দ্যাআনপ্রেডিক্টেবললাভ
পর্ব : ০৫
লেখক_Jahirul_islam_Mahir
❌🚫 অনুমতি ব্যতীত কপি করা বা নিজের পেইজ গুরুপে পোস্ট করা নিষেধ 🚫❌
☘️
রাত একটা। আদনান আর আদ্রিয়ানা এইমাত্র বাড়ির সামনে এসে পৌঁছেছে। আদনান গাড়ি থেকে নেমে আদ্রিয়ানাকে ও গাড়ি থেকে নামায়। আদ্রিয়ানা গাড়ি থেকে নেমে আদনানের হাত জড়িয়ে ধরে। জঙ্গলের ভিতরে রাত একটার সময় একদমই অন্যরকম একটা পরিবেশ! যেনো একটা অন্ধকার রাজ্য! গাছগুলো যেনো লাল চোখে তাকিয়ে আছে, আর তাদের ডালপালা যেনো হাত বাড়িয়ে কাউকে ডাকছে… পাতার মর্মর শব্দ, পোকামাকড়ের ডাক, আর দূরে কোথাও একটা পেঁচার হুতুম হুতুম ডাক… সব মিলিয়ে একটা রহস্যময় পরিবেশ! ভয়ে আদ্রিয়ানা শক্ত করে আদনানের হাত জড়িয়ে ধরে। আদনান বুঝতে পারে যে আদ্রিয়ানা ভয় পাচ্ছে। আদনান তাকে আশ্বস্ত করার জন্য আদ্রিয়ানাকে কোলে তুলে নিয়ে বাড়ির ভিতরে চলে যায়। রুমে গিয়ে আদ্রিয়ানাকে বেডের উপর বসিয়ে দেয়। আদনান আদ্রিয়ানার দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদ্রিয়ানা বলে ওঠে”,
“মিস্টার সাদা কালা পান্ডা, আপনি বাড়ি তৈরি করার জন্য আর কোনো জায়গা খুঁজে পাননি? এই জঙ্গলের ভিতরে কেনো বাড়ি তৈরি করেছেন?”
“আমার জঙ্গল পছন্দ তাই।”
“জঙ্গল পছন্দ বলে জঙ্গলের ভিতরে বাড়ি তৈরি করবেন?” আপনার বৌয়ের তো আর জঙ্গল পছন্দ না। বাই দা ওয়ে, এই বাড়িতে কি আপনি একা থাকেন?”
“হুম।” আমার যেটা পছন্দ আমার বৌয়ের ও পছন্দ হতে হবে ওকেই। আর এই বাড়িতে আমি একাই থাকি।
“ভয় করে না?”
“ভয় কেনো করবে, আজব।”
“সেটাই তো, সাদা কালা পান্ডারা কি আর ভয় পায়?”
“কি বললা?”
“বলছি, সাদা কালা পান্ডা”
“দোহাই লাগে, বৌ, আমাকে সাদা কালা পান্ডা বলা বন্ধ করো!”
“বন্ধ কেনো করবো? সাদা কালা পান্ডা নামটা আপনার সাথে যায়।”
“পাগলের তো অনেক কথায় বলে। পাগলের কথায় কান দিতে নেই তাই দিলাম না।” “বাই দা ওয়াই, ঘরওয়ালী, অনেক রাত হয়েছে, ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। আমি পাশের রুমেই আছি।”
“ওয়েট, মিস্টার সাদা কালা পান্ডা, ওয়েট। আপনি পাশের রুমে যাচ্ছেন ভালো কথা, যাওয়ার আগে আমাকে জুয়েলারি গুলো খুলতে সাহায্য করেন।”
“খোলাখুলি করতে হবে? নো প্রবলেম মাই ডিয়ার বৌ, তোমার জামাই খুলাখুলিতে এক্সপার্ট আছে।”
“খুলাখুলিতে এক্সপার্ট মানে?” “আমার আগে কয় জনের জুয়েলারি খুলছেন?” “সত্যি করে বলবেন কিন্তু?”
