নিষিদ্ধ_চাহনা
পর্ব_১৯
লেখিকাসারাচৌধুরী
🚫অনুমতি বাদে কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ🚫
পিহু তখনও হাটুতে মুখ গুজে ভিজে চলেছে।কোনো দিকে তার হুস নেই চোখ দিয়ে এখোনো পানি পড়ছে অঝোরে বাধাহীন ভাবে।তবে শরীর টা ক্লান্ত হয়ে এসেছে।চোখ গুলো ঘোলা ঘোলা লাগছে।
সাদি পিহুর সামনে এসে কয়েকবার ডাকলো তবে পিহুর সাড়া শব্দ নেই।ক্ষনে ক্ষনে কেপে উঠছে।পিহু যেনো পন করেছে আজ সাদির কথার কোনো প্রতিউত্তর করবে না।সাদি পিহুর উত্তর না পেয়ে রেগে গেলো এমনিতে মেয়েটা বৃষ্টিতে ভিজছে তার উপর সে ডাকছে ইচ্ছা করে উত্তর নিচ্ছে না।সাদির রাগ লাগলো তবুও নিজেকে শান্ত করে পিহুর বাহু ধরে পিহু কে দাড় করালো। সাথে সাথে পিহু ছিটকে সরে গেলো।রেলিং এর গায়ে গিয়ে ধাক্কা খেলো। ব্যাথায় আহহ করে উঠলো। সাদি শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন তারপর শান্ত কন্ঠেই বললো…
-“বৃষ্টিতে ভিজিস না নিচে যা।
পিহু কোনো প্রতিউত্তর না করে রেলিং এ হেলান দিয়েই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো এতে সাদির যেনো রাগ টা কোনো ভাবে কমছে না আরো বেড়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে ঠাটিয়ে একটা চড় দিতে তবে সাদি শান্ত থাকলো। আবারো বললো…
-“পিহু আই রিপিট নিচে যা জ্বর আসবে তোর..!
পিহুর কোনো হেলদোল হলো না।চুপচাপ দাড়িয়েই রইলো মনে হলো কাঠের কোনো পুতুল শুধু দেখতে মানুষ। সাদি এবার আর নিজের শান্ত ভাব ধরে রাখতে পারলো না।সে জানে এই বৃষ্টি তে ভিজলে জ্বর আসবেই কঠিন জ্বর আসবে।আর সে আর এই মেয়েটা বিনা কারনে ভিজে চলেছে।
সাদি শান্ত অথচ গম্ভীর কন্ঠে আবারো বললো..
-“পিহু রাগাস না আমি নিচে যেতে বলেছি।
তবে পিহু কথা না বলে উলটো ঘুরে গেলো। আকাশের দিকে একটু চেয়ে নিচের দিকে চাইলো।পেছনের মানুষ টার উপর তার প্রচন্ড অভিমান।তাকে খুব কষ্ট দিয়েছে সে।পিহু কখোনো ভেঙে পড়ার মেয়ে না।সে সব সময় স্ট্রং তবে আজ সাদির কথা গুলো তার ছোট্ট পিঞ্জরে তীরের মতো গেথে গিয়েছে।খুব কষ্ট হয়েছে তার।
পিহুকে অন্য দিকে ঘুরতে দেখে সাদি রেগে পিহুর বাহু ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়েই ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো তারপর কঠিন কন্ঠে বলে উঠলো..
-“স্টুপিড কানে কথা যায় না তোরে না নিচে যেতে বলেছি..?
সাদির শক্ত হাতের চড় খেয়ে পিহুর বৃষ্টিতে ভেজা দুর্বল শরীর টা নেতিয়ে পড়তে চাইলো তবে সাদি যেহেতু পিহুর বাহু ধরে আছে সেজন্য পিহু আর পড়লো। পিহু এক হাতের পাহু দ্বারা চোখ গুলো ঢলে ভালো করে সাদির দিকে তাকালো।মুহুর্তে নিজের কন্ঠে রাগের আবাশ নিয়ে বলে উঠলো..
-“কি সমস্যা আপনার…?
-“মানে..?
-“আমার পিছনে পড়ে আছেন কেন আপনি..?
-“তোরে আমি নিচে যেতে বলেছি পিহু..!
-“আমি যাবো না কি করবেন..?
-“লাস্ট বার বলছি নিচে যা রাগাস না আমার ভালো হবে না কিন্তু..!
