Golpo চোরাবালির পিছুটানে

চোরাবালির পিছুটানে ৩


চোরাবালির_পিছুটানে (০৩)

জেরিন_আক্তার

রাহা নিচু গলায় বলে,

“না, সাইমনকে ভুলে যাইনি। আর তুমি সাইমনের কথা বলছো কেনো?”

রাদিফ বলে,

“সাইমন এখন বাংলাদেশেই রয়েছে। এখন ওকে বলতে হবে। তাছাড়া আর কোনো বিশ্বস্ত কাউকে পাচ্ছি না।”

“ঠিক আছে ভাইয়া!”

“তু্ই এতো চিন্তা করিস না। তু্ই তোর পাসপোর্ট, আর কিছু কাগজ পত্র রেডি করে রাখিস। কালকে সাইমন ওই বাড়ির সামনে যাবে। তু্ই ওকে ওই কাগজগুলো দিবি। এরপরে আমি দেখছি কি করে ভিসা ব্যবস্থা করতে পারি!”

রাহা বলে,

“ভাইয়া হাতে মাত্র কয়েকটা দিন আছে। এর মধ্যে কি ভিসা ব্যবস্থা করতে পারবে! আর বেশি টাকা লাগবে এগুলো পেতে।”

রাদিফ জোর গলায় বলে,

“হুম পারবো। যত টাকাই লাগুক তোকে আর তোর বাচ্চাকে আমি বাঁচাবোই। আর এখন কি করছিস তু্ই?”

“রুমে বসে আছি!”

“আর শোন, এই বিষয় নিয়ে কাউকে কিচ্ছু বলবি না। আমি দেখছি কি করা যায়। শুধু একবার তোকে আমার কাছে যদি আনতে পারি এরপরে রাজকে আমি দেখে নিবো। ওর প্রতিশোধ নেওয়া আমি বের করবো। ও আমার বোনের সাথে এমন করেছে। ওকে আমি ছাড়বো না।”

রাহা খানিকটা ভয় পেয়ে বলে,

“ভাইয়া এতে আমার বাচ্চাটা ঠিক থাকবে তো!”

“হুম তু্ই চিন্তা করিস না। এই কয়েকটা দিন একটু সেভ হয়ে থাকবি। কোথাও বের হবি না। আর কালকে সকালে কাগজগুলো রেডি রাখিস। ওই রাজ, তোর আর তোর বাচ্চার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।”

রাদিফ রাহার সাথে কথা বলে ফোন পাশেই রেখে বসলো। রাজের উপরে এখন খুব রাগ হচ্ছে। ইচ্ছে করছে সামনে পেলে মেরে কুচি কুচি করে দিতে। রাদিফ নিজে থেকে কিচ্ছু বলতে পারছে না কারণ সে মিষ্টিকে অস্বীকার করেছিলো। কিন্তু কেনো অস্বীকার করেছিলো সেটা কেউ জানতে চায়নি। এই একটা কারণে আজ রাদিফ বোনের প্রতি হওয়া অন্যায় দেখেও কিছু বলতে পারছে না।

রাদিফ সাথে সাথে তার ঘনিষ্ট বন্ধু সাইমনকে কল দিলো। সাইমনও জাপানে রাদিফের সাথেই থাকে। কিছুদিন হলো দেশে গিয়েছে। রাদিফ সাইমনের সাথে আলোচনা করলো কি করে ভিসা জোগাড় করা যায়। সাইমন সবশেষে রাদিফকে বলে,

“বন্ধু তু্ই চিন্তা করিস না। এখন স্টুডেন্ট ভিসায় তোর বোন একটু তাড়াতাড়ি যেতে পারবে। তবে টাকা লাগবে যেহেতু কয়েকটা দিনের মধ্যে চাইছিস।”

রাদিফ বলে,

“বন্ধু যত টাকা লাগে লাগুক। এই দশদিনের মধ্যে তোকে সবটা জোগাড় করতেই হবে। আমার বোন একটু সমস্যায় আছে। তাই তোকে এমার্জেন্সি করতে বলছি। আর দেশে বিশ্বস্ত কেউ নেই তু্ই ছাড়া। তোকে কাজটা করে দিতেই হবে।”