“আরে না না”, “তুমি ভুল বুঝছো, ঘরওয়ালী!” “খুলাখুলি মানে হলো, তোমার জুয়েলারি খোলার কাজে আমি এক্সপার্ট”, “আর কারো জুয়েলারি না!”
“আদ্রিয়ানা আদনানের কাছে এসে বলে”, “মিস্টার সাদা কালা পান্ডা, আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না!”
“সত্যি বলছি, সুইটহার্ট”, “তুমি প্রথম আর একমাত্র মেয়ে যার জুয়েলারি খুলছি।”
“সত্যি তো, মিস্টার সাদা কালা পান্ডা?”
“হুম, সত্যি”
“তিন সত্যি বলেন!”
“তিন সত্যি”
“সরি, মিস্টার সাদা কালা পান্ডা, আপনাকে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না!”
“কি করলে বিশ্বাস করবা, বলো, তাই করবো।”
“আমাকে কোলে নিয়ে পুরো বাড়ি ঘুরলে তারপর বিশ্বাস করবো।”
“আদনান আদ্রিয়ানাকে কোলে তুলে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়। সোজা নিচে গিয়ে বাড়ির মেন দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়”
“এটা হচ্ছে বাড়ির মেন ডোর, এখান থেকেই শুরু করছি, ওকে?”
“ওকে, মিস্টার সাদা কালা পান্ডা”
“আদনান হাঁটা শুরু করে” প্রথমে বাড়ির নিচ তলা টা ঘুরিয়ে দেখায়। নিচ তলা দেখা শেষে উপরের তলায় যাওয়ার জন্য আদনান যখনি সিঁড়িতে পা রাখে ঠিক তখনি আদ্রিয়ানা বলে ওঠে”
“মিস্টার সাদা কালো পান্ডা, দৌড়ান!”
“আদ্রিয়ানার কথা মতো আদনান দৌড়ে উপরের তলায় ওঠে”
“মিস্টার সাদা কালা পান্ডা, এইবার আমাকে রুমে নিয়ে চলুন, আমি ঘুমাবো”
“আদনান আদ্রিয়ানাকে রুমে নিয়ে গিয়ে বেডের উপর শুইয়ে দেয়।”
“মিস্টার সাদা কালা পান্ডা, আমাকে শুইয়ে দিলেন কেনো?”
“তুমিই তো বললে তুমি ঘুমাবে।”
“চেঞ্জ করবো না, না কি এই এ্যাঙ্গেজমেন্টের ড্রেস পরেই ঘুমিয়ে পড়বো?”
“যাও, চেঞ্জ করে আসো!”
“হুম”
“আদ্রিয়ানা কাবাটের দিকে এগিয়ে যায়। কাবাট থেকে একটা থ্রিপিস নিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায়। মিনিট দশেকের মধ্যে চেঞ্জ করে বের হয়ে আসে”
“মিস্টার সাদা কালা পান্ডা, আপনি এখনো রুমে যাননি কেনো?”
“তুমি ঘুমিয়ে পড়ো, তারপর যাবো!”
“মিস্টার সাদা কালা পান্ডা, আমি ঘুমিয়ে পড়লে আপনি আবার আমার ঘুমের সুযোগ নিবেন না তো?”
