোবাসি কি করবো প্রমাণ করার জন্য আমি বল?”
সাদাফ নুরের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো ।নূরের সমস্যাটাও সাদাফ বুঝতে পারল ।জোর করে নূরের হাত দুটো মুখ থেকে সরিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বললো,” সো*না আমার পাখি আমি তোকে অনেক ভালোবাসি নুর ।তুই কখনো নিজেকে অপরিপূর্ণ মনে করিস না ।তোকে পেয়ে যে আমি পরিপূর্ণ এটা কি করে তোকে বোঝাবো নুর ?তোকে আমি ভীষণ ভালোবাসি ।নিচে চল তোর সামনে সবকিছু পরিষ্কার করে দিব ।তুই ওই মেয়েকে জিজ্ঞেস করবি এটা তোর অধিকার কেন তোর সামনে তোর স্বামীকে এভাবে জড়িয়ে ধরল ?তুই নিজে গিয়ে জিজ্ঞেস করবি।
আজকে আমি না নুর। আজকে আমার উপরে তুই অধিকার খাটাবি ।চল ।”
বলেই সাদাফ দাঁড়িয়ে নূরকে উঠালো ।নুর তাকিয়ে রইল সাদাফের দিকে ।”নুর কাঁদিস না পাখি আমার চল ।তুই গিয়ে জিজ্ঞেস করবি কেন এরকম কাজ করল ?আমি তো ওকে প্রত্যাখ্যান করে এসেছিলাম ।তাহলে ও কেন আসলো?”বললো সাদাফ।
সাদা নুর কে বুঝিয়ে শুনিয়ে নিচে নিয়ে আসলো ।রিহা তাকিয়ে রইল নূরের দিকে ।নূরকে রিহা চিনে না কিন্তু বুঝতে পারছে হয়তো এটাই সেই মেয়ে যার জন্য সাদাফ ওকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।
নিচে সবাই তাকিয়ে আছে নূর ও রিহার দিকে ।নূর কি বলবে না বলবে সবাই জানতে ইচ্ছুক।
নুর শুধু একটি কথাই বলল ,”যার জন্য আপনি সাত সমুদ্র তেরো নদী পার করে এসেছেন এক দেশ থেকে আরেক দেশে এসেছেন সেই লোকের উপরে শুধু আমার অধিকার ।জন্ম থেকে সে শুধু আমার ।মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে আমার থাকবে ।মৃত্যুর পরও সে শুধু আমার থাকবে ।সে আমার স্বামী। আপনি আমার সামনে আমার স্বামীকে জড়িয়ে ধরেছেন ।কি সম্পর্ক আছে আপনাদের মাঝে ?কিসের অধিকার নিয়ে ধরেছিলেন ?আপনার কি মনে হয়নি একজনের বাড়িতে এসে এভাবে একটা পরপুরুষকে জড়িয়ে ধরা মেয়েদের মানুষ কি চোখে দেখবে? বা সেই ছেলেটি যার সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই মানুষ সেই ছেলেটির চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলবে?”