“হুম বন্ধু তু্ই চিন্তা করিস না। তু্ই তো আমার ভাইয়ের মতো। আর তু্ই আমার অনেক উপকার করেছিস। সেক্ষেত্রে আমি কিছুই করতে পারিনি। এখন আমি তোর বোনের ভিসাটা জোগাড় করে দিবো তু্ই চিন্তা করিসনা।”

রাদিফের বন্ধু সাইমন সকালে রাহার বাড়ির সামনে আসে। রাহা তার সব দরকারি ডকুমেন্ট গুলো সাইমনকে দিয়ে দেয়।

এই কয়েকদিনে রাহা আর বাড়িতে থেকে বের হয়নি। ফোনও বন্ধ করে রেখেছে। আর ইচ্ছে করেই রাজের সাথে কোনো যোগাযোগ করেনি। আর যোগাযোগও করতে চায়না।


আজ মাসের ত্রিশ তারিখ। বিকেলবেলা রাহা বিছানায় ক্যালেন্ডার হাতে নিয়ে বসে বসে কাঁদছে। কালকে সকালে বা দুপুরে রাজ বাড়িতে চলে আসবে। যদি এসে জানতে চায় বাচ্চাটা রেখেছে কিনা তাহলে সে কি জবাব দিবে।

এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে রাহার ফোন বেজে উঠে। রাহা ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো রাদিফ কল দিয়েছে। রাহা চোখ মুছে কলটা রিসিভ করে বলে,

“ভাইয়া বলো!”

ওপাশে থেকে রাদিফ বলে,

“রাহা তোর ভিসা টিকেট রেডি হয়ে গিয়েছে।”

এই শুনে রাহা খুশি হয়ে অস্থির গলায় বলে,

“ভাইয়া সব রেডি হয়ে গিয়েছে।”

“হুম রেডি করে ফেলেছে সাইমন। কালকে রাত তিনটায় ফ্লাইট। সাইমন অনেক কষ্ট করে এই পর্যন্ত করতে পেরেছে। এছাড়া আর কোনো ফ্লাইট টিকেট বুক করতে পারেনি। তোকে রাতের ফ্লাইটেই আসতে হবে।”

রাহা মাথা নাড়িয়ে বলে,

“সাইমন ভাইয়া এই পর্যন্ত করেছে এই অনেক।”

রাদিফ বলে,

“শোন, তু্ই এখন কিছু জিনিস গুছিয়ে ফেল। আর রাত দেড়টার দিকে সাইমন গাড়ি নিয়ে বাড়ির সামনে যাবে। তু্ই সাইমনের সাথে বের হয়ে যাবি! সাইমন তোকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত পৌঁছে দিবে। আর কোনো প্রমান বা কিচ্ছু রেখে আসবি না। ফোনটা গাড়িতে আসার পথে ফেলে দিয়ে আসবি। আর শুধু রাজের জন্য একটা ছোট্ট চিরকুট রেখে আসবি।”

রাহা প্রশ্ন করে,

“চিরকুটে কি লিখবো ভাইয়া?”

“আমি তোকে টেক্সট করে পাঠাচ্ছি!”

“ঠিক আছে ভাইয়া!”

রাহা রাদিফের সাথে কথা বলে ফোনটা পাশে রেখে দিয়ে তার লেদারটা বের করলো। এরপরে কাভার্ড থেকে প্রয়োজনীয় জামা-কাপড় লেদারে ভরে নিলো। এর সাথে আরও নিত্যপ্রয়োজনীয় দরকারি জিনিসগুলোও রাখলো। যা না নিলে চলে না তাই নিলো।

রাত দশটা। রাহা নিজের রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো তার বাবা-মায়ের রুমে। চলে যাওয়ার আগে বাবা-মায়ের সাথে শেষ দেখাটা করতে চায়। রাহা আস্তে করে দরজা খুলে তার তার বাবা-মায়ের রুমে ঢুকলো।

রুবেল চৌধুরী বা রুমানা চৌধুরী বসে ছিলেন রুমে। রুবেল চৌধুরী মেয়েকে দেখে বলেন,

“রাহা কিছু বলবে! আর তোমাকে এমন লাগছে কেনো?”

রাহার এখন তার বাবাকে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। বলতে ইচ্ছে করছে সব। রাহা ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে তার বাবা-মায়ের মাঝখানে বসলো। কোনো কথা বলছে না শুধু দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে।

কিছুক্ষণ পরে রাহা তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে,

“আব্বু!”

