সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব ১৩০
সামিহা বেগম ও নওরি আফরোজ ডাইনিং রুমে বসে কথা বলছেন ।সামিয়া বেগম বললেন ,”ভাবি ওরা কি আজকেউ আসবে না ?শুনলাম ভাই নাকি ফোন করে বলেছে আজকে আসতে পারবেনা ।আগামীকাল আসবে ।তাহলে কি নূর আজকেও থাকবে সাদাফের বাসায়?”
নরিন আফরোজ বললেন ,”হয়তো যেহেতু তারা আগামীকাল সন্ধ্যার পর আসবে সাদাফ হয়তো একবারে আগামীকালকেই নূরকে দিয়ে যাবে।আর আমি কি ওদের স্বামী স্ত্রী মাঝে কথা বলতে পারি বল?”
নওরিন আফরোজ সামিহা বেগমের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ করেই বললেন ,”আমি সাদাফের জন্য যেমন মেয়ে চেয়েছিলাম নূর একদম সেরকম ।তুই তো জানিস আগে থেকেই আমি সাদাফের জন্য নূরের কথা ভাবছিলাম ।কিন্তু ওদের মধ্যে যে কোন সম্পর্ক আছে তা আমি জানতাম না!
আচ্ছা তুই সাইমনের জন্য কেমন বউ খুঁজছিস ?প্রত্যেকটা শাশুড়ির তো একটা স্বপ্ন থাকে যে কেমন হবে ছেলের বউ ?তোর ভিতরে তেমন কোন স্বপ্ন আছে ?তুই তোর ছেলের বউয়ের ভিতরে কেমন গুন খুজিস?”
সামিহা বেগম ভাবতে লাগলেন ।এমন না অনেক কিছু চাহিদা আছে বউয়ের প্রতি ।উনি ভাবছেন এই ছেলের জন্য বউ কিভাবে পাব ?একটা কাজও নিজে থেকে করতে পারে না ।ঠিকমতো লেখাপড়া করে না কোন কিছুই ঠিক নেই বউ পেলেই তো বেশি।
পরে আমতা আমতা করে বললো,” আসলে ভাবি আমার না রিমার মত বউ খুব পছন্দ ।দেখো না রিমা কাজে কর্মে সবদিক থেকে কত নিপুন ! কত সুন্দর ! আর সাইমনটা কেউ আঙুলের ডগায় নাচতে পারে ।আমার এমন একটা বউ দরকার যে সব কিছুতে পারফেক্ট থাকবে আর সাইমনকে আঙ্গুলের ডগায় নাচাবে ।না হলে বা*দর ছেলে ভালো হবে না।”Nurun Nahar Nila
নওরিন আফরোজের ঠোঁটে খেলে গেল মুচকি একটু হাসি, যাক একজন তো পেয়েছে আর কোন সমস্যা নেই ।সামিহা বেগম আর উনি মিলে বাকি সব সমস্যার সমাধান করে ফেলবেন ।সব সিদ্ধান্ত কি বাড়ির পুরুষরা নিবে নাকি ?এরপর থেকে উনারা ও সিদ্ধান্ত নিবে ।এমনি এমনি ভেসে এসেছে বাড়িতে শুধু কাজ করার জন্য আর সন্তান জন্ম দিয়ে লালন পালন করার জন্য ?যাদের উপরে কোন অধিকার খাটাতে পারবে না সিদ্ধান্ত নিতে পারবেনা?”
এদিকে রিমা মোবাইলের দিকে তাকাচ্ছে ।আজ একবারও সায়মন ফোন করেনি ।ঘটনা কি ?এই পা*গল তো বারবার ফোন দিয়ে মেসেজ দিয়ে ডিস্টার্ব করত !কিন্তু আজ কেন ফোন দিচ্ছে না ?রিমা কতক্ষণ আমতা আমতা করে মোবাইলটি হাতে নিল ।নিয়ে একটি ফোন দিবে কি দিবে না বারবার ভাবতে লাগলো পরে ফোন দিয়ে ফেললো।
রিংয়ের পর রিং বেজে যাচ্ছে ।মোবাইল সাইলেন্ট সাইমন পড়তে বসেছে ।তাই মোবাইলের দিকে খেয়াল নেই ।এদিকে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে হতবাক হয়ে গেল রিমা ।আরেকবার ফোন দিলো।দেখলো সাইমন ফোন ধরছেনা ।ফোনটি টেবিলে রেখে চুপচাপ চিন্তায় বসে পড়লো রিমা ।কি হয়েছে এই ছেলের ?ফোন ধরছে না কেন?
এদিকে দুজনেই শাওয়ার নেয়া শেষ।দুপুরে লাঞ্চ টাইম হয়ে গিয়েছিল ।সাদাফ জানে নুর কিছু রান্না করতে পারেনা তাই সাদাফ এপ্রন টা শরীরে ঝুলিয়ে বেঁধেই কিচেনে চলে গেল রান্না করার জন্য ।ওর পিছনে পিছনে নুর গিয়ে বললো,” আমি কি কোন সাহায্য করতে পারি আপনাকে?”
সাদাফ পিছনে তাকিয়ে বললো,” নুরজাহান বেগম আপনি চুপচাপ বসে থাকবেন ।এটি আমার জন্য সবচাইতে বড় সাহায্য ।আপনাকে যদি কাজ করতে বলি সেই কাজ গোছাতে গোছাতে আবার আমার দুইটা তিনটা বেজে যাবে।”
“জি না আমি নাস্তা তৈরি করতে পারি ।গত পরশু তো তৈরি করেছিলাম।” বললো নুর উচ্ছাসিত হয়ে।
“তাই ?কোন সমস্যা নেই ।পরে করবেন ।আজকে আপনার শাহজাদা সেলিম আপনাকে রান্না করে খাওয়াবে ।”
বলেই সাদাফ সবজি বের করে কাটতে শুরু করল ।আরেকটি বাটিতে কিছু মাংস ভিজিয়ে নিল ।মাংস আর সবজি রান্না করবে এর বেশি কিছু রান্না করবে না।
রাইস কুকারে ভাত চড়িয়ে দিল ।নুর অবাক হয়ে দেখতে লাগলো সাদাফের কাজ ।কতটা নিখুঁত কতটা পারফেক্ট ! বললো,” আপনি এত সুন্দর করে কাজ করতে পারেন ?”
সাদাফ বললো,” জি আমি সব কাজ অনেক সুন্দর করে করে নিখুঁতভাবে করি।”
“আর কি কি কাজ আপনি খুব ভাবে করতে পারেন?” সরল মনে জানতে চাইলো নুর ।
সাদাফ বললো,” কেন কাল দেখেননি কি কি কাজ আমি নিখুঁতভাবে সুন্দরভাবে করতে পারি ?প্রয়োজন হলে আরেকবার ডেমো দেখাই ।কিচেনে ডেমো দেখবেন?”
নুর বলল ,”কি দেখিয়েছেন গতকাল ?পরক্ষণে মনে পড়ে গেল রাতের কথা ।নুর সাদাফের দিকে তাকিয়ে বলল ছিঃ আপনি সবসময় এরকম কথা বলেন কেন আমার কি লজ্জা লাগে না?”
সাদাফ নুরের দিকে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,” লজ্জা কি ভা*ঙ্গতে পারিনি বেগম নুরজাহান? তাহলে তো আপনার সাহাজাদা সেলিম ব্যর্থ হয়েছে ।চলুন এবার লজ্জা ভেঙে দিব।”
নুর লজ্জায় সাথে সাথে চিৎকার করে উঠলো,” খবরদার এখানে আসবেন না ।রান্না করুন আমার ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে।”
চলবে_
সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
motivation
পর্ব ১৩১
প্রায় ঘন্টাখানেকের মধ্যে রান্না কমপ্লিট হয়ে গেল ।রান্নার স্বাদ টেস্ট করার জন্য নূর তাড়াতাড়ি হাঁড়ির কাছে আসতেই সাদাফ চিৎকার করে উঠল ।সাদাফ বললো,”নুর হাড়ির কাছে এসেছিস কেন ?”