রিহা বললো,” আমি সাদাফ কে অনেক ভালোবাসি তাই এসেছিলাম কিন্তু জানতাম না ও বিবাহিত বা বিয়ে করেছে ।তবে হ্যাঁ এটা জানতাম ও তোমাকে ভালোবাসে তারপর আমি এখানে এসেছি এটা আমার ভুল হয়েছে। সাদাব কখনোই আমাকে ভালবাসেনি সবসময় তোমাকে ভালবেসেছে ।আমি ভেবেছিলাম হয়তো এখানে এসে পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিলে হয়তো আমি তাকে পাব আমিও তো তাকে ভালোবাসি । ভালোবাসা পাওয়ার জন্য একটা শেষ চেষ্টা করে দেখেছিলাম ।মৃ*ত্যু পথযাতি মানুষ ওতো খড়কুটো পেয়ে সেটাকে আঁকড়ে ধরে ।জানে বাঁচতে পারবেনা তারপর আকড়ে ধরে।আমিও সেরকম খড়কুটোর মত একটি সম্ভাবনা দেখেছিলাম হয়তো পারিবারিকভাবে প্রস্তাব দিলে আমি সাদাফকে পেতে পারি তাই সে চেষ্টা করেছিলাম আমার ভুল হয়েছে।
আমার ভুল হয়েছে নূর ।প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও ।আমি আর কখনো তোমাদের মাঝখানে আসার চেষ্টা করব না।
আজকের পর থেকে এই যে প্রমিস করে বলছি সবার সামনে ।আমি আর কখনো সাদাবকে চাইবো না কখনো ভালবাসতে চাইবো না ।আমি আমার বাবা-মায়ের পছন্দ করা পাত্রকে বিয়ে করে ফেলব ।এই যে সবার সামনে প্রমিস করে বলছি ।আমি কি তোমাদের বিয়েটা এটেন্ড করে যেতে পারি ?আজকে যেহেতু বিয়ে বিয়ে টা এটেনড করে না হয় আমি রাতে ফিরে যাব।”
নুর তাকিয়ে রইলো রিহার দিকে ।রেহাকে দেখে বুঝা যাচ্ছে সত্যি সাদাফ কে অনেক ভালোবাসে ।নুরের যেন মনটা একটু নরম হলো। মানুষ যদি সত্যি কাওকে ভালোবাসে হয়তো এরকম হয়ে যায় ।তাই বললো,”ঠিক আছে বিয়ে এটেন্ড করে যান সমস্যা নেই কিন্তু এটা মনে রাখবেন উনি আমার স্বামী হয়।
আপনি চাইলেও কখনো আমাদের মাঝখানে আসতে পারবেন না ।সেই সুযোগ নেই ।তবে আপনি চেষ্টা করবেন না কথা দিয়েছেন এটা আমি খুশি হয়েছি ।অবশ্যই আমি আপনার জন্য মনে কিছু রাখবো না ।বিয়ে আপনি এটেন্ড করে যেতে পারেন।”
রিহা নুরের দিকে তাকিয়ে বললো,”থ্যাঙ্ক ইউ নুর ।আসলেই তুমি সাদাফের যোগ্য ।ভালোবাসার জন্য আমি কেনো যোগ্য ছিলাম না আজকে বুঝতে পারলাম কেন উনি তোমাকে এত ভালোবাসে?তোমার জায়গায় আমি থাকলে এত বড় মনের পরিচয় দিতে পারতাম না সত্যি ।কিন্তু তুমি কি সুন্দর মেনে নিলে ।এজন্যই সাদাফ তোমার হয়েছে আর আমি এত শত চেষ্টা করেও কখনো পাইনি।”
এর মধ্যেই সাদাফ তাকালো নুরের দিকে ।নূর চোখের পানি মুছে তাকালো সাদাফের দিকে ।
সাদাফ সাথে সাথে সবার সামনে নুরকে জড়িয়ে ধরল ।যেন বোঝাতে চাইলো এই বুকে শুধুমাত্র নূরের স্থান অন্য কারো নয়। যেন কিছু না বলেও রিহা কে উপযুক্ত উত্তর দিয়ে দিল সাদাফ।
চলবে_
সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব ১৫৪
সবাই একসাথে হাততালি দিয়ে উঠল ।হইচই শুরু হয়ে গেলো।সাদাফ জড়িয়ে ধরে আছে নূরকে । রান্নাঘরের দরজা থেকে দাঁড়িয়ে দেখলেন নওরিন আফরোজ ও সামিহা বেগম ।তারা সামনে আসলেন না আসলে হয়তো বাচ্চা দুটো লজ্জা পেয়ে যাবে ।তবে দূর থেকে দেখেই যেন চোখ ভরে আসলো সামিহা বেগম ও নওরিন আফরোজ এর।
সাদাফ নুরের মুখ টি দুই হাতের আঁজলে ধরে বললো,” কোন সময় আমাকে ফেলে দূরে যাওয়ার কথা চিন্তা করিস না নূর ।এইযে সবার সামনে ওয়াদা করে বলছি তুই আমার কাছে না থাকলে আমি কিন্তু মরেই যাবো ।”বলেই নূরের কপালে চুমু খেলো সাদাফ।
এই প্রথম নূর সবার সামনে সাদাফ কে দুই হাতে জড়িয়ে ধরল ।জড়িয়ে ধরে নুরের চিরাচরিত রূপ নুর ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিল ।বললো,” কোথাও যাবো না।ছাড়বোই না।আপনাকেও যেতে দিবো না।”
সবাই আবার হাততালি দিয়ে উঠলো ।সাবা দূর থেকে দেখে বললো,” মাশাল্লাহ এ ভালোবাসা যেন কারো নজর না লাগে।”
নুর রেডি হয়ে বসে আছে নিজের রুমে ।বউ সাজে এই প্রথম নুরকে দেখে সবাই যেন অবাক হয়ে যাচ্ছে ।এর আগে যেদিন বিয়ে করে এসেছিল শাড়ি পড়া ছিল শুধু একটি সারি কিন্তু এই রকম বউ এর মতো মোহনীয় রূপে বসে থাকেনি নূর। যেই দেখছে সেই যেন অবাক হয়ে যাচ্ছে।
কেউ যেন বিশ্বাস করতে পারছে না এটাই তাদের সেই ছোট্ট নূর ।সামিহা বেগম কান্না করে দিলেন নুরকে দেখে ।নওরিন আফরোজ বললেন ,”তুই কি আজকে পন করে রেখেছিস কথায় কথায় কান্না করে দিবি ?”সামিহা বেগম নওরিন আফরোজকে জড়িয়ে ধরে বললেন ,”আমার যে আজকে বড় খুশির দিন ভাবি আমি খুশি ধরে রাখতে পারছি না।
এই চোখের পানি খুশির পানি ভাবি ।আজকে যে আমার চাওয়া পাওয়া সব কিছু পূরণ হয়ে গেছে ।সাদাফকে আমি আমার মেয়ের জীবনে পেয়েছি সাদাফের মত একটা ছেলে নিজের মেয়ে জামাই হিসেবে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার ।অথচ আমার কত স্বপ্ন ছিল একদিন সাদাফের বউ হবে ও।”
নওরিন আফরোজ সামিহা বেগমের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললেন ,”তাহলে আজকে খুশির দিনে যা ইচ্ছা হয় আল্লাহর কাছে চেয়ে নে ।হয়তো আল্লাহ কবুল করে নিবে।”
সাদাফ রেডি ।অনেকক্ষণ ধরে সাদাফ চেষ্টা করছে নূরের রুমে একটু যাওয়ার কিন্তু নূরের রুমে এত লোক যেতে পারছে না।এত লোক থাকলেও সমস্যা নেই সমস্যা হচ্ছে কিছু মুরুব্বী এবং মা এবং ছোট আম্মু আছে তাই সাদাফ রিমাকে ডাকলো। রিমা রুমে আসতেই দেখলো সাইমন সাদাব সোহান আরো কয়েকজন ফ্রেন্ড একসাথে বসে আছে ।সাদাফ বললো ,”নূরের রুমে যাবি যেয়ে যারা আছে সবাইকে রুম থেকে বের করবি।আমি একটু নূরের সাথে দেখা করতে চাই ।”
সায়মন লজ্জা পেয়ে গেল সায়মনের সামনে বলল তাই।
“কেন কি হবে দেখা করে ?একটু পর তো কবুল বলা হবে বিয়ে হয়ে যাবে সকাল থেকে দেখছো আর কত দেখবে?”বললো রিমা।
সায়মন কিছু না বলে চুপচাপ রুম থেকে বের হয়ে গেল ।সায়মন চায় না ওর সামনেই রিমা আর সাদাফ এর মধ্যে নূরকে নিয়ে কথা হোক ।সাইমন বাহিরে যেতেই সাদাফ বললো,” তোর কি আক্কেল হবে না ?কার সামনে কি কথা বলতে হয় জানিস না?এখনই যা যেয়ে রুম খালি কর ।”
রিমা বললো,” ঘুষ লাগবে ।”
সাদাফ বললো,”থাপ্পরে দাঁতগুলো সব ফেলে দিব ।ঘুষ লাগবে না ?এখন যা বলছি।”
রিমা ধমক শুনে সবার সামনে লজ্জা পেয়ে গেল ।বললো,” সুন্দর করে তো বলা যায় ।এত ধমকা ধমকির কি আছে ?”