“হুম। কি হয়েছে বলো! শরীর খারাপ লাগছে?”

“না আব্বু আমার শরীর ঠিকই আছে।”

“তাহলে এমন করে জড়িয়ে ধরলে যে?”

“আব্বু, ঘুম আসছিলো না। মনে হচ্ছিলো একবার তোমার সাথে আর আম্মুর সাথে কথা বলতে পারলে ভালো লাগবে।”

রুমানা চৌধুরী রাহার মাথায় হাত রেখে বলেন,

“তোর কি হয়েছে রে? তোকে কয়েকটা দিন ধরে কেমন একটা স্বাভাবিক লাগছে না। কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করিস নাকি?”

রাহা হাসার চেষ্টা করে বলে,

“না আম্মু!”

এর কিছুক্ষণ পরে রাহা মাথা তুলে তার বাবার দিকে তাকিয়ে বলে,

“বাবা আমি যদি কোনো বড় ভুল করি তাহলে কি তুমি আমায় আদর করবে? এভাবে আগলে রাখবে আমায়?”

রুবেল চৌধুরী কথাটা শুনে কিছুক্ষণের জন্য চুপ হয়ে গেলেন। রাহার কথা শুনে কেমন যেনো তার মায়া হচ্ছে। মেয়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলেন,

“আমি আর তোমার আম্মু যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিনই আমরা তোমাকে আগলে রাখবো, আদরে রাখবো। আর তুমি কোনো ভুল করলেও আমাদের সন্তান হয়ে থাকবে আর ভুল না করলেও আমাদের সন্তান হয়ে থাকবে।”

রুবেল চৌধুরী মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন,

“জানো তোমার ভাইয়ার জন্য এখনও আমাদের কষ্ট হয়। কি একটা ভুলের জন্য নিজেই নিজেকে আমাদের থেকে দূরে রেখেছে। ফোনে কথা বলে খুব কম এতে আমাদের মন ভরে না।”

রাহা কেঁদে উঠলো। তার মা রুবেল চৌধুরীকে বলেন,

“তুমিও না মেয়েটা ভাইয়ের কথা শুনলেই মন খারাপ করে আর তুমি সেই বোনের কাছেই ভাইয়ের কথা বলো।”

এই বলে তিনি রাহাকে বলেন,

“থাক মা, কাঁদিস না। দেখবি তোর ভাই একদিন ঠিকই ফিরে আসবে। এখন রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়! অনেক রাত হয়েছে।”

রাহা বিছানায় থেকে উঠে দাড়ালো। চলে যাওয়ার আগে আবারও তার বাবা-মায়ের মুখপানে তাকালো। হয়তো এই দেখাই শেষ দেখা। আবার দেখা হবে না অনেকদিন। হয়তো বা এই জন্মে।

রাহা চলে যেতে যেতে মনে মনে বললো,, আব্বু-আম্মু আমি তোমাদের কষ্ট দিতে চাইনি। কিন্তু কি করবো! আমাকে তো এই সন্তানটা বাঁচাতে হবে। আমি ভাইয়ার কাছে পৌঁছেই তোমাদের জানাবো। এই পর্যন্ত তোমরা একটু কষ্ট করে থেকো।

রাহা এই বলতে বলতে কাঁদতে কাঁদতে রুমে এলো। রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় বসে কাঁদতে লাগলো। এরপরে উঠে রিডিং টেবিলে গিয়ে বসে রাদিফের দেওয়া টেক্সটটা একটা ছোট্ট চিরকুটে লিখে সেটা নিয়ে বের হয়ে গেলো রুম থেকে। এরপরে রাজের রুমে এসে রাজের বালিশের নিচে আলগোছে চিরকুটটা রেখে রুম থেকে বেরিয়ে চলে এলো নিজের রুমে।


রাত তখন দেড়টা। এখন কেউই জেগে নেই। রাহা আলগোছে রুম থেকে বেরোলো। এরপরে চলে গেলো বাড়ির বাহিরে। গেটের সামনে দুজন দারোয়ান বসা ছিলো বলে বাড়ির পেছনের দিক দিয়ে বের হলো। সাইমনকে দেখতে পেয়ে কিছুটা হাফ ছাড়লো।

সাইমন রাহার হাতে থেকে লেদারটা নিয়ে গাড়িতে তুলে রাহাকে বলে,

“তুমি গাড়িতে উঠে বসো!”

