নিষিদ্ধ_চাহনা
পর্ব_০৩
লেখিকাসারাচৌধুরী
🚫অনুমতি ব্যাতীত কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ🚫
ভালোবাসা শুধু চার অক্ষরের শব্দ নয়..এতে মিশে থাকে শত শত অনুভূতির জীবনের রাজ্য।সব সময় এই ভালো বাসা নামক অনুভুতি প্রকাশ করা যায় না।বা প্রকাশ করতে গেলেও বিবেক আ বাধা দেয়।।দুই মেরুর দুই জীব কি এক হতে পারবে।। ভালোবাসা সৃষ্টি হবে তাদের হৃদয়ে।।এক জনের মনে যখন ভালোবাসার ফুল ফুটে উঠেছে প্রিয় মানুষকে নিজের করে নেওয়ার তাড়নায় অপর পাশের মানুষ টাও ঠিক তার থেকে দ্বিগুন ঘৃনা নিয়ে বেচে আছে।।
কিছু মানুষের কাছে ভালোবাসা নিতান্তই তুচ্ছ।।আবার কিছু মানুষের কাছে ভালোবাসা মানে নতুন ভাবে বেচে থাকার অনুপ্রেরনা..ভালোবাসা আসক্তি থেকে কারো কারো কাছে ভয়ংকার রুপ নেই..কেও বা আবার ভালোবাসার অভিনয় করে নিজের পুরোনো শত্রুতার কারনে রিভেঞ্জ নেয়।।এসব বিদেশি কালচারে সাধারন বিষয় তবে বাঙালীদের কাছে ভয়ানক বেপার।।
এতো এতো কথার মাঝে আরো একটা অনুভুতি আছে।।সেটা এক প্রকার এক তরফা ভালোবাসা বা অনসাইড লাভ।।সবার মনে একটা ভালো থাকার অনুভুতি থাকে।।দেখতে দেখতে কেটে গেছে তিনটা বছর।বদলে গেছে যাবতীয় সময়ের সব।।চৌধুরী বাড়ির পরিস্থিতিও বদলে গেছে।।যে ইলিয়াস চৌধুরীর কথায় পুরো চৌধুরী বাড়ির মানুষ কাপতো সেই ইলিয়াস চৌধুরী আজ বিছানা সজ্জায়।। আগের মতো নেই চৌধুরী বাড়ির সাজ সজ্জা।।বাড়িটা কেমন মন মরা হয়ে গেছে।।।প্রায় দু বছর আগে ইশান বউ নিয়ে কোম্পানির ৫০% শেয়ার নিয়ে আলাদা হয়ে গেছে…এদিকে এতোদিন সাদির সাথে কারোর জোগাজোগ ছিলো না হটাৎ এক সপ্তাহ আগে যোগাযোগ হয়।।সাদি নিজের বাবার এমন করুন কথা শুনে সাথে সাথে দুদিনের মধ্যে কানাডার ভিসা রেডি করে দেয়..সেই ছোট্ট পিহু এখন আঠারো বছরের যুবতি।। অষ্টাদশি হৃদয়ে প্রথম প্রেমের ছোয়া লেগেছে কেবল।।
দুবছর আগে যখন ইশান বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছিলো তখন ইলিয়াস চৌধুরী স্ট্রোক করেন কিন্তু ইশান একবার পিছু ফিরে তাকায় নি।।।নিষ্ঠুর এর মতো বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলো পিছনে রেখে গিয়েছিলো অসুস্থ বাবা অসহায় মা আর ছোট পিহু কে।।।ইলিয়াস চৌধুরীর সেদিন থেকে দুরদীন শুরু হয়..কোম্পানি লসে ডুবতে থাকে..সে সাদিকে কোনো শেয়ার দেয় নি কোম্পানির।।যদিও চৌধুরী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিস এর একটি শাখা কানাডাতেও আছে।।ভাগ্য ক্রমে সেই ছেলে আজ ইলিয়াস চৌধুরী সুস্থ করার জন্য হাত বাড়িয়েছে।।
ভালোবাসা হুট করে বসন্ত বাতাসের মতো আসে।। যা হৃদয়ে দোলা লেগে যায়…কলেজ ক্যাম্পাস এর সরু রাস্তা দিয়ে হেটে চলেছে পিহু আর জেরিন।।জেরিন পিহুর বেস্ট ফ্রেন্ড কলেজ থেকে পরিচয় তাদের..পিহুর মন খারাপ দেখে জেরিন বলে উঠে…
-কিরে পিহু রানীর আজ মন খারাপ কেন কি হয়েছে…?
