পর্ব – ২ [❌১৮+❌]
ডার্কসাইডঅফ_লাভ
দূর্বা_এহসান
“উমম, এই দুটো এত সফট কেন?”
ঘুমের মাঝেই তরু অনুভব করলো বুকে কারো হাত। সে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো।সামনে মৃন্ময়। চোখমুখে কেমন যেনো নেশা নেশা।
“কি,কি করছেন আপনি?”
“পছন্দের খাবার সামনে ঢাকনা ছাড়া রাখলে,মানুষ কি করে?”
তরুর বুকের দিকে চোখ স্থির রেখে বললো মৃন্ময়। তরু পিছিয়ে গেলো।শরীর ঢাকার উদ্দেশ্যে ব্ল্যাঙ্কেট টানতে লাগলো।কিন্তু তার আগেই মৃন্ময় তার হাত ধরে ফেললো।দুটো হাত চেপে ধরলো খাটে।
“আমার জিনিস,আমার থেকেই ঢাকছিস!সাহস হলো কি করে?”
“ছা —ছাড়ুন”
বলতে বলতেই মৃন্ময়কে সামান্য ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলো সে।কিন্তু ব্যর্থ হলো।উল্টো মৃন্ময়কে রাগিয়ে দিলো।
মৃন্ময় তরুর গাল চেপে ধরলো।তরু তার বিয়ে করা বউ। গতকালই সব কিছু মেনে বিয়ে করেছে। তরু এখন তাঁর। পূর্বেও ছিল,বর্তমানেও আর ভবিষ্যতেও থাকবে।তাহলে সে কেন মৃন্ময়কে দূরে সরিয়ে দিতে চাইছে।
এসব ভাবতেই মৃন্ময় কেমন যেনো হয়ে গেলো। চোখমুখে রাগ স্পষ্ট হলো।হাতের চাপ শক্ত হলো।তরু ব্যথায় কঁকিয়ে উঠলো।নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছটফট শুরু করলো। এতে যেনো মৃন্ময়ের রাগের মাত্রা আরো বেড়ে গেলো। গাল থেকে হাত জায়গা নিলো গলায়।
“ছা–ড়ুন…”
“আবার বল কি বললি?”
তরু যতবার ছাড়তে বলছে, মৃন্ময়ের হাতের চাপ ততই কঠিন রুপ নিচ্ছে।
মৃন্ময় তরুর নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরলো। এতটাই জোরে যে মুহুর্তেই ব্লাড বেরিয়ে এলো দাঁতের চাপে। ভ্যাম্পায়ারের মত দুই দিকে দুটো হালকা বড় দাঁত ওর।
তরুর হাত গলা ছেড়ে দিলো।কিন্তু ঠোঁট ছাড়লো না।ওই অবস্থাতেই বিছানায় ফেলে ওর উপরে উঠে এলো। কয়েকমিনিট একটানা সে ঠোঁটের উপর অত্যাচার চালালো।এই মুখ দিয়েই তো ছাড়তে বলেছিল।তরুর হাত খামচে ধরেছে বেডশিট। তার একটা ভুল এ কোন জায়গায় এনে ফেলেছে তাকে।
মৃন্ময় তরুর কোমরের দিকে হাত বাড়িয়ে জামা সরালো। হাতটা কন্ট্রোলে থাকছে না।নিজেকে কোনোভাবে সামলে ছাড়লো ঠোঁট জোড়া।কপাল ঠেকালো তরুর কপালে। শ্বাস ভারী হয়ে উঠেছে। মেয়েটাকে শাস্তি দিতে গিয়ে নিজেই যেনো এখন শাস্তি পাচ্ছে।নিজের শরীরের কোনো একটা পার্ট ছটফট করতে শুরু করেছে।
চোখ বন্ধ করলো সে।ভারী কয়েকটা নিশ্বাস ছাড়লো তরুর মুখের উপর।নিজেকে কোনোভাবে সামলে নিয়ে বিছানার একপাশে সরে গেলো।
এই মেয়েটার সামান্য ছোঁয়া তাকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দেয়। আর এত কাছাকাছি এসে কি নিজেকে সামলানো সম্ভব? মোটেও না।
তরু উঠে বসলো। ঠোঁটে হাত রাখার সাথে সাথেই জ্বলে উঠলো।চোখের পানির বেগ বেড়ে গেলো তার।মানুষ এতটা হিংস্র কীভাবে হয়? ভয়ে শরীর কাপছে।তবুওমনে মনে বেশ কয়েকটা গালি দিলো।মৃন্ময় জানলে হয়তো মনের মধ্যে ঢুকে ওর মন টাকেই কুচিকুচি করে কাটবে।
দরজায় শব্দ হলো।কেউ টোকা দিচ্ছে।সামান্য নড়লো। দরজা খুলবে কি খুলবে না? মৃন্ময় চোখ বন্ধ রাখা অবস্থাতেই বললো,
“দেখো কে”
তরু কথা শুনলো।না শুনলে আবার যদি রেগে যায়। সে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো।
“গায়ে ওড়না কি তোর নানায় দিবো?কারেন্ট বেশি হইছে?”