-“আর কি ভালো হওয়ার আছে আমি নিচে যাবো না।
সাদি জোরে জোরে কয়েকটা শ্বাস টানলো।সে জানে আজ তার স্বর্দি,, জ্বর বাদবে সাথে কাশি। পানির মাত্রা বেড়ে চলেছে। সাদি জানে এই মেয়ে এভাবে শুনবে না। তবে একটা মেয়েকে আর কত মারবে সে।নিজের কাছেই খুব খারাপ লাগছে তার।তবে এখন এরে নিচে নিয়ে যাবে কিভাবে। সাদি যথাসম্ভব কন্ঠ খাদে নামিয়ে বকে উঠলো..
-“পিহু জেদ ধরিস না জ্বর আসবে এতো ভিজলে নিচে যা।
-“হাসালেন..!
-“মানেহ..?
-“আমাকে নিয়ে আপনার এতো ভাবা লাগবে না আমি ভিজবো সারাদিন ভিজবো।
-“পিহু নিচে চল..?
-“যাবো না বললাম না..!
সাদি পিহুর কথা শুনলো না পিহুর হাত ধরে ফেললো হাত ধরে টান দিতেই পিহু প্রচন্ড রাগ..ঘৃনার মিশ্রনের এক অনুভুতি নিয়ে জোরে ঝাড়া দিয়ে সাদির হাত ছাড়িয়ে নেই।সাদি অবাক হয় তবে ভাবভঙি দেখে মনে হয় সব সাভাবিক।সাদি কিছু বলতে যাবে তার আগেই পিহু বলে উঠলো…
-“ছোবেন না আমায়,,আপনার মতো মানুষকে আমি জাস্ট ঘৃনা করি,, আপনার মতো মানুষ শুধু একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করে তাকে কলঙ্কিত ই করতে পারে।
সাদি তবুও পিহুর হাত আবার ধরতে গেলে পিহু এবার সাদির কলার চেপে ধরে।সাদি শান্ত দৃষ্টিতে পিহুর দিকে তাকায় তারপর পিহুর ধরে রাখা নিজের টি-শার্ট এর কলার এর দিকে তাকায়।পিহু তেজি কন্ঠে বলে উঠে..
-“সমস্যা কি আপনার লজ্জা করছে না এতো কিছু বলেও,,কি চান আপনি…
পিহু আর কিছু বলতে পারলো না।সাদি পিহুর ঘাড়ে চুলের মাঝে হাত ডুবিয়ে নিজের ঠোঁট পিহুর ঠোঁটে ডুবিয়ে দিয়েছে।পিহুর চোখ বড় বড় হয়ে যায়।ছটফট শুরু করে দেই।তবে সাদি একেবারে ঠেশে ধরেছে পিহুকে।চাইলেও পিহু ছাড়া পাবে না।সাদি চোখ বুজে পিহুর ঠোঁট জোড়া আপন করে নিয়ে রাগ কমানোর চেষ্টা করছে।এদিকে পিহুর চোখ দিয়ে আর পানি পড়ছে না পিহুর রাগ হয়। চোখের ভিতরে আগুন জলে উঠে।
এ আগুন কিসের আগুন পিহু বুজে না।পিহু সাদির ঠোঁটে জোরে কামড় বসিয়ে দেই একটু ছাড়া পেতেই।সাদি বিরক্ত হয়।ঠোঁট দিয়ে কয়েক ফোটা রক্ত গড়িয়ে পড়ে।সাদি বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে সুনিপুন ভাবে মুছে নেয় রক্ত। তার পর পিহুর দিকে তাকাতেই ঠাশ করে পিহু একটা চড় বসিয়ে দেই।চড় টা বেশ জোরেই লাগে সাদির গালে।তবে চাপ দাড়ির কারনে তার দাগ ফুটে উঠেনি মুখে।
পিহু ক্রোধিত কন্ঠে বলে উঠে…
-“ছিহহহ,,ঘৃনা লাগছে রিতিমতো,,আপনার কেরেক্টার এ সমস্যা আসলেই,,কি পেয়েছেন টা কি আমাকে মেরে ফেলবেন এবার।কত জন মেয়েরে এভাবে নষ্ট করেছেন অসভ্য লোক। আমাকে অন্তত এবার একটু বাচতে দিন,, ছাড়ুন আমায়।
পিহুর কথা গুলো জেনো সাদির রাগ বাড়িয়ে দিলো।হ্যা সে একটা ভুল করেছে তার ভুল এর মাসুল সে দিচ্ছে দিয়েছে আরো দিবে।তাই বলে তাকে বাজে চরিত্রের ইঙ্গিত দেওয়া।যে ছেলেটা আজ অব্দি কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকায়নি তাকে নোংরা ইঙ্গিত করলো এই মেয়ে।এটা ভেবেই সাদির রাগ মাথায় উঠে গেলো। সামান্য একটা কারন নিয়ে কত কিছু হচ্ছে।সাদির মেজাজ এবার তুঙ্গে পিহুর গালে ঠাটিয়ে পর পর দুইটা চড় দিলো সাদি।এত বাজে মন্তব্য কোনো দিন কেও করেনি এই মেয়ে যা করলো ছিহ।
সাদির চড় খেয়ে পিহুর দুনিয়া ঘুরে উঠলো একে তো রাতে খাই নি সকালে খাইনি তার উপর সকাল থেকেই এই মার খাচ্ছে।সাদি ক্রোধিত কন্ঠে বলে উঠলো…
-“তোরে একদম জানে মেরে ফেলবো কি বলছিস তুই মাথা ঠিক আছে তোর।বেশি লাই দেই বলে কি যা ইচ্ছা তাই বলবি তুই।
-“আমি বললে দোষ,,আসলে সত্যি বললে গায়ে লাগবেই সাভাবিক।আমার ভাবতেই ঘৃনা লাগছে বাবাই মামুনির মতো মানুষের ছেকে আপনি ছিহ।
সাথে সাথে পিহুর গালে আচড়ে পড়ে আরো একটা চড়।
পিহু এবার কান্না করে দেয়।আর সামলাতে পারে না।ভাঙা কন্ঠে বলে..