“বিশ্বাস রাখতে পারো, জহির আদনান এমন নয়, নিজের প্রতি কন্ট্রোল আছে জহির আদনান চৌধুরীর।”
“ওও আচ্ছা আচ্ছা”
“হুম।”
“আদ্রিয়ানা শুয়ে পড়ে। আদনানের দিকে তাকিয়ে গুড নাইট বলে চোখ বন্ধ করে ফেলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আদ্রিয়ানা হারিয়ে যায় ঘুমের রাজ্যে। আদনান আদ্রিয়ানার ঘুমন্ত চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকে। ঘুমের মধ্যে মেয়েটাকে কি সুন্দর লাগছে। আদনানের চোখে আদ্রিয়ানার ঘুমন্ত মুখটা যেনো একটা পূর্ণিমার চাঁদ! সে আদ্রিয়ানার দিকে তাকিয়ে থাকে, আর তার মনে হয় যেনো সে একটা স্বপ্নের রাজ্যে আছে।
“আদ্রিয়ানা, তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।” “আদনান আদ্রিয়ানার গায়ে কম্বলটা ভালো করে দিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। জামা চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।”
☘️
“জহির আদনান চৌধুরীর সৎ ভাই জাবির রায়হান চৌধুরী বর্তমানে আমেরিকায় বসে জহির আদনানের এ্যাঙ্গেজমেন্টের পিক আর ভিডিও দেখছে। প্রথমে আদ্রিয়ানাকে খেয়াল না করলেও পরে ঠিকই খেয়াল করে। জহির আদনানের সাথে আদ্রিয়ানাকে দেখার সাথে সাথে হাতে থাকা ফোনটা ছুঁড়ে মারে ফ্লারে। রাগে গজগজ করছে জাবির রায়হান চৌধুরী। সামনে থাকা টেবিলে লাত্থি মেরে চিৎকার দিয়ে বলে”,
“আহহ জহির আদনান চৌধুরী, ছোট থেকে তুমি আমার কাছ থেকে সব কিছু কেড়ে নিয়েছো। বাবা-মায়ের ভালোবাসা থেকে শুরু করে সব। আমার মা আমার থেকে তোমাকে বেশি ভালোবেসেছে। সব কিছু আমি মেনে নিয়েছি। কিন্তু তুমি কি করলে? শেষমেষ আমার ভালোবাসার মানুষটাকেও কেড়ে নিলে?”
“কথাটা বলেই জোরে দেয়ালে ঘুষি মারে জাবির রায়হান চৌধুরী। হাত ফেটে রক্ত বের হয়ে যায়। সেই দিকে তার কোনো খেয়াল নেই। জাবির রায়হান চৌধুরী দেয়ালে ঘুষি মেরে বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছে। তার মনে একটাই কথা ঘুরছে,
“মেয়ে, তুমি জানো না তোমাকে এই জাবির রায়হান চৌধুরী কতটা ভালোবেসে ফেলেছে।” তোমাকে ছাড়া এই জাবির রায়হান চৌধুরী বাঁচতে পারবে না। যে করেই হোক না কেনো, তোমাকে আমি নিজের করে নিবোই নিবো। প্রয়োজনে ওই জহির আদনান চৌধুরীকে শেষ করে দিবো!”
জাবির রায়হান চৌধুরী কথা টা বলে শেষ করতে না করতেই তার বাবা রহিম উদ্দিন চৌধুরী রুমে প্রবেশ করে। রহিম উদ্দিন চৌধুরী ছেলের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে যে তার ছেলে ঠিক নেই, কোনো কারণে রেগে আছে। জাবিরের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই চোখ পড়ে জাবিরের রক্তাক্ত হয়ে থাকা হাতের উপর।
“কি হয়েছে বাবা? তোর হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে কেন?”
জাবির কিছু বলে না। রহিম জাবিরের হাত ধরে জাবিরকে রুমে নিয়ে যায়। জাবিরকে বেডের উপর বসিয়ে জাবিরের হাত পরিষ্কার করতে শুরু করেন। জাবির এখনো চুপ করে আছে, তার চোখে রাগ আর দুঃখের আগুন জ্বলছে। রহিম উদ্দিন চৌধুরী ছেলের হাত পরিষ্কার করতে করতে আবার বলেন,
“বাবা, কি হয়েছে? তোর হাতের এই অবস্থা কেন?”
নিজের হাতের অবস্থার কথা না বলে জাবির রায়হান চৌধুরী বাবার দিকে তাকিয়ে বলে,
“বাবা, আমি কালকেই বাংলাদেশে ব্যাক করবো। আমি এখানে আর এক মুহূর্তও থাকতে চাই না।”
রহিম উদ্দিন চৌধুরী ছেলের কথা শুনে বলেন, “বাবা, তুই এখন যেতে পারবি না। অফিসের কাজের জন্য আরো একদিন আমাদের এখানে থাকতে হবে।”
জাবির রায়হান চৌধুরী বলে, “না বাবা, আমি থাকবো না। আমার এখানে আর থাকার কোনো মানে হয় না।”
রহিম উদ্দিন চৌধুরী ছেলের দিকে তাকিয়ে বলেন, “বাবা, তুই আমার কথা শোন। আর একদিন থাক। এই ডিলটা কনফার্ম না হলে আমাদের কোম্পানির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। পরশু আমরা চলে যাবো।”
জাবির রায়হান চৌধুরী বাবার জোরাজোরিতে থাকতে বাধ্য হয়। “ঠিক আছে, আমি থাকছি। কিন্তু পরশুই আমি বাংলাদেশে যাবো।”
রহিম উদ্দিন চৌধুরী ছেলের হাত পরিষ্কার করে দিয়ে বলেন,
“বাবা, তুই এখন রেস্ট নে। আমি যাই।” জাবির রায়হান চৌধুরী বাবার দিকে তাকিয়ে বলে, “ঠিক আছে বাবা।”
রহিম চলে যাওয়ার পর জাবির বেড থেকে নেমে ফ্লার থেকে ফোনটা হাতে তুলে নেয়। কল দেয় তার বন্ধু সামিরকে। প্রথম দুইবার রিং হয়ে কেটে গেলেও তৃতীয়বার রিসিভ হয়ে যায়।
“কিরে দোস্ত, কি হয়েছে? এতো রাতে কল দিলি যে?
ঘুমাচ্ছিস?”
“হুম।
মাদারবোর্ড, আমার মনে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তুই শান্তিতে ঘুমাচ্ছিস?”
“তো কি করবো?” রাত তিনটার সময় কি ডান্স করবো ?
“জহির আদনানের এ্যাঙ্গেজমেন্ট তো হয়ে গেছে, বিয়ে কবে?”
“কালকে গায়ে হলুদ, পরশু বিয়ে।” “ইনফরমেশনটা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ দোস্ত। এখন ঘুমা, বাই।”
জাবির ফোন কেটে দেয়। ফোনের দিকে তাকিয়ে হো হো করে হেসে ওঠে জাবির। “জহির আদনান চৌধুরী, আমিও দেখে নিবো তুমি কি করে বিয়ে করো।”
গল্পটা থ্রিলার, মাফিয়া, সাইকো, রোমান্টিক, ফানি রিলেটেড হবে। আগে থেকেই জানিয়ে দিলাম।
আর আপনাদের কে বলছিলাম পর্ব ৪ এ আজকে সন্ধ্যা সাত টার আগে 3k রিয়েক্ট পূরণ করে দিলে পর্ব ০৫ পোস্ট করবো। আপনারা 3k রিয়েক্ট পূরণ করে দেন নিই তাঁর পর ও গল্প দিলাম।
আমি অন্যদের মতো না যে 3k রিয়েক্ট পূরণ করে দাও বলে ঘেন ঘেন করবো। চুপচাপ শুধু দেখবো তাঁর পর ঠুস কইরা গল্প দেওয়া বন্ধ করে দিবো আর তোমরা ঠাস কইরা বাঁশ খেয়ে যাবা। একদমই সাইলেন্ট হয়ে যাবো। ইনবক্সে গুঁতা দিলেও আমাকে পাবেন না। সাইলেন্ট গেইম খেলবো তখন বুঝবা আমি কি জিনিস। আমি যা বলি তাই করি। ১০০% এর মধ্যে ৯৮% নো ফলোয়ার্স গল্প পড়ো। তাদের কে বলছি ঠুস কইরা ফলো দিলে দাও নয়তো ঠাস কইরা গল্প দেওয়া বন্ধ করে দিবো।
চলবে,,,,
( ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ )
Share On:
TAGS: জাহিরুল ইসলাম মাহির, দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ১
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ৪
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ গল্পের লিংক
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ২
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ৬
-
দ্যা আনপ্রেডিক্টেবল লাভ পর্ব ৩