তরু দাঁড়ালো।ভুলে গিয়েছিল যে ওর গায়ে চিকন ফিতা দেওয়া একটা শর্ট কামিজ জামা। বুকের উপর ভাগ অনেকটাই বোঝা যায় এটা পড়লে।এতক্ষন তাহলে সে এভাবে মৃন্ময়ের সামনে ছিল?
“আমারে কি উঠাবি ওড়না দেয়ার জন্য?”
মৃন্ময়ের রাগ গলা শুনে তরু ধড়ফড়িয়ে বেডসাইট থেকে ওড়না নিয়ে গায়ে জড়ালো।সাথে লম্বা চুলগুলো খোপা করে নিলো।
“মাথায় কাপড় দে”
দিলো তরু।এবার দরজা খুললো।বাইরে একটা লোক দাঁড়িয়ে।তরু বেশ কয়েকবার লোকটাকে মৃন্ময়ের সাথে দেখেছিল। কাছের কেউ হবে হয়তো।
” কেমন আছেন ভাবী?”
তরু জবাব দেওয়ার সাহস দেখালো না। ঘুরে তাকালো মৃন্ময়ের দিকে।লোকটা হাসলো।
মৃন্ময় উঠে এলো দরজায় বরুণকে দেখে।দরজার কাছে এসে দাড়িয়ে তরুর উদ্দেশ্যে বললো,
“ফ্রেশ হতে যা”
বরুণের সাথে চলে গেলো মৃন্ময়।তরু খাটে এসে বসলো। ও যেনো অপেক্ষা করছিল মৃন্ময় কখন বেরোবে।আশেপাশে তাঁকিয়ে কাঙ্ক্ষিত বস্তুটিকে খুজতে শুরু করলো।কিন্তু কোথাও নেই। সে তো মৃন্ময়কে ফোন সাথে নিয়ে যেতে দেখলো না। বিছানার চারপাশে হন্যে হয়ে খুঁজলো।কোথাও নেই।
অনুর কি অবস্থা জানার জন্য মনটা ভীষণ রকমের ছটফট করছে ওর।কোনোদিন তো বোনকে ছাড়া থাকেনি। ফোন না পেয়ে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো তরু।কিভাবে এই নরক থেকে বেরোনো যায় চোখ শুধু সেই রাস্তাই খুঁজছে।পুরো বাড়ি জুড়ে কতগুলো গার্ড।এদের এড়িয়ে পালানো সম্ভব নাকি?
বাগানের দিকে নজর গেলো তরুর।মৃন্ময় ওখানে দাঁড়িয়ে।আশেপাশে বরুণ সহ কয়েকটা কালো পোশাকধারী ব্যক্তি। আরেকটা লোককে দেখা যাচ্ছে।মুখ স্পষ্ট নয়।লোকটা মৃন্ময়ের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছে।কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল হওয়ায় তরু বুঝতে পারছিল না কি হচ্ছে। একসময় লোকটা মাটিতে নেতিয়ে পড়লো।চোখের সামনেই কালো পোশাকধারী লোকগুলো মাটিতে পড়া লোকটাকে নিয়ে চলে গেলো।
তরু আঁতকে উঠল।মন বলছে খারাপ কিছু হলো মাত্রই। এখান থেকে যেমন বাগান স্পষ্ট।তেমনই বাগান থেকেও এই রুমের বেলকনি স্পষ্ট। তরু মুহূর্তেই জায়গা ত্যাগ করলো। মৃন্ময়ের চোখে পড়লে যদি কিছু হয়!সে দ্রুত ওয়াশরুমে চলে গেলো।
“ভাই, তোর বউকে জিগাইলাম ভাবী কেমন আছেন? তোর ডরে কোনো জবাব দিলো না”
মৃন্ময়ের পিঠ চাপড়ে বললো বরুণ।মৃন্ময় বাকা হাসলো। হঠাৎই হাতে থাকা গান টা বরুণের থুতনিতে চেপে ধরলো। চমকালো বরুণ।
“আমি দেই তোকে জবাব?কি বলিস?দিবো?”