বলেই রুম থেকে বের হয়ে গেল ।গিয়ে নূরের রুমে গিয়ে দেখল সামিহা বেগম নরেন আফরোজ আর কিছু মুরুব্বী লোকজন এবং বিউটিশিয়ানরাও আছে ।তবে সাজানো শেষ ।রিমা বললো,” আচ্ছা আচ্ছা তোমরা সবাই বের হও আমি নূরের সাথে বসে থাকবো ।সমস্যা নেই ।তোমরা বিয়ের কাজ করো গিয়ে যাও।”
সামিহা বেগম বললেন,” আচ্ছা এসেছিস ভালো হয়েছে নূর একা একা ছিল একটু পর আমি উপরে খাবার পাঠিয়ে দিব ।ওকে একটু খাইয়ে দিস ।নিচে চলে গেলে খাওয়া দাওয়া করতে পারবেনা ।”
বলেই নরিন আফরোজের দিকে তাকিয়ে বললো,” চলো ভাবি আমরা যাই ও তো নুরের সাথে বসে আছে।”
সবাই চলে যেতেই রিমা বলল ,”তুই এক মিনিট বস আমি এই মুহূর্তে যাব আর আসব ।”
নূর চুপচাপ বসে রইল ।হঠাৎ দরজায় শব্দ হল ।দরজার দিকে তাকিয়ে দেখল সাদাফ দরজা দিয়ে ঢুকিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল ।নুর অবাক হয়ে গেল ।এখানে কি করছে এই মুহূর্তে তো এখানে আসার কথা নয় ।তবে অবাকের চেয়ে বেশি যেন মুগ্ধ হয়ে গেল নুর।এই প্রথম সাদাফ ভাইকে শেরওয়ানি পড়ে মাথায় পাগড়ি পরা অবস্থায় দেখলো।যেনো কোন রাজপুত্র।কোন রাজ্যের রাজকুমারী কে জয় করতে যাচ্ছে।
নুর মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে সাদাফের দিকে। চোখ ফেলতে পারছে না ।সাদাফ ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে নূরের বিছানার কাছে হাঁটু ভেঙ্গে নিচে বসে নূরের দিকে তাকিয়ে বললো,” আমার ছোট্ট নূর !আমার পরী ! তোকে দেখতে আজ ভীষণ সুন্দর লাগছে ! আজ যেন মিসেস সাদাফ আমার বউ বউ লাগছে।
কি করে এত সুন্দর পরী টা আমার জীবনে আসলে বলতো?
আল্লাহ যে পুতুলটাকে শুধু আমার জন্যই পাঠিয়েছিল ।এই পরীটাকে শুধু আমার জন্যই পাঠিয়েছে আল্লাহ ।সেজন্যই তো প্রথম দিন থেকেই আমার দেখে মনে হয়েছিল নূর শুধু আমার এটা আমার ছোট্ট পুতুল এটা আমার ছোট্ট পরী।”
নূর মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থেকে সাদাফের গালে এক হাত রেখে বলল ,”আর আপনি শুধু আমার অন্য কারো নয়।”
চলে আসলো সেই শুভক্ষণ ।মাঝখানে ফুলের তৈরি পর্দার মতো টাঙ্গানো এপাশ-ওপাশ দেখা যাচ্ছে তবে একটু হালকা ঝাপসা ।নুর মাথা নিচু করে বসে আছে ।সাদাফ সবার সামনে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে ।বন্ধুরা মাঝেমধ্যে খোঁচা দিয়ে বলছে চোখ নামা ।চোখ দিয়ে কি খেয়ে ফেলবে নাকি ?সাদাফের তাতে কিছুই যায় আসে না ।আজ চোখ ভরে দেখবে মন ভরে দেখবে সাদাফ ওর ছোট্ট নুর পরী কে।
এমন সময় কাজী নুরের দিকে তাকিয়ে বিয়ে পড়ানোর উদ্দেশ্যে বললো,” পিতা হুমায়ুন রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র সাদাফ রহমানকে ১০ লক্ষ এক টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া বিবাহের জন্য রাজি থাকলে বল মা আলহামদুলিল্লাহ কবুল।”
এবার আর নূর দেরি করল না ।নুর নিশ্চিত সাদাফ কে চাই।চোখ দুটো নিচে রেখেই তিনবার বললো,”কবুল কবুল কবুল ।”
নূরের মুখ থেকে কবুল শোনার পরে সাদাফ সাথে সাথে দুই হাতে নিজের মুখ ঢেকে ফেলল ।কান্না করছে সাদাফ। খুশির কান্না ।কান্না যেন বাধ মানছে না আজ।এদিকে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল সাদাফের দিকে ।সাথে ফজলুর রহমান ও হুমায়ুন রহমান ও মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইল ।সোহান খোঁচা মে*রে বললো ,”কিরে কবুল করার সময় মেয়েরা কাঁদে জানতাম ছেলেরা কবে থেকে কান্না শুরু করলো?”
সাবা সোহানের দিকে তাকিয়ে বললো,” কাদে ছেলেরা যখন নিজের শখের নারীকে অনেক সাধনার পর পায় নিজের করে তখন এইভাবে খুশির কান্না আর বাঁধ মানে না ।সকলের সামনে চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরে পড়ে।”
নুর তাকিয়ে আছে সাদাফের দিকে ।আজ নুর কাঁদবেনা । মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাদাফের দিকে।সাদাফ কান্নারত অবস্থায় সবার সামনে বললো,” আলহামদুলিল্লাহ কবুল।”
সমস্ত দৃশ্যই একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ভেজা ভেজা নয়নে অবলোকন করলো রিহা। সাদাফ যে রিহার শখের পুরুষ ছিল তবে একতরফা । একতরফা কোন কিছুই ভালো নয় ।আজ নিজের শখের পুরুষকে তার শখের নারীকে পাওয়ার আনন্দ উপভোগ করতে দেখল রিহা ।রিহা প্রস্তুত এখন চলে যাওয়ার জন্য শুধু বিদায় নেবার পালা।
সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব ১৫৫
সাদাফকে রুমে আটকে রেখেছে সোহান সাবা অন্যান্য ফ্রেন্ডস রাত।সাইমন চুপচাপ বসে আছে কোন কথা বলছে না ।শত হলেও ছোট বোনের হাজব্যান্ড ।সাইমন উঁকি ঝুঁকি মারছে কখন এখান থেকে চলে যাওয়া যায় ।সাদাফ বুঝতে পারলো সায়মনের অস্বস্থি।বললো আচ্ছা সাইমন নিচে থেকে আমার জন্য একমগ কফি নিয়ে আয় তো আমার খুব কফি খেতে ইচ্ছা করছে মাথা ব্যথা করছে।
সায়মন যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল । কতক্ষণে এখান থেকে উঠবে তাই ভাবছিলো।উঠে যাওয়ার বাহানা পাচ্ছিল না এখন বাহানা পেয়ে তড়িঘড়ি করে বললো,” ঠিক আছে ভাইয়া আমি এখনই পাঠাচ্ছি।”
সাইমন যেতেই সাথে সাথে রুমে হাসির রোল পড়ে গেল।রকি বললো,”বাহ সমন্ধিসকে কি কৌশলে ই না বের করলি।” সোহান বলল বন্ধু আজকে তোর অফিসিয়াল বা*সর রাত । চুপিচুপি কিছু করা লাগবে না ।ওপেনলি করবি তোর ফিলিংস কেমন?”
সাদাফ সোহানের দিকে তাকিয়ে বললো,” বাজে কথা বলবি না ।বা*সর ঘর নিয়ে কিসের আবার নতুন ফিলিং?বিয়ে কি আজ করেছি?”
