নিষিদ্ধ_চাহনা
পর্ব_১০
লেখিকাসারাচৌধুরী
🚫অনুমতি বাদে কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ🚫
পিহু চিৎকার করে জ্ঞান হারিয়ে সাদির বুকে ঢলে পড়লো। সাদিকে ভড়কে গেলো তবে মুখোবয়ে তা প্রকাশ করলো না এক হাত দিয়ে জড়িয়ে নিলো নেতিয়ে জাওয়া পিহুকে। লোকটিও ভয় পেয়ে গেলো কিছু জিজ্ঞাসা করতে যেতেই সাদি হাতের ইশারায় থামিয়ে দিলো।বেশকিছুক্ষন লোকটির সাথে কথা বলে সাদি বাই বলে হ্যান্ডশেক করে বেরিয়ে আসলো।লোকটি চলে যেতেই সাদি জড়িয়ে রাখা পিহুর দিকে তাকিয়ে স্মীত হেসে কোলে তুলে নিলো পিহুকে।তারপর হাটা শুরু করলো নিজের গাড়ির দিকে।,গাড়ির দরজা খুলে পিহুকে ব্যাক ছিটে সুইয়ে দিয়ে নিজে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসলো।
সাদি ড্রাইভিং সিটে বসে ভিউ মিররে ঘুমন্ত পিহুর দিকে একপলক তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিয়ে এখাত দিয়ে নিজের সেট করা চুল গুলোর উপর হাত বোলালো তারপর কপালে আঙুল ঘষতে ঘষতে বিড় বিড় করে বলে উঠলো..
-“এতো হালকা কেনো,, খাই না নাকি..?
সাদি গাড়ির স্ট্রিয়ারিং ঘুরিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করলো উদ্দেশ্য বাড়ি।আজ পিহুকে এখানে নিয়ে আসার দুটি কারন ছিলো তার..প্রথমত পিহু তাকে ভুল বুজে ঘৃনা করে এটা সে বুজতে পারছে এতে নিজের প্রতি নিজেই লজ্জিত,,যেহেতু সাদিও পিহুদের সাথে দেশে ফিরে যাবে।এখানে পিহুকে কোথাও ঘোরানো হয়নি সাথে পিহুকে নিয়ে শপিং করার কথা বলেছিলো আতিয়া বেগম সেজন্যই মুলত পিহুকে নিয়ে সে বেরিয়েছিলো আরো একটা কারন আছে যা আপাতত তার মনের মধ্যেই ধামাচাপা রয়েছে।
সাদির গাড়ি চলছে যাক যমক রাস্তা দিয়ে আশে পাশের বিশাল বিশাল বিল্ডিং গুলো ভিন্ন ভিন্ন রঙের আলোয় আলোকিত।রাস্তার পাশে ফুটপতে ব্যাস্ত শহরের ব্যাস্ত মানুষ।সবার গায়েই শীতের পোশাক পরিধান করা।কারোর পা থেমে নেই।বার গুলোর বাইরে ফাকা ভিতরে মিউজিক লাইট চলছে।প্রায় দেড় ঘন্টা পর সাদি এসে পৌছালো নিজের ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে, গাড়ি পার্কিং করে পিহুকে কোলে নিয়ে দরজা খুলে সোজা সিড়ি বেয়ে পিহুকে নিয়ে উপরে উঠে গেলো।
পিহুর রুমে যেতে গিয়েও ফিরে আসলো নিজের রুমে ঢুকে পড়লো,পিহুকে সযত্নে নরম বিছানায় সুইয়ে দিয়ে বেশ খানিক্ষন তাকিয়ে থেকে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।
নাবিল এর সাথে জেরিনের বড় আকারে একটা দন্দ লেগেছে যদিও জেরিন নিজের দোষ শিকার করেছে তবুও নাবিল প্রচন্ড রেগে আছে জেরিনের উপর, জেরিন গলা ঝেরে মিনমিনিয়ে বলে উঠলো…
-“বিশ্বাস কর ভাইয়া আমি দিতে চাইনি ইফা আমার পিছনে আঠার মতো লেগে ছিলো বিরক্ত হয়ে দিয়েছি তোর নাম্বার।
নাবিল এর মাথা গরম রাগ আকাশ ছোয়া নাবিল রেগে কঠিন কন্ঠে বলে উঠে..