-বাবাই খুব অসুস্থ কানাডা নিয়ে যাবে পরশু..!
-ভালো তো তাতে তোর মন খারাপ কিসে…?
-আমি যেতে চাই না।।
-কেন…?
-সেখানে তো..আর বললো না পিহুর গলায় কতগা আটকে গেলো তিনবছর আগের সেই রাতের কথা মনে পড়লো মুহুর্তে চোখে পানি এসে ভিড়লো।।
-কিরে কাদিস কেন দোস্ত।।তোর চোখে পানি মানাই না..!
-আমার না মামনি বলেছে আজ টিসি নিয়ে যেতে প্রিন্সিপাল কে ফোনে বলে দিয়েছে..!
-মানে টিসি কি করবি..?
-বাবাই সুস্থ হতে নাকি চার-পাচ মাস সময় লাগবে বাড়িতে একা তো আর থাকতে পারবো না তাই নিয়ে যাবে।।ওর ওই দেশের কলেজে ভর্তি করাবে..!
-ওখানে না তোর ভাই আছে শুনছিলাম..?
-হুম.. পিহু ছোট করে উত্তর দেই..!
-আরে দোস্ত কয়েক মাসের বেপার চিন্তা নিস না মন খারাপ করে লাভ নেই তুই বল টিপস কখন দিবি।।
-কিসের টিপস..?
-এইজে তুই কানাডা গিয়ে ঘুরবি ওইখানে নতুন কলেজ ফ্রেন্ডস সব পাবি তার।।
-ওহ..!
-দোস্ত মন খারাপ করিস না প্লিজ..(জেরিন মন মরা হয়ে বলে তার ও খারাপ লাগছে পিহু চলে গেলে সে একা হয়ে যাবে।। তবে সে জানে পিহুর বাবাই সুস্থ হওয়া জরুরি পিহুর বাবাই এর জন্য পিহু খুব কাদে..তাই জেরিন নিজেকে শান্ত রেখে বলে উঠে…
-পিহু রানী এতো মন খারাপ করিস না তো।।
পিহু এবার হুট করে জেরিন কে জড়িয়ে ধরে কলেজ ক্যাম্পাসের গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে।।পিহু একটু বেশি আবেগি তবে কস্ট লুকাতে উস্তাদ।।জেরিন কিছুটা পিছিয়ে যায় পিহুকে জড়িয়ে রাখে পিহুর মাথায় হাত রাখে পিহুর পরনে কালো বোরকা আর হিজাব…পিহু কাদতে কাদতে বলে উঠে আমি তোকে আর নাবিল ভাইকে ছাড়া থাকতে পারবো না দোস্ত আমার দোম বন্ধ হয়ে যাবে…জেরিন পিহুকে একটু হাসানোর জন্য বলে ওহ তাইলে এই বেপার পুহু রানী নাবিল্লা রে মিচ করছে আমাকে না।।পিহু এবার মুখ উঠিয়ে মুহূর্তেই রাগী ভাব নিয়ে বলে আমি তোর সাথে মজা করছি।। জেরিন চোখ ছোট ছোট করে বলে পিহু তুই রাগলেও কিউট লাগে ওই জন্য ক্রাশ বয় নাবিল্লা তোর প্রেমে হাবুডুবু খাই।।পিহু এবার রেগে নিজের হাতে থাকা ছোট ব্যাগটা জেরিন এর দিকে ছুড়ে দিয়ে হাটা শুরু করে।।জেরিন জোরে জোরে হাসতে শুরু করে।। সে জানে পিহুকে আর একটু ইমোশনাল রাখলে মেয়েটা সেন্স হারাবে।।একটা বাজে অভভাস পিহুর।।তাই তো জেরিন টপিক চেঞ্জ করে পিহুকে একটু রাগিয়ে দিলো।।সে জানে পিহুর রাগ তার উপর পাচ মিনিটের বেশি কাজ করবে না তাই সে পিহুকে প্রিন্সিপাল রুমের দিকে যেতে দেখে সেও পিহুকে ডাকতে ডাকতে তার পিছু নিলো।।
