Golpo romantic golpo অন্তরালে আগুন

অন্তরালে আগুন পর্ব ৩২


অন্তরালে_আগুন

পর্ব:৩২

তানিশা সুলতানা

ভোটের ফলাফল বেরিয়ে গেছে। বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে নায়েব তালুকদারের দল। চারিদিক আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছে। মিষ্টি বিতরণ করা হচ্ছে গোটা মানিকগঞ্জ জুড়ে। চিৎকার চেঁচামেচি বাজি ফুরানোর আওয়াজ সব মিলিয়ে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গেছে। অভি বহুক্ষণ আগেই ঢাকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে। রাজনীতিতে তার আগ্রহ বরাবরই কম। এখনো ভোটে জয়ী হলেও কি না হলেও কি? এসবের মাথাব্যথা নেই। তবে নেহাল এবং নূপুর জোর করেই তাকে ঢাকা পাঠিয়ে দিয়েছে। নওয়ান তালুকদার মানুষটা বড্ড খারাপ। জয়ী হওয়ার পরে সে ভয়ংকর কিছু করতে পারে অভির সঙ্গে।
নূপুর নিজ কক্ষের সঙ্গে যুক্ত ছোট্ট বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। মনটা তার বড্ড খারাপ। সেই সঙ্গে গালে পোড়া দাগ। বড্ড যন্ত্রণা দিচ্ছে। তার চাঁদের মত সুন্দর মুখে দু দুটো কলঙ্কের দাগ। দুটোই নওয়ান তালুকদারের দেওয়া। মানুষটা জীবনে আসার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শুধু আঘাতই করে গেল। হয়তো যতদিন থাকবে আঘাতই করে যাবে।
বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে নুপুরের। আসমান পানে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলে
“আমার হৃদয়ে ঘৃণাশক্তি বেড়ে যাক। পাথরের মত শক্ত হতে চাই আমি। কারো ভালোবাসা কিংবা ঘৃণা যেন আমায় ছুঁতে না পারে।

এমটি শাহাবুদ্দিন এবং তার কন্যার মৃত্যু সেই ভিডিওটা বারংবার দেখেছে নূপুর। কিছু প্রমাণ সংগ্রহ করে ফেলেছে। কিন্তু এটুকু প্রমাণ দিয়ে নায়েব তালুকদারকে ঘায়েল করা সম্ভব নয়। উল্টে নূপুর নিজেই ফেঁসে যাবে।
শক্ত পোক্ত কিছু প্রমাণ চাই। আর সেই প্রমাণ গুলো নূপুর শিকদার জোগাড় করেই ছাড়বে। আর ১৫ দিন পরে শপথ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারটা দখল করবে নায়েব তালুকদার। এরই মধ্যে নূপুর কে কিছু করতে হবে।
ভাবনার মাঝেই খুব সুন্দর একটা কন্ঠস্বর ভেসে আসে তার কানে। বড্ড চেনা এই গানটা এবং মানুষটা।

বড্ড কানে লাগছে গানের সুর। নূপুরের কক্ষের ডান পাশের জানালা খুললে বেওথা ব্রিজটা স্পষ্ট দেখা যায়। নূপুর দৌড়ে গিয়ে জানালা খুলে। দেখতে পায় বেথু ব্রিজের উপর নওয়ান তালুকদার বসে আছে।
হাতে গিটার আর ঠোঁটের ভাজে সিগারেট। ল্যাম্পপোস্টের আলোতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মানুষটার মুখটা। অবাক করা বিষয় হচ্ছে আজকের সাথে কোনো বডিগার্ড কিংবা বল্টু নেই।
রাত দুইটা বেজে ৫৫ মিনিট। এত রাতে লোকটা এখানে কি করছে? দেখেও তো স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না।
নূপুরের কি হলো কে জানে সে ওড়না দিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে বেরিয়ে পড়ে নিজ কক্ষ থেকে। খুব সাবধানে দরজা খুলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। জোসনা রাত। আকাশে থালার মতো বিশাল চাঁদ উঠেছে। সেই চাঁদের আলোতে পৃথিবী আলোকিত। তাছাড়া রাস্তায় শ খানিক ল্যাম্পপোস্ট তো আছেই।
“আসমানে যাইও না বন্ধু ধরতে পারবো না তোমায়
পাতালে যাইও না বন্ধু ছুঁইতে পারবো না
বুকের ভেতর রইও রে বন্ধু
ছাড়িয়া না যাইও
অন্তরে অন্তর মিশিয়ে বিরহের গান গাইও।

নূপুর নওয়ানের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই গান থেমে যায়। বন্ধ আঁখি পল্লব খুলে। বড্ড মায়া মায়া নয়নে কিছু মুহুর্ত তাকিয়ে থাকে চাঁদের মুখ পানে। অসম্ভব লাল হয়ে আছে লোকটার চোখ দুটো। শুকনো অধর। ফর্সা নাকটাও টকটকে লাল। বড় বড় চুল গুলো বড্ড এলোমেলো হয়ে কপালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

“আমায় একটু ছুঁয়ে দেখো চাঁদ।

নুপুর শক্ত স্বরে জবাব দেয়
“পাপিকে ছুঁলে পাপ লেগে যাবে না?