“না না নতুন লাগবে কারণ আজকে ভাবি পরীর মত সেজেছে ।এতদিন তো শুধু নূর ছিল এখন তো হুর হয়ে গিয়েছে।”বললো রকি।
“আজকে ফুলে ফুলে সজ্জিত বিছানা। আমরা তো জাস্ট কয়েকটা পাপড়ি ফুল টুল দিয়ে সাজিয়েছিলাম ।আজকে সম্পূর্ণ রুম সম্পূর্ণ বাড়ি ।ফুলেল সুসজ্জিত বিছানা ।ভাবিকে দেখতে লাগছে হুরপরী ।সবকিছু মিলেমিশে একাকার ।বল বন্ধু তোর অনুভূতি কেমন? ” জানতে চাইলো হিমেল।
“যে ছেলে বউয়ের দিকে বেহায়া মত সবার সামনে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে বৌয়ের মুখে কবুল শুনে হাউমাউ করে কেঁদে দেয় সেই ছেলে বাসর রাত আজকে কেমন হবে ভাবতে আমার শরীরে কাপুনি উঠে যাচ্ছে।”বললো রকি।
“যাইহোক আমরা কিন্তু পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গিফট ভাবির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি ।তুই শুধু যেয়ে ভাবি কে একটু খুলতে সহযোগিতা করিস।মানে গিফ্ট বক্স।অন্য কিছু না।” বললো সোহান।
সাদাফ সাথে সাথে তাকানো সোহানের দিকে । বললো,” মানে ?কি করেছিস তোরা ?কি পাঠিয়েছিস ?”
“বলল বলবো কথা বাসর ঘরে ।গিয়ে খুলে দেখ তারপরে বুঝবি।”বললো সোহান।
সাবা বললো ,”নুর কিন্তু ছোট বন্ধু। সাবধানে।”
সোহান বললো,” রাখ তোর সাবধান। ছোট গাড়ী চালিয়ে ফেলেছে।আজ অফিসিয়ালি চালাবে।”
সাইমন সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে দেখা হলো রিমার সাথে । বললো,” এত দৌড়াদৌড়ি করে কোথায় যাচ্ছিস?”
রিমা বললো,” তুমি যাবে না বা*সর ঘরে গেট ধরতে।”
বিয়ের গেইট তো ধরতে পারিনি জামাই বউ তো একই বাড়ির সেজন্য বা*সর ঘরে গিয়ে গেইট ধরবো। সুযোগ ছাড়া যাবে না তাড়াতাড়ি আসো সবাই গিয়ে ধরবো ।অনেকগুলো টাকা নিব ভাইয়ের কাছ থেকে।”
সাইমন অবাক হয়ে তাকালো রিমার দিকে ।তারপরে বলল,” মেয়েদের বুদ্ধি যে হাঁটুর নিচে থাকে তা জানতাম তোকে দেখে তা প্রমাণ পেলাম ।তুই সাদাফ ভাইয়ের ছোট বোন আমি ছোট ভাই হলেও আমি কিন্তু নূরের বড় ভাই ।বড় ভাই হয়ে ছোট বোনের বা*সর ঘরে গেইট ধরবো ?বুদ্ধি কোথায় থাকে তোর?”
রিমা সাথে সাথে নিজের ভুল বুঝতে পারলো। দাঁত দিয়ে জিভ কে*টে বললো ,”সরি সরি ভুল হয়ে গেছে ।বারবার সম্পর্কে আওলা ঝাওলা হয়ে যায় ।তুমি যে নূরের বড় ভাই এটা আমি ভুলে গিয়েছিলাম ।অবশ্য আমিও কাজিন বড় বোন কিন্তু আমি আপন টাই ধরবো ।ছোট বোন হিসেবে গেট ধরে অনেকগুলো টাকা নিয়ে নেব।”
সায়মন অবাক চোখে তাকালো রিমার দিকে ।তারপর এদিক-ওদিক তাকিয়ে ধীরে ধীরে বললো,” এক কাজ করিস নিজের বাসরে গেটটাও নিজেই ধরিস ।বাসর যখন তোর সাথে করবো টাকা অন্যকে কেন দিব ?বা*সরও তোর সাথে করবো টাকাও তোকে দিব ।তুই সাজুগুজু করে গেইটেই দাঁড়িয়ে থাকিস।”
বলেই সাথে সাথে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেল ।এই মুহূর্তে এখানে থাকলে রিমা রণচনডী রূপ ধারণ করতে পারে সেজন্য আর এক মুহূর্ত দেরি করল না সাইমন।
বাড়ি মুরুব্বীরা যার যার মত নিজের রুমে চলে গিয়েছে ।সোহান এবং সোহানের বন্ধুরা সাদাবকে নিয়ে নূরের রুমের দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে ।নূরকে অনেক আগেই সাজুগুজু করিয়ে সিম্পল কাপড় পরিয়ে বাসর ঘরে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রিমা দৌড়ে এসে সাদাফের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,” দাঁড়াও দাঁড়াও দাঁড়াও আমাদের কাজিনদের টাকা না দিলে রুমে ঢুকতে পারবে না ।সবাই বলে উঠলো হ্যাঁ তাই।”সাথে আরো দুই তিন জন এলো সাথে দাঁড়ালো ।সাইমনের কিছু বন্ধু নূরের বান্ধবীরা বন্ধুরা এবং সাদাফে বন্ধু বান্ধবীরা বলল ,”সবাইকে টাকা দিবি তারপর ভিতরে ঢুকবি।”