নূর বললো,” আমি মাংসটা একটু ট্রাই করবো ।”
সাদাফ বললো,” ওইখানেই বস আমি বাটিতে দিচ্ছি ।পা*গল নাকি এসেছিস কেন?”
একটি বাটিতে দুই টুকরো মাংস দিয়ে নুরকে বলল ট্রাই করে দেখ কেমন হয়েছে ?
নুর ধোঁয়া ওঠা মাংসে কিছুক্ষণ ফু দিয়ে ঠান্ডা করে মুখে নিয়েই যেন বোকা হয়ে গেল ।এত মজা একটা পুরুষ মানুষ কি করে রান্না করতে পারে !
নুর তো এত মজা করে কখনই রান্না করতে পারে না।
মজা করে কি নুর তো রান্নাই করতে পারে না।
দুপুরে খাবার পর্ব শেষ করে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল সাদাফ।সি*গারেট ধরিয়ে ছিল বারান্দায়।নুর রুম থেকে দেখছে সাদা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে বারান্দার কাছে আসছি সিগারেটের করা ধোঁয়ার গন্ধে নূরের কাশি উঠে গেল।
সাথে সাথে সি*গারেটটি নিভিয়ে বললো ,”এখানে এসেছিস কেন ?রুমে যা এখানে আসলে তো কাশি উঠে যাবে ।”Nurun Nahar Nila
নুর বলল,” না সমস্যা নেই আপনি একা একা দাড়িয়ে ছিলেন তাই এসেছিলাম।”
সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে রইল। বললো ,”কাশি কমেছে ?”
নুর বললো,” হ্যাঁ কমেছে ।তারপর নূর বললো আচ্ছা চলুন আমরা বিকালে কোথাও ঘুরে আসি।”
সাদাফ বললো ,”পা*গল ?বিকালে কে ঘুরতে যাবে আমি এখন ঘুমাবো রেস্ট নিব।”
“রেস্ট নিবেন কেন ?চলুন না বেরিয়ে আসি ।এসে তারপর রাতের বেলা ঘুমাবেন রেস্ট নিবেন। “বললো নুর।একটু থেমে আবার বললো,”আর বিকালে কে ঘুমায় ?”
সাদাফ বললো,” যারা রাতভর কামলা খাটে তারা বিকালে ঘুমায় ।” নুর বললো,”আপনি কি কামলা খেটেছেনি ?”
সাদাফ বললো,”মনে করিয়ে দিব ?কি কামলা কেটেছি ?রাতে খুশি হসনি ?ঠিক আছে আজকে আরো বেশি পরিশ্রম করব।”
দিন ভরা ঘুমাবো ।সন্ধ্যার পর থেকে পরিশ্রমে লেগে পড়বো ।ঠিক আছে?”
নূর বললো,” ছিঃ আপনি কি আগে এরকমই ছিলেন ?এত বাজে কথা আপনার মুখ থেকে কোত্থেকে আসে?”
সাদাফ বললো,” আগে কেন জন্মের পর থেকে এরকম ছিলাম ।আগে বলিনি আগে তো চাচাতো বউ ছিলি আমার আপন বউ ছিলি না । কিন্তু এখন তো তুই জানিস তুই আমার বউ ।তাই অরিজিনাল রূপ তোকে দেখাচ্ছি যাতে বলতে না পারিস আপনাকে আমি চিনতে পারিনা।
নুর লজ্জা পেয়ে গেল ।বললো,” থাকেন আপনি বারান্দায় ।সি*গারেট খান ।আমি গেলাম রুমে ঘুমাতে ।”
সাদাফ পেছনে পেছনে হেঁটে আসতে আসতে বললো,” আমি থাকতে তুই ঘুমাতে পারবি তুই ভাবলি কি করে ?”