-“মারতে মারতে মেরেই ফেলেন।আমার দুনিয়াই তো কেও নেই এতিম বলেই এতো মারেন আমারে।সবাই আমাকে ছেড়ে চলে গেছে আর আমাকে রেখে গেছে আপনার হাতের মার খেয়ে মরার জন্য মারেন।
-“স্টপ খুব মাথাই উঠেছিস থাম মার খাস না আর..!
-“কি স্টপ আমারে মারতে খুব ভালো লাগে।আমি আছি বলে খুব বিরক্ত আপনি আপনার বাবা মায়ের উপর ভাগ বসাই তাই না আমি না থাকলে ভালো হতো তাইনা।ওকে নো প্রবলেম আমারে আর দেখবেন না আমারে অনেক লাই দিয়ে মাথাই তুলেছেন তাই আমি যা ইচ্ছা বলি তাইনা।আর বলবো না।
কথা টুকু বলেই পিহু দুর্বল চিত্তে হেটে হেটে পা বাড়ালো নিচে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। সাদি বুজলো যা মাথাই এসেছে ফাও বক বক করেছে।সে আগেই বুজেছে মেয়েটার জর চলে এসেছে ইতিমধ্যে। সআদি পিছু তাকালো পিহু নিচে চলে গেছে।এদিকে পিহু রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিলো।
হসপিটালে হাত পা ভেঙে পড়ে আছে নাবিল।কিছু পুলিশ জিজ্ঞাসা করছে পাশে। অন্য পাশে তার বাবা বসে আছে।আর তার মা কিছুক্ষন পর পর কেদে উঠছে।নাবিলের ডান হাত আর বাম পা ভেঙে গিয়েছে। ভোর বেলা মসজিদ থেকে যখন নামাজ পড়ে ফিরছিলো তখন হটাৎ একটা কালো গাড়ি এসে তাকে তুলে নেই।গাড়ির মধ্যে মিনিমাম পাচ চয় জন ছিলো। তারা এক নির্জন স্থানে গিয়ে নাবিল কে বিনা কারনে লাগাম ছাড়া মারধর শুরু করে।
সবার মুখেই কালো মাস্ক সাথে চারিপাশ অন্ধকার হওয়াই নাবিল কাওকে চিনতে পারেনি।হাত পা ভাঙার যন্ত্রনা নিয়ে যখন নাবিল প্রায় সেন্সলেস তখন তাকে এই হসপিটালের বাইরে ফেলে দিয়ে যায় কালো গাড়ির সেই লোকেরা।আর এক্টু আগে সেন্স ফিরেছে।
একজন পুলিশ নাবিলকে জিজ্ঞাসা করে উঠলো আপনার কি কাওকে সন্দেহ হয়।এমন মার্ডার টাইপ কেচ করার চেষ্টা। কিডন্যাপ+মার্ডার। নাবিলের কন্ঠে কাতরতা কিছু বলতে পারছে না আর।
চলবে…..
-(আজ একটু মারামারি টা বেশি হয়ে গেলো।আগামী কাক থেকে সাদির স্ট্রং পারশোনালিটি ফিরিয়ে আনবো রাগ কমিয়ে দিবো।আজকের পর্ব কেমন হয়েছে বলে যাও।কেও বাজে মন্তব্য করবেন না)-
Share On:
TAGS: নিষিদ্ধ চাহনা, সারা চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৩
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১৩
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১২
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৩
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১৫
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৬
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ২৩
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৭
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৫