“কোন বড় ছোট নেই আমরা সবাই তোর বিয়ের জন্য অনেক দোয়া করেছি ।পরিশ্রম করেছি ।তোর প্রেম কাহিনী সেই ছোটবেলা থেকে শুনেছি।তোর ঘ্যানর ঘ্যানর শুনেছি ।আজকে টাকা দিয়ে বাসর ঘরে ঢুকবি না হলে বাসর ক্যানসেল “বললো সোহান।
সাদাব বললো,” ঠিক আছে যা আছে তাই নিবি কোন নেগোসিয়েশন চলবে না।”
সাথে সাথে সাবা বলে উঠলো,” নো নো আমেরিকা তুমি চাকরি করতে তা আমরা জানি সেজন্য তোমার কাছে টাকা আছে কোন হ্যাংকি প্যাংকি চলবে না।”
সাদাফ পকেট থেকে নগর ত্রিশ হাজার টাকা বের করে দিল ।দিয়ে বললো,” এটাই আছে নিলে নে আর না হলে আমি আমার রুমে চললাম ।”
বলেই সাদাফ হাটা ধরবে ওমনি সোহান সাদাফ কে ধরে বলে ,”দাঁড়া দাঁড়া দাঁড়া। থাক তোকে মাফ করে দিলাম যা ।তিরিশ হাজার টাকায় চলবে তাই বলে আমাদের জন্য কি তুই বা*সর রাত ক্যান্সেল করবে নাকি ?আমারা কি এতোই ছোটলোক?যা বন্ধু যা।তোর জন্য ভিতর ধামাকা অপেক্ষা করছে।গিয়েই দেখ।নুরের হাতে গিফট দিয়ে এসেছি বলেছি তুই গেলে আনপ্যাক করবি যা। অল দ্য বেস্ট ।”
বলেই সাদাফ কে ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে দিল সবাই ।হাসির রোল পড়ে গেল বাইরে।সাদাফ মাথা চুলকে ভাবছে না জানি কি করেছে হারামজাদারা ।এদিকে রুমে ঢুকেই সাদাফ দেখলো নূর একটি বক্স নিয়ে কোলে বসে আছে ।নূরের শাড়ি চেঞ্জ করে দেওয়া হয়েছে ।অন্য শাড়ি যেটা নিয়েছিল সেই শাড়িটা পরিয়ে আবার নতুন সাজে নতুন করে নূরকে বসানো হয়েছে ।যেন দিন দিন নূরের সৌন্দর্য বেড়ে যাচ্ছে ।সকালে দেখল একরকম দুপুরে বউ সাজা আরেকরকম এখন যেন মোহনীয় রূপ ছাড়িয়ে যাচ্ছে নূর।যেন নিজের সৌন্দর্যকে নিজেই বারবার টেক্কা দিচ্ছে।
নূরের কোলে উপহারের বক্সটি দেখে শুকনো ঢোক গিলল সাদাফ।না জানি কি করেছে পা*গলামি ?আল্লাহ জানে ।সাদাফ ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো বিছানার কাছে ।নুরের ভয় লাগছে ।লজ্জা লাগছে আজ ।অফিসিয়ালি সাদাফ নুর এক রুমে থাকবে ।সবাই জানবে ।কেমন যেন ভিতরে অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছে নূরের।
এক হ্যাকার আমাকে ধমকাচছে। আইডি খেয়ে ফেলার।
যদি এমন হয় নিচে আমি আরেক আইডির লিংক দিবো এড দিয়ে রাখবেন।
চলবে__
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৮৮
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১৩৯+১৪০
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯৫
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৮
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১১৩
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১০৪+১০৫
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৪৯
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫০
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯২
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩১+৩২