-“আসলে স্টুপিড তুই,,কি করেছে যানিস ও,, আমার আব্বুর কাছে গিয়ে বলেছে আমি নাকি ওর সাথে ফি*জিকাল রিলেশনে ছিলাম,, আমার আব্বু বিশ্বাস না করলে কেদে কুটে ভাসিয়েছে,,তারপর আরো বলেছে যেই ও বিয়ে করতে চেয়েছে সেই নাকি আমি ওকে ছেড়ে দিয়েছি।।ও ভালো স্টুডেন্ট বলে আমার আম্মু ওর কথা বিশ্বাস করে ফেলেছিলো।একটা মেয়ে কত মটা নির্লজ্জ বেহায়া হলে একদিনের নাম্বার নিয়ে পরের দিন এমন কাজ করে,, তুই জানিস কত কষ্ট করে সামলিয়েছি সব,,যেই ওকে মেডিকেল করতে বললাম তখন মেয়ে রাজি হলো না।।
কথা গুলো বলেই রাগে কাঠের দরজায় জোরে পাঞ্চ মারে নাবিল।জেরিন ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে,, আসলে কাল রাতে ইফা তাকে কল দিয়েছিলো নাবিল তাকে ব্লক কেন দিয়েছে শুনতে তখন জেরিন ইচ্ছা মতো অপমান করে বলে দেয় সাহস থাকলে নাবিল ভাইকে বিয়ে করে বউ হয়ে দেখাও।।আর ইফা এটার সুত্র ধরেই এমন বাজে একটা পরিকল্পনা করেছিলো। জেরিন নিচু স্বরে নাবিল কে বলে….
-আমি সরি ভাইয়া আমার জন্য এতো কিছু হয়ে গেলো..?
-আর ইউ ম্যাড তুই জানিস এতে আমার বা আমার আব্বুর মান সম্মানে কতটুকু আঘাত হানতো।
-সরি ভাইয়া,,বাট ইফা কই..?
-ওর ভাই এসে নিয়ে গেছে মাফ চেয়ে আসলে ও তো নতুন স্টুডেন্ট তার উপর ভালো স্টুডেন্ট তাই ওকে দেশের বাইরে পড়াবে বলে চিন্তা নিয়েছে,,আর ও এমন না শুধু তুই ওকে অপমান করছিলি বলে এমন জঘন্য কাজ করেছে।
-আমি বুজতে পারিনি ভাইয়া আমি ওরে অনেক বার বলেছি পিহু আর তোমার কথা ওই মেয়ে বিশ্বাস করতো না আমি কি করবো তাই তো রাগে অপমান করেছি ওরে।
-আচ্ছা যাই হোক বাদ দে পিহুর কোনো খবর জানিস তুই..?
-না ভাইয়া তবে আন্টির সাথে কথা হয়েছে কাল রাতে ফোন দিয়েছিলাম।
-কি বলছে..?
-আন্টি হসপিটালে ছিলো আঙ্কেলের অপারেশন আজ,, মানে এখন তো সেখানে রাত। আর অপারেশন হয়ে গেলে সপ্তাহ খানেক পর দেশে ফিরে আসবে।।
-ওহহহহ।
-কি হলো..?
-মেয়েটাকে আজ কয়েকদিন দেখা হয়নি কন্ঠস্বর ও শোনা হয়নি আচ্ছা চল তোরে বাসাই পৌছে দেই..!
-না ভাইয়া আমি যেতে পারবো।
-আরে চল।।
নাবিল জেরিন কে নিয়ে নিজের বাইকের কাছে এসে উঠে বসে,জেরিন ও নাবিলের পিছনে উঠে বসে,, নাবিল বাইক স্টার্ট দেই কলেজ ক্যাপ্মাস থেকে বাইক বেরিয়ে রোদজ্জল চকচকে জ্যামে ভরা রাস্তায় চলতে থাকলো।।
রাত দুটো বিশ,, হসপিটালের কেবিন এ বসে আছে আতিয়া বেগম,,সাদি দেখে মাত্র চলে গেলো,,অপারেশন সাক্সেসফুল ভাবে হয়েছে,ইলিয়াস চৌধুরীর জ্ঞান ফিরেছে তবে অক্সিজেন চলছে।প্রায় তিন ঘন্টা আগে তাকে কেবিনে শিফ্ট করা হয়েছে,,ডাক্তার বলেছে রোগীর পরিবার চাইলে কিছুদিন পর রোগী শারীরিক উন্নতি দেখার পর রোগী কে দেশে নিয়ে যেতে পারে তবে দু মাস পর পর এসে চেকাপ করতে হবে।আতিয়া বেগমের মন উতফুল্ল তবে পিহুর কাছে মন পড়ে আছে।।
সাদি ওয়াশরুম থেকে বেরুতেই বেড সাইট টেবিল এ থাকা নিজের লেটেস্ট আই ফোন টাকে ভাইব্রেট হতে দেখে কপাল কুচকালো,,সাদি ফোনটা হাতে নিতেই ফাহাদের নামটা ভেসে উঠলো ❝বিগ কাও❞ লেখাটা,,সাদি কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ফাহাদ বলে উঠলো…
-“সাদি, ইয়োর ফাদার’স অপারেশন উইল বি ফিনিশড ইন আ লিটল হোয়াইল। ইউ আর রিকোয়েস্টেড টু কাম হিয়ার টু হসপিটাল।
-“ওকে আই এম কামিং!
সাদি পিহুর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে নিজের রুমের সিসি কেমেরা টা পিহুর দিকে করে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো,, হসপিটালে তার এখন খুব প্রয়োজন।হসপিটালে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষন পর ইলিয়াস চৌধুরী কে অপারেশন থিয়েটর থেকে বের করা হলো সাদি সস্তির নিশ্বাস ফেলে আতিয়া বেগম কে নিয়ে কেবিনে গেলো সেখানে ইলিয়াস চৌধুরীর পাশে তাকে বসিয়ে ডাক্তার দের সাথে অনেক্ষন কথা বলে কেবিনে আসলো হাতে একটা খাবারের প্যাকেট।
সাদিয়া আতিয়া বেগমের হাতে খাবারের প্যাকেট দিয়ে খেয়ে নিতে বলে,, আতিয়া বেগম সাদির খাওয়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে কিছু না বলে আতিয়া বেগম কে খেয়ে নিতে বলে।।ইলিয়াস চৌধুরী জ্ঞান আসলে সাদি চেকাপ করে আতিয়া বেগমের থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসে।
সাদি এক হাত দিয়ে ড্রাইভ করছে আর এক হাত দিয়ে আঙুল ঘষছে কপালে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে তার,,সাদি কপাল ঘষতে ঘষতে ভাবতে লাগলো…..
চলবে…….
-(একটু গড়মিল হয়ে গেছে এই পর্ব টা।আজকের পর্ব টা ছোট ভালো রেসপন্স করলে কাল থেকে বড় করে পর্ব দিবো।আচ্ছা নায়ক হিসাবে কাকে চাও নাবিল নাকি সাদি কমেন্ট এ বলে জাও,,নতুন এক ডাক্তার + রিভেঞ্জ+ রোমান্টিক গল্প,, আজকের পর্ব কেমন হয়েছে বলে জাও আশা করি ভালো লাগবশেয়ার
Share On:
TAGS: নিষিদ্ধ চাহনা, সারা চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ২৪
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৪
-
নিষিদ্ধ চাহনা গল্পের লিংক
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১২
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৪
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৯(ক+খ)
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৯
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৬
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৮
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৭