সাথে সাথে নূরের কাধে হাত দিয়ে নুরকে ধরে রুম পর্যন্ত নিয়ে আসলো।
নুর বললো কি করছেন ?”
সাদাফ বললো,” কিছুই করছি না ।এখন কিছুই করবো না এখন ঘুমাবো ।পরিশ্রম যা করার ঘুম থেকে উঠে করব ।আমার নুরজাহান বেগম বলেছে আমার পারফরমেন্সে খুশি হয়নি ।সন্ধ্যার পর থেকে আমি আরএ অধিক পরিশ্রমে নেমে পড়বো।”
“ছি ছাড়ুন আমাকে ।খালি বাজে কথা আপনার ।এরকম করলে আমি বাসায় চলে যাব বাবাদের কাছে গিয়ে নালিশ করব আপনার নামে।”বললো নুর।
পর্ব টা ছোট হলো।গলার স্বর খুব বাজে হয়ে গেছে সন্ধ্যা থেকে।মাফ করবেন।
সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neeela_rahman
পর্ব_১৩২
সন্ধ্যা সাতটা হুমায়ূন রহমান ও ফজলুর রহমান বসে আছে হোটেল কক্ষে। রহমান হুমায়ন রহমানের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”কাজ তো আমাদের শেষ হয়ে গিয়েছিল ভাইজান ।আমরা তো চলে যেতে পারতাম ! “
হুমায়ূন রহমান মনে মনে ভাবলো,”কি করে বুঝাবে ছেলে আজ তাকে ফিরে যেতে দিবে না ।আগামীকালকে টিকিট করেছে ।”
তাই ছোট ভাইয়ের সামনে বললো ,”আমি সাদাফ কে বলেছিলাম আমার শরীরটা ভালো লাগছে না ।তাই কাল টিকিট করতে।মনে হয় একটু প্রেসার আপ ডাউন হয়েছে তাই ভাবলাম কালকে টিকিট করি।”
ফজলুর রহমান বললেন ,”সে কি ভাইজান আপনি আমাকে বলেননি কেন ?আমি নিচে থেকে এক্ষুনি ওষুধ এনে দিচ্ছি ।”
হুমায়ূন রহমান বললো ,”না না সমস্যা নেই ।আসার সময় আমি ফার্মেসি থেকে কিনে নিয়েছি ।টেনশন করিস না ।এখন একটু রেস্ট নিলে ঠিক হয়ে যাব ।তুইও তো সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করেছিস জার্নি করেছিস । প্রেসারের জন্য হয়তো এই সময় খারাপ লাগছে আগামী কালকে চলে যাবো ইনশাল্লাহ।”
ফজলুর রহমান আর কথা বাড়ালেন না ।ভাইজান যেহেতু অসুস্থ সারাদিন জার্নি করেছে ঘটনা সত্যি কাজও করেছে তাই ভাবলো রেস্ট নিক ।আগামীকাল বিকালে একবারে চলে যাবে ।সকালটা আরেকবার ফ্যাক্টরি ভিজিট করে বিকালের দিকে যেহেতু টিকিট কনফার্ম বিকালের দিকে যাবে ।সেজন্য উনিও রেস্ট নিতে শুরু করলেন।
এদিকে সামিহা বেগম আজ পদে পদে খেয়াল করছে রিমাকে ।রিমা কিভাবে কথা বলে রিমা কিভাবে হাসে কিভাবে কাজ করে ।সব কিছু।ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছিল রিমা ।সামিহা বেগম রান্না ঘর থেকে বললেন ,”রিমা মা একটু এদিকে আয়তো।”
রিমা বলল ,”ডেকেছিলে আম্মু ?”
সামিহা বেগম বললো,” হ্যা এদিকে আমাকে একটু সাহায্য করতে পারবি ?”
রিমা বললো,” কি হয়েছে আম্মু বল কি করতে হবে?”
সামিহা বেগম বললো,” নাস্তা গুলো ভেজেছি একটা ট্রেতে আর একটা প্লেটে নে। এর মধ্যে প্লেটটি রেখে নাস্তাগুলো সার্ভ কর ।কফি চুলায় বসানো আছে ।আমি কফি ঢেলে দিচ্ছি সবার জন্য ড্রয়িং রুমে নিয়ে যাবি।”
রিমা বলল ,”ঠিক আছে আম্মু ।”
বলেই ট্রে নিয়ে নিয়ে নাস্তাগুলো ধীরে ধীরে সার্ভ করতে লাগলো খুব সুন্দর করে ।নিখুত করে কাজ করে মেয়েটি ।সামিহা বেগম এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল রিমার দিকে ।হঠাৎ করে মুচকি হাসল ।মনে মনে ভাবল ,”আমি বাহিরে কেন মেয়ে খুঁজছি চোখের সামনে এত ভালো একটা মেয়ে আছে আমার এরকম নালায়েক ছেলের জন্য।”
সামিহা বেগম মানুষটা খুবই সহজ-সরল উনি জীবনটাকে খুব সহজ এবং স্বাভাবিকভাবে দেখতেই পছন্দ করেন ।উনার মনে হল রিমা যেহেতু বাসায় আছে তাদেরই মেয়ে সামিহা কয়েক বছরের ছোট আর এত সুন্দর সংসারি একটি মেয়ে ।বাহিরে কেন বিয়ে হবে ?নুরকে তো সাদাফ বিয়ে করে ফেলেছে রিমা ও যদি বাড়িতে থেকে যায় কত ভালো হবে ।সবাই একসাথে থাকতে পারবে বাহিরের কোন টেনশন নেই।”
ভিতরে ভিতরে উনি প্ল্যান করে ফেললেন যেভাবেই হোক ভাবিকে পটাতে হবে ।রিমা কে সাইমনের জন্য চাই চাই ।লাগলে পায়ে ধরে ঝুলে থাকবে। মনে মনে আরো ভাবল ভাবির ছেলে মেয়ে দুটাই কত যোগ্য কত ভালো কাজের বুদ্ধিমান বুদ্ধিমতী আর আমার পেটে হয়েছে দুইটা নালায়েক ।একটা কাজ করতে পারে না আরেকটা মাথা মোটা।
এদিকে ঘুম থেকে উঠতে উঠতে সাদাফ ও নূরের সন্ধ্যা সাতটা বেজে গেল ।অনেকক্ষণ ঘুমিয়েছে আজকে প্রচুর ক্লান্ত ছিল সাদাফ বেচারা ।রাতভর কামলা খেটে ঘুমিয়েছে তাই সেই লেভেলের ঘুম দিয়েছিল ।সাতটার দিকে ঘুম থেকে সবার আগে উঠল নূর ।প্লান করল ঘুম থেকে উঠে কফি বানাবে আর নাস্তা বানাবে ।যেহেতু দুপুরে রান্না করেছিল সাদাফ।
নূর বিছানা থেকে ওঠার সময় সাদাফের ঘুম ভেঙে গেল ।সাদাফ চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে নূরে হাত ধরে ফেলল ।বললো ,”কোথায় যাচ্ছিস ?”
নুর বললো,” কফি খাবেন ?আমি আপনার জন্য কফি তৈরি করতে যাচ্ছি আর নাস্তা।”
এই দুটো জিনিস তৈরি করতে পারে নুর সাদাফ জানে তাই বললো,” একা পারবি নাকি আমার আসতে হবে ?”
নুর বললো,” না না আসতে হবে না ।আপনি উঠে ফ্রেশ হয়ে নেন আমি তৈরি করছি ।”
নুর রান্নাঘরে নাস্তা তৈরি করছে কিন্তু সাদাফরের মন মানছে না ।একা একা পারবে কিনা সাদাফ তাই রান্না ঘরের দিকে চলে গেল।
রান্না ঘরে গিয়ে দেখল নাস্তা তৈরীর সব কিছু রেডি করে ফেলেছে নূর ।এই একটি কাজ মোটামুটি ভালো পারে ।শখ করে বাড়িতে নাস্তা তৈরি করত ।সাদাফ পেছনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে নূর সবজিগুলো কেটে ডালের সাথে মাখিয়ে নিচ্ছে ।আর কফি আরেক চুলায় হচ্ছে।
নুর কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে নূরের কাঁধে চুমু খেয়ে বললো,” আমার নুরজাহান বেগম তো খুব ভালো কফি বানাতে পারে ।কফি আর নাস্তা ।নুর লজ্জা পেয়ে গেল ।বললো,” আপনি অপেক্ষা করেন আমি কফি তৈরি করছি ।”
সাদাফ বললো,”আমি তোকে কতবার উপরে ডাকতাম কফির বাহানায়।”
নুর অবাক হয়ে বললো,” বাহানায় ?কফি খাওয়ার জন্য না ?”
সাদাফ বললো,” না কফি খাওয়ার বাহানা না করলে কি তুই আসবি ?”
নুর বলল ,”কেন ডাকতেন তাহলে বাহানা করে ?”সাদাফ এক দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকিয়ে বললো,”তোকে একটু দেখতে একটু ছুয়ে দিতে একটু আদর করতে।”
নুর বললো,” আপনার মনে এগুলো ছিল ?”
সাদাফ বললো,”এগুলি ছিল শুরু থেকেই আমার মনে ।এগুলো ছিল ।সব ছেলেদের মনে এগুলোই থাকে ।তার প্রিয়তমা গার্লফ্রেন্ড স্ত্রীকে দেখলে তাদের মনে শুধু এগুলি চলে ।টগবগ করে মাথার মধ্যে শুধু এগুলি চলে।
আমি কোন সাধু সন্ন্যাসী না ।এরকম হুর পরী একটা সুন্দরী মেয়েকে আমার কাছে একা পেয়ে আমি ছেড়ে দিব ।আমি একটা সাধারন মানুষ যে মেয়ের প্রতি আমার ভীষণ দুর্বলতা যাকে আমি ছোটবেলা থেকে ভালবাসি তাকে একটু ছুয়ে দিতে একটু আদর করতে বাহানা করে হলেও আমি করতাম ।তাতে আমি দোষের কিছু দেখি না।”
নুর ভিতরে ভিতরে অনেক লজ্জা পাচ্ছে ।শিহরণ বয়ে যাচ্ছে ।পুরো শরীর জুড়ে সাদাফ এখনো ওর কোমর পেচিয়ে ধরে কাঁধে আলতো করে ছোট ছোট চুমু খাচ্ছে ।
নূর বললো ,”সরুন তাহলে আজকে থেকে কফি বন্ধ ।আপনার মতলব আমি বুঝে গিয়েছি আজকে থেকে আর কফি বানিয়ে দিব না।”
সাদাফ নুরের কাঁধে ছোট্ট একটি কা*মড় দিয়ে বলল ,”আর আমার কোন বাহানা প্রয়োজন নেই ।এখন আমি যখন তখন আদর করতে পারব তাই তুই কফি নিয়ে আসিস আর না আসিস থাকতে হবে আমার কাছেই।”
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯৩
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৩+৩৪
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১০৯+১১০
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪৩
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৮৫
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৩+২৪
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯৯
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭১
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯৭
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