নওয়ান দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
” হুমম
আমি একটু ছুঁই?
বড্ড ছুঁতে ইচ্ছে করছে।

নুপুর মুখে কিছু বলে না তবে দু পা এগিয়ে আসে।
নওয়ান হাতের গিটার পাশে রেখে ঠোঁটের ভাজ থেকে সিগারেট ফেলে দেয়।
নিজের শক্তপোক্ত পুরুষালী হাতটা এগিয়ে নূপুরের নরম তুলতুলে হাতখানা ধরে। একটু টেনে কাছাকাছি আনে ওকে। কিছু মুহুর্ত মুখ পানে তাকিয়ে সিগারেটে পোড়া গোলাপী ওষ্ঠ ডুবিয়ে চুমু খায় নূপুরের ললাটে। দীর্ঘ চুমু। কপালে ওষ্ঠ মিলিয়ে কতটা মুহূর্ত সেভাবেই পড়েছিলো কারোরই জানা নেই।
নুপুরের কান্না পায়। আঁখি পল্লব টলমল করে ওঠে। এদিক ওদিক দৃষ্টি ফিরিয়ে চোখের পানি আটকায় সে। এবং আবদারের স্বরে বলে
“আমি আপনার সঙ্গে থাকতে চাই। আপনার বাড়িতে যেতে চাই।

নওয়ান শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নুপুরকে। ঘাড়ে মুখ গুঁজে বড্ড সরল গলায় বলে
“আমার বাড়িটা তোমার জন্য ঠিক নয়। তোমার আমার এক সঙ্গে থাকাটাও উচিত নয়। আমি পাপ তুমি পবিত্র
আমরা একসাথে থাকলে সেটা ভালো হবে না। আমি চাইনা তোমার কোন ক্ষতি হোক।

নওয়ান শরীর প্রচন্ড গরম। লোকটার অনেক জ্বর। তবে এই মুহুর্তে আহ্লাদ দেখালে চলবে না। তালুকদার বাড়িতে ঢুকতে হবে। যে কোনো উপায়ে।

“প্লিজজ
আপনার কাছে আমার শেষ আবদার।

নওয়ান হাসে। ছেড়ে দেয় নুপুরকে।
” তুমি আমায় শাস্তি দিতে চাও? প্রমাণ জোগাড় করতেই আমার বাড়িতে ঢুকবে।
চাঁদ এসবে জড়িও না। আমি নওয়ান তালুকদার শাস্তি আমার জন্য না।
গোটা দুনিয়া আমার পায়ের নিচে।

নুপুর ঠোঁট বাঁকিয়ে বিরবির করে বলে
“খাটাশ। জ্বরে আধমরা হয়ে আছে অথচ অহংকার কমে নি। বেয়াদব একটা।

নুপুর চলে যেতে নেয়। পেছন থেকে নওয়ান বলে
“আমি আছি তো
তোমার ইচ্ছে পূরণ করে দিবো।
শাস্তিকে ভালোবাসায় বদলে দিবো অতি দ্রুত।

” আপনাকে ভালোবাসার আগে আমার মৃত

বাকিটা বলতে পারে না নুপুর। বলতে ইচ্ছে করলো না। ভালোবাসা মন্দ নয়।
মানুষের পেশা বা চরিত্র বিচার করে কি আর ভালোবাসা হয়?


ক্ষমতার পাওয়ার কতটা ভয়ংকর হতে পারে সেটা তালুকদার বাড়ির সকল পুরুষদের না দেখলে কখনো জানাই যেত না। এই যে এখনো শপথ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেনি নায়েব তালুকদার তবুও ক্ষমতার জোরে মাটিতে পা পড়ছে না। আগামী এক বছরের প্ল্যানিং করে ফেলেছে সে। নওয়ান তালুকদারকে বিদেশে পাঠিয়ে দেবে। তারপর সবার আগে শেষ করবে নুপুর সিকদার নামক মেয়েটিকে। অবশ্য আজকেই মেয়েটির শেষ দিন। গোটা বাংলাদেশ যেখানে নায়ের তালুকদারের পায়ের তলায় সেখানে ওই মেয়েটি তার চোখে চোখ রেখে কথা বলে। বিন্দু পরিমান ভয় পায় না।
ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আঁখি পল্লব বন্ধ করে কিছু একটা চিন্তা করছেন তিনি। তারপর টি-টেবিলের ওপরে থাকা ফোনটা হাতে নিয়ে নিজের নতুন নাম্বার দিয়ে মেসেজ পাঠায় নুপুরের নাম্বারে
” দৌলতদিয়া খারাপ পল্লিতে আনু রয়েছে