রাহা যেই ব্যাক সিটের দরজা খুলতে যাবে ঠিক তখন সাইমন বলে,

“রাহা সামনে বসো!”

রাহা সম্মতি জানিয়ে সামনের সিটে বসলো। এরপরে সাইমন গাড়িতে উঠে বসলো। এর মাঝে কয়েকবার রাদিফ ফোন দিয়েছিলো। দুজনেই রাদিফের সাথে কথা বলেছে।

সাইমন রাহাকে নিয়ে এয়ারপোর্টে চলে এলো। গাড়িতে থেকে নেমে রাহার হাতে পাসপোর্ট, ভিসা আর টিকিট দিয়ে বলে,

“রাহা এইযে তোমার পাসপোর্ট, ভিসা আর টিকিট। তুমি কিন্তু স্টুডেন্ট ভিসায় যাচ্ছো। আর সব কিছু ওকে করা।”

রাহা কি বলে ধন্যবাদ দিবে তা মুখে আসছে না। সাইমন এইভাবে চেষ্টা না করলে হয়তো রাহা আজ এয়ারপোর্টে এসে দাঁড়াতে পারতো না। রাহা চোখে জল নিয়ে বলে,

“ভাইয়া আপনাকে ধন্যবাদ জানালে হয়তো কম হয়ে যাবে। আপনি না থাকলে আমি যেতেই পারতাম না।”

সাইমন হেসে বলে,

“ওয়েলকাম! দেখেশুনে যেও! আর ওইখানে রাদিফ তোমার অপেক্ষায় থাকবে।”

“ঠিক আছে ভাইয়া। আপনি ভালো থাকবেন!”

রাহা পাসপোর্ট, ভিসা, টিকিট দেখিয়ে ভিতরে চলে গেলো। সাইমন দাঁড়িয়ে রইলো। যতদূর পর্যন্ত রাহাকে দেখা যায় ততক্ষণ পর্যন্ত দেখলো।


সকাল এগারোটা বাজতেই সবার চোখে পড়লো রাহা এখনও রুম থেকে বের হয়নি এমনকি কারো সামনে আসেনি। রাশেদ চৌধুরী আর রুবেল চৌধুরী অফিসে চলে গিয়েছে। বাড়িতে রয়েছে শুধু সায়মা চৌধুরী ও রুমানা চৌধুরী। তারা পুরো বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজলেন কিন্তু কোথাও রাহাকে পেলেন না। রাহার রুমে এসেও পেলেন না অথচ রুমটা সুন্দর করে পরিপাটি করে রাখা।

ঘন্টা খানিক অপেক্ষা করেও যখন রাহার কোনো খোঁজ পাওয়া গেলো না তখন সায়মা চৌধুরী ও রুমানা চৌধুরী অস্থির হয়ে পড়লেন। সায়মা চৌধুরী গেটের দারোয়ানের কাছে গিয়েও বলেন তারা রাহাকে দেখেছে নাকি? কিন্তু তারা দেখেনি। এই শুনে সায়মা চৌধুরী কিছুক্ষণ থমকে দাড়িয়ে রইলেন। এরপরে বাড়ির ভিতরে এলেন রুমানা চৌধুরীর কাছে। রুমানা চৌধুরী কেঁদেই চলেছেন।

এর আধঘন্টা পরেই রুবেল চৌধুরী আর রাশেদ চৌধুরী বাড়িতে এলেন। রুবেল চৌধুরী রুমানা চৌধুরীকে বলেন,

“রাহার কোনো খোঁজ পেয়েছো?”