“না,না।এরকম জবাব লাগবো না। ছাড় “
মৃন্ময়যে ওই মেয়েকে নিয়ে ওভার পসেসিভ।কয়েকটা বছর কত কাঠখড় পুড়িয়ে খুঁজে বের করেছে। তার এই বন্ধুর দুনিয়াতে রক্তের সম্পর্কের আছে বলতে শুধু চাচা। যাকে বরুণের একটুও পছন্দ না। ছোটো বেলা থেকেই সে মৃন্ময়ের সাথে।কত মেয়ে এসেছে গেছে কারো দিকে চোখ তুলে তাকায়নি পর্যন্ত।আর ওই কমবয়সী মেয়েটার প্রতি…।
“তুই তোর বউয়ের জন্য,আমাকে গুলি করবি?এতদিনের বন্ধুত্ব ভুলে গেলি? আ… আমার জীবনে লাভ লস কিছু নাইরে। বন্ধু তুই বউ পাইয়া আমারে ভুইলা গেলি।”
কান্নার ভান করে বললো বরুণ। মৃন্ময় ওর পিছে একটা লাথি মারলো।
‘ভ্যানিশ হ, নাটক কম কর। তুই জানিস আমি কেমন”
বলেই পকেট থেকে সিগারেট বের করলো।বরুণ পা ঝাড়তে ঝাড়তে দাঁড়ালো।চোখে একটু চাপা বিরক্তি ভাব ফুটালো।
“জানি। খুব ভালোই জানি। তাইতো বলি, তুই বদলেছিস”
মৃন্ময় সিগারেটে আগুন ধরাতে ধরাতে থামলো। এক মুহূর্ত বরুণের দিকে তাকিয়ে রইলো।
“বদলাইনি। যা ছিল, তাই আছে। শুধু একটা জিনিস যোগ হইছে।”
“কি?”
“বউ?”
মুখ কুচকে ফেললো বরুণ। কি পরিবর্তন,কি পরিবর্তন! হঠাৎ মৃন্ময় গম্ভীর হয়ে গেলো।
“খোঁজ পেয়েছিস আর কে কে ছিল?”
বরুণ সাথে সাথেই মুখটাকে সিরিয়াস করে ফেলল।
“এখনো না,এই শালা মুখ খুললে পেতাম। ওকে তো উপরে পাঠিয়ে দিলি”
“খোঁজ নে।সব কটাকে সামনে চাই”
খাবার হাতে রুমে ঢুকলো মৃন্ময়।আশেপাশে কোথাও তরু নেই। ওয়াশরুমে পানির শব্দ হচ্ছে।মাথা গরম হয়ে গেলো ওর। এতক্ষণেও বের হয়নি?
প্লেটটা রেখে ওয়াশরুমের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
“তরু”
একবার, দুবার,তিনবার ডাকলো মৃন্ময়।মেয়েটার কোনো সাড়াশব্দ নেই।কি যেনো মনে হতেই দরজায় সামান্য ধাক্কা দিলো।খুঁজে গেলো দরজাটা।তরু নেই!কল ছাড়া,পানি পরছে।
চলবে…
Share On:
TAGS: ডার্ক সাইড অফ লাভ, দূর্বা এহসান
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৩(প্রথমাংশ + শেষাংশ)
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ২
-
ডার্ক সাইড অফ লাভ গল্পের লিংক
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১৬
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১৫
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৮
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১৭
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১২
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৭
-
ডার্ক সাইড অফ লাভ পর্ব ১