আতিয়া বেগম জরুরি সব জিনিস এক এক করে গুছাচ্ছেন।।ইলিয়াস চৌধুরীর এতোদিন সুকিৎসার অভাবে কথা বলা অফ হয়ে গেছে শুধু তাকিয়ে থাকে এটুকুই ডাক্তার বলেছে বিদেশ নিয়ে যেতে ভালো কোনো ডাক্তার দেখাতে।।আতিয়া বেগম নিজেদের জন্য দুটো ল্যাগেজ গুছিয়ে জরুরি ডাক্তারি রিপোর্ট সব ফাইলে পুরে রাখলেন তার পর ইলিয়াস চৌধুরীর মাথার কাছে টুল নিয়ে বসলেন..ইলিয়াস চৌধুরী সাদের সিলিং এর দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে চোখে মায়া।।আতিয়া বেগম তার হাত ইলিয়াস চৌধুরীর হাতের উপর রাখলেন তারপর ডাকলেন শুনছো…ইলিয়াস চৌধুরী চোখ টেরা করে তাকালেন আতিয়া বেগম মাথা কাত করে দিল্রন তারপর আতিহা বেগম ইলিয়াস চৌধুরী হাত ধরে উচু করে একটা চুমু খেলেন তারপর বলে উঠলেন….
আমরা মেয়েটাকে আবারো বিপদের কাছে নিয়ে যাচ্ছি না জানি এবার কপালে কি আছে।।মেয়েটা মোটেই যেতে রাজি না।। সেদিন পর থেকে সেই ঘটনা মনে করে মেয়েটা খুব কাদে।।আমাদের ছেলেটা ভুল করেছিলো।।এখোনো কি আগের মতো রাগচটা।।গম্ভীর।। একালসেড়ে আছে নাকি বদলে গেছে।।ওখানে যাওয়ার মেয়েটার সাথে খারাপ আচরন করবে না তো..আবার কি ভেবে হেসে বললেন যদি খারাপ আচরন করতো তাহলে নিজে থেকে পাসপোর্ট ভিসা ঠিক করে দিতো না।।ইলিয়াস চৌধুরীর চোখের কার্নিস বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।।আতিয়া বেগম সুনিপুন ভাবে চোখের পানি মুছে দিলেন ঠিক তখনই কলিং বেল বেজে উঠে আতিয়া বেগম ইলিয়াস চৌধুরীর পাশ থেকে উঠে শাড়ির আচল মাথায় টেনে দরজা খুলে দিলো।।দরজা খুলতে অবাক চোখে সামনে তাকালো…….
চলবে……….
-(নতুন এক ডাক্তার+রোমান্টিক+রিভেঞ্জ রিলেটেড গল্প নিয়ে চলে আসলাম..বিদেশি প্লট নিয়ে লেখা প্রথম গল্প ভুল ক্রুটি মাফ করবেন আজকের পর্ব কেমন হয়েছে বলে জাও আশা করি ভালো লাগবে)-
Share On:
TAGS: নিষিদ্ধ চাহনা, সারা চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৪
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৩
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৪
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ২১
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৬
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৮
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১৩
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৩