রুমানা চৌধুরী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,

“না আমি ওর কোনো খোঁজ পাইনি। পুরো বাড়ি খুঁজেছি। বাহিরেও খুঁজেছি, ওর সব বন্ধু-বান্ধবীকে কল দিয়েছি কিন্তু কোথাও নেই মেয়েটা।”

এই শুনে রুবেল চৌধুরী রাগ নিয়ে বলেন,

“জ্বলজ্যান্ত একটা মানুষ বাড়িতে থেকে উধাও হয়ে গেলো এইটা তুমি বুঝতে পারোনি। কি করো বাড়িতে যে মেয়েটাকে দেখলে না।”

রাশেদ চৌধুরী তৎক্ষণাৎ পুলিশকে কল দিয়ে সবটা জানালেন, সাথে রাহার ছবিও পাঠিয়ে দিলেন। এরপরে তিনি রুবেল চৌধুরীকে নিয়ে থানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন।


বিকেল বেলা রাজ বাড়ির উদ্দেশ্যে ফিরছে। সাথে তার বোন মিষ্টিও আছে। মিষ্টি হেসে বলে,

“ভাইয়া, তাহলে আজ রাহার কথাটা বাড়িতে জানাবে। রাহা খুব খুশি হবে। এই কয়েকটা দিনে হয়তো মেয়েটা খুব কষ্ট পেয়েছে।”

রাজ শুকনো মুখে বলে,

“হুম। পেয়েছে হয়তো। আর ও যা জেদি, আমার মনে হচ্ছে ও বাড়িতে জানিয়ে দিয়েছে। নাহলে তো পরিবেশ ঠান্ডা থাকার কথা না।”

মিষ্টি চিন্তিত স্বরে বলে,

“কিন্তু ভাইয়া তুমি যে বললে ও নাকি হসপিটালে গিয়েছিলো। তাহলে ও কি বাচ্চাটা নষ্ট করে ফেলেছে।”

রাজ বলে,

“সেদিন আমার বন্ধুরা ওকে মিথ্যে বলে ভুলিয়ে ভালিয়ে ওকে বাড়িতে দিয়ে গিয়েছিলো। এরপরে আর ও বাড়িতে থেকে বের হয়নি। আমি দারোয়ানের থেকে খোঁজ নিয়েছি। আর ওর প্রাণ গেলেও এই বাচ্চা ও নষ্ট করবে না।”

মিষ্টি বলে,

“ভাইয়া তুমি ওকে শুধু শুধু এতো বড় কষ্টে রেখে এসেছিলে। বাড়িতে বলে দিয়ে আসতে।”

রাজ হালকা হেসে বলে,

“ওকে বোঝাতে চেয়েছি ওর ভাই কি ভুলটা করেছে তোর সাথে। আর এইটা হয়তো রাদিফ জেনে গিয়েছে। এখন বুঝবে নিজের বোনের সাথে এমন হওয়ার যন্ত্রনা কত খানি। তবে আজকে বাড়িতে গিয়ে সবাইকে সবটা জানিয়ে দিবো। রাহা দেখবি অনেক খুশি হয়েছে। আর বাড়ির সবাইও খুশি না হয়ে পারবে না।”

রাজ মিষ্টিকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকলো। বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই বুঝলো বাড়িটা কেমন থম মেরে আছে। রাজ এগিয়ে যেতেই সায়মা চৌধুরী অস্থির কণ্ঠে বলেন,

“রাজ তোকে কতবার আমরা কল করেছি তু্ই কল ধরিসনি কেনো?”

রাজ স্বাভাবিক ভাবে বলে,

“আম্মু ফোনটা সকাল থেকে চার্জ করতে পারিনি তাই বন্ধ হয়ে আছে।”

এই বলে রাজ সাথে সাথে হাই তুলে রাহাকে ডাকে,

“রাহা…. এই রাহা….কই তু্ই?…. নিচে আয়!…. রাহা দেখ আমি ফিরে এসেছি!… রাহা!”

পাশে থেকে রুমানা চৌধুরী দুকরে কেঁদে বলে উঠেন,

“রাহা কে আর ডাকলেও ও আসবে না।”

রাজ কপালে ভাজ ফেলে এগিয়ে গেলো তার ছোট আম্মুর দিকে।

“ছোট আম্মু কি বলছো রাহা ডাকলেও শুনবে না ও কোথায় গিয়েছে?”

রুমানা চৌধুরী ভাঙা গলায় বলেন,

“রাহাকে সকাল থেকে খুঁজে পাচ্ছি না। এখন সন্ধ্যা হয়ে আসছে। মেয়েটা কোথায় গিয়েছে কিচ্ছু বলে যায়নি।”

চলবে….

ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কেউ বাজে মন্তব্য করবেন না। আর এই পার্টটা ভালো লাগলে রেসপন্স করবেন!!!!!!

[হেশট্যাগ ব্যবহার ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ]

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply