নিষিদ্ধ_চাহনা
পর্ব_২১
লেখিকাসারাচৌধুরী
🚫অনুমতি বাদে কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ🚫
মাটিতে পড়ে আছে পিহু।চেয়ার টা তার পায়ের উপর।পিহুর হাতে তোয়ালে জড়ানো।পিহু সেন্সলেস। সাদি দৌড়ে গিয়ে পিহুকে জড়িয়ে ধরে।বুকের সাথে চেপে ধরের হাতের পার্লস চেক করে।না সব ঠিক আছে। আতিয়া বেগম ও খুব ভয় পেয়েছেন।তিনি এখোনো বুজে উঠতে পারছে না পিহুর এমনকি কষ্ট লাগলো যে পিহু সুই/সাইড এর মতো ভয়াবহ একটা কাজ বেছে নিতে গেলো।
সাদির খুব রাগ হলো তাকে এমন টেনশনে ফালানোর জন্য মনে হচ্ছিলো তুলে এখনই এক আচাড় দিতে।যদি কোনো ভুল করে বসতো আজ।পিহু কি তার কথা ভেবেছে একবারো।সে কি নিজেকে ক্ষমা করতে পারতো।আতিয়া বেগমের কথায় সাদির হুস আসে।
সাদি পিহুকে বিছানায় সুইয়ে দেই।সব কিছু ঠিক আছে।গায়ের তাপমাত্রা বেশি হয়তো জ্বর আসছে।সাদির এক মুহুর্ত পিহুকে রেখে যেতে ইচ্ছা করছে না তবে ভিজে অবস্থায় থাকলে সেও জ্বরে পড়বে। সাদি আতিয়া বেগম কে বস্তে বকে ছুটে রুম থেকে বেরিয়ে তাড়াতাড়ি ড্রেস চেঞ্জ করে আবার পিহুর রুমে চলে এসেছে।
আতিয়া বেগম বেশ অবাক হলেন সাদির এমন তাড়াহুড়োই।যে ছেলে পিহুকে সহ্য করতে পারে না তার আজ হলো কি।দৌড়ে গিয়ে দু মিনিটের মধ্যে জামা কাপড় পালটে চলে আসলো।তবে এখন এসব ভাবার সময় নেই মেয়েটার জ্ঞান ফেরানো জরুরি।আতিয়া বেগম সাদিকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই সাদি পিহুকে ডাকতে শুরু করলো।
গ্লাস থেকে কয়েক ফোটা পানি নিয়ে পিহুর চোখে মুখে দিতেই পিট পিট করে চোখ খুললো সাথে সাথে ব্যাথায় সারা শরীর বিষিয়ে উঠলো।চোখ গুলো খুলে রাখতে পারছে না।জালা করছে। পিহুকে চোখ খুলতে দেখে আতিয়া বেগম আবারো কিছু বলতে যাবেন তার আগে সাদি আতিয়া বেগম বলে উঠলো..
-“আম্মু ও সকাল থেকে কিছু খাই নি জ্বর এসেছে ওকে খেতে দাও।
-“কিন্তু বাবা ও এমন ভয়াবহ কাজ কি জন্য করতে যাচ্ছিলো..?
-“ও সুস্থ হোক তখন শুনবো এখন ওকে খাইয়ে ওষুধ দিতে হবে।
-“আচ্ছা আমি নিয়ে আসছি তুই এখানে বস কোথাও যাস না আমি না আসা অব্দি।
-“আচ্ছা যাও।
আতিয়া বেগম চলে যেতেই সাদি পিহুর পিটপিট করে খোলা চোখের দিকে দৃষ্টি রাখলো।তারপর পিহুর পুরো কাছে গিয়ে চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো।পিহুর একটুকুও শক্তি নেই কথা বলার। জ্বর চলে এসেছে গায়ে প্রচুর অল্পখনেই।সাদিকে দেখে পিহুর চোখ বেয়ে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে।সাদি সে পানির দিকে তাকায়।তারপর পিহুর কানের কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে..
-“তোর চোখে কত পানি আমিও দেখে ছাড়বো সুইটহার্ট..!!
সাদির কথায় জ্বর নিয়ে কেপে উঠে পিহু।সাথে সাথে চোখ বুজে নেই খুব কান্না আসছে তার। তবে কান্না করলেও কষ্ট হচ্ছে চোখ যন্ত্রনা করছে মাথাটাও ধরেছে। সাদি পিহুর কানের কাছে আবারো ফিসফিস করে বলে…
-“আজ যে কাজ টা করতে যাচ্ছিলি এর শাস্তি তোকে পেতেই হবে,,হিসাবের খাতা তোলা রইলো সময় মতো হালখাতা করবো।সুইটহার্ট।
পিহু শুনলো তবে কোনো রেসপন্স করলো না।সে চোখ মেলে আতিয়া বেগমের চোখে পানি দেখেছে।তাজলে কি সাদির মতো সেও ভুল বুজেছে। বুজবেই বা না কেন সেতো সেভাবেই ছিলো তবে উদ্দেশ্য ভিন্ন ছিলো।
পিহু তখন ফ্যানে তোয়ালে বাধানোর ফ্যানে একটা ফড়িং বসে থাকতে দেখে।পিহুর কষ্টের মাঝেও হাসি ফুটে উঠে মুখে।কারন সে ফড়িং এর পশ্চা/দেশে সুতো বেধে নিজের ফুল গাছের সাথে কিছুক্ষন বেধে রাখে। এই কাহিনী শুধু মাত্র পিহু ব্যাতীত কেও জানেনা।পিহু মুলত ফড়িং ধরার জন্যই চেয়ার নিয়ে খাটের উপর রেখেছিলো।তবে ফড়িং ধরার আগে সে আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছিলো তবে আল্লাহ হয়তো মাফ করে নি তাই ফড়িং টা উঢ়ে যায় আর পিহু পা পিচলে নিচে পড়ে যদিও বিছানায় পড়েছিলো তবে তারপর চেয়ার নিয়ে আবার নিচে পড়েছে।তবে বাড়ির লোক অন্য কিছু ভাবছে।
পিহু এখন চিন্তিত।মামুনি জিজ্ঞাসা করলে সে কি উত্তর দিবে। এমনিতেই খুব কষ্ট পেয়েছেন।যাই বলুক না কেন পিহুর পিঠে আজ দু এক ঘা বসবেই।পিহুর মাজায় খুব লেগেছে।চোখ বন্ধ করে দোম আটকে আছে সে।তবে মনে মনে আফসোস ও লাগছে ফড়িং টাকে ধরতে না পারার জন্য। আর ওই ফড়িং এর জন্যই সাদি আর মামুনি ভাবছে সে ম/রে যেতে চেয়েছিলো।হতো বাবা ও জেনে গেছে।তিনিও হইতো কষ্ট পেয়েছেন।
কিন্তু বাড়ির লোক কি বুজলো না তাদের পিহু স্ট্রং।এমন কাজ সে করবে না।ফাও ফাও নিজের জীবন টা নষ্ট করবে।পিহুর নিজস্ব ডাইরিতে একটা নিজের পছন্দের লাইন আছে।যেটা পিহুর খুব পছন্দের লেখাটা এমন…
-“কেও তোমাকে কষ্ট দিলে তুমি তাকে ভালোবাসা দাও,, আর কেও তোমাকে কাঠি দিলে তাকে আখওয়ালা ফাপা বাশ পুরে দাও।
পিহুর মন খারাপ থাকলেই লাইন টা পড়ে সাথে হাসি চলে আসে ঠোঁটে। এখনও তাই হলো।সাদি সেই কখন থেকে চোখ বুজে থাকা পিহুর দিকে তাকিয়ে আছে।হটাৎ পিহুর ঠোঁটে হাসি দেখে সাদির ভ্রু কুচকে যায়।মেয়েটা কি ঘুমিয়ে পড়লো নাকি তাকে দেখতে বাজে দেখাচ্ছে।কি জানি হাসলো কেন তাহলে। সাদি বুজতে পারছে না।
পিহু হুটহাট নিজের ডাইরিতে উলটা পালটা লাইন লিখে সেটা কাব্যিক রুপ দেওয়ার চেষ্টা করে।এতে সে সফল ও হয়।নিজেকে নিজের কাছে প্রাউড ফিল হয়।চোখ বুজে এসব ভাবার মাঝেই আতিয়া বেগম খাবার নিয়ে আসে। সাদি বলতে যাবে খাইয়ে দেওয়ার কথা তার আগেই আতিয়া বেগম সাদির হাতে প্লেট টা দিয়ে বলে আমি এসে খাওয়াচ্ছি তোর আব্বু টেবিল এ বসে আছে আমি খাবার দিয়ে আসি।রাখ এখানে।
আতিয়া বেগম চলে গেলেন আতিয়া বেগমের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে সাদি তাকিয়ে রইলো এক দৃষ্টিতে।আতিয়া বেগম চোখের আড়াল হতেই সাদি খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে পিহুর মাথার কাছে বসলো।পিহুকে উঠতে বললেও উঠে না।চিট হয়ে সুয়ে আছে।পিহু মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছে আজ যাই হোক এই লোক এর ডাকে শাড়া দিবে না।
সাদি বেশ বুঝতে পারছে পিহু ইচ্ছা করেই তার ডাকে সাড়া দিচ্ছে না।সাদির রাগ হলো।কেও যখন ইচ্ছা করে ইগনোর করে তখন রাগ তো উঠবেই সাদি খাবারের প্লেট বেড সাইট টেবিলে রবখে পিহুকে আবার ডাকলো।উঠে বসার জন্য তবে পিহু উঠলো না।সাদি পিহুকে উঠানোর জন্য পিহুর বাহুতে হাত দিতেই পিহু নড়েচড়ে উঠে সরে যায়।সাদি এতে অপমান বোধ করে একটা পিচ্চি মেয়ে তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে এটা সাদির ইগো তে লাগলো।
সাদি এক টানে পিহুকে বসিয়ে দেই।পিহু সরে যেতে চাই।আবার সুয়ে পড়তে চাই।তবে সাদি তার আগে পিহুকে নিজের কোলের মধ্যে বসিয়ে নিয়েছে।শক্তিশালী সাদির কাছে ছোট্ট পিহুর শক্তি নিতান্ত তুচ্ছ তার উপর জ্বর। পিহুর পিঠ গিয়ে ঠেকে সাদির বুকে। সাদি পিহুকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে অন্য হাত দিয়ে খাবারের প্লেট পাশে এনে খাবার মেখে পিহুর মুখের সামনে ধরে তবে পিহু মুখ ফিরিয়ে নেই।সাদি ধমক দিয়েও যখন কাজ হয় না তখন সাদি এক হাত দিয়ে পিহুর গাল চেপে ধরে হা করিয়ে গালে খাবার পুরে দেই।পিহু না চাইতেও গিলে নেই চুপচাপ।
পিহু খাচ্ছে।সাদিও চুপচাপ খাওয়াচ্ছে। কিছুক্ষন পর পিহু বললো আর খাবে না সাদিও জোর করলো না ওষুধ দিলো পিহু ও খেয়ে নিলো।সাদি টিস্যু দিয়ে পিহুর মুখ মুছিয়ে দিতে গেলে পিহু উড়না দিয়ে মুছে সুয়ে পড়ে।
সাদি পিহুর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।হ্যা তার রাগ বেশি অল্পতেই রেগে যায়।তবে সে কি করবে।অন্য মানুষের সাথে যেমন তেমন পিহুর সাথে বেশি।সাদি প্লেট নিয়ে নিচে চলে গেলো ডাইনিং এ কেও নেই আতিয়া বেগম মনে হয় ঘরে সাদি সেই সুযোগে নিজের খাওয়া কম্পিট করে নিলো।
পিহু ঘুমিয়েছে অনেক্ষন। আতিয়া বেগম এসেছিলেন খাওয়াতে তবে সাদি খাইয়েছে শুনে যত টুকু না অবাক হয়েছে তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন তিনি।যাক তার রাগী ছেলেটার মেয়েটার প্রতি একটু মায়া হয়েছে। সাদি পিহুর মাথার কাছে বসে বসে মোবাইল স্কলিং করছে।পিহুর জরের তাপমাত্রা বেড়েছে।ডাবল কম্বল নিয়েও কাপছে।কাপা কাপা অবস্থাই জর নিয়ে পিহু কি যেনো বিড়বিড় করছে সাদির কানে আবছা আবছা গেলো।
সাদি কপাল গুটিয়ে পিহুর দিকে তাকিয়ে দেখলো জরের কারনে ভুল বকছে।সাদি আস্তে করে পিহুর মুখের কাছে কান নিয়ে যেতেই শুনতে পেলো পিহুর জড়ানো কন্ঠস্বর..
-“আমি আপনাকে ঘৃনা করি ডাক্তার সাহেব।আপনি আমারে খালি মারেন।আমি মরে যাবো আপনি কেন মারেন আপনাকে আমি মাফ করবো না। বলেই পিহু ঘুমের মাঝে ঠোঁট উল্টাই।সাদি সেদিকে তাকিয়ে রই বেশ কিছুক্ষন তারপর নিজের পিহুর দিকে ঝুকে পিহুর মুখে পড়ে থাকা চুল গুলো হাত দিয়ে কানের পাশে গুজে দিয়ে পিহুর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে…
-“তোর ওই ছোট্ট হৃতপিন্ডে যদি নিজের নাম খোদাই করতে না পেরেছি তবে আমিও ডা. সাদি চৌধুরী না। সুইটহার্ট।
চলবে……
-(গল্প একদিন পর পর পাবে।আমার পরিক্ষার কারনে লিখে উঠতে পারছি না সময় করে।কেও বাজে মন্তব্য করবেন না)-
Share On:
TAGS: নিষিদ্ধ চাহনা, সারা চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৮
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১১
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ২
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১২
-
নিষিদ্ধ চাহনা গল্পের লিংক
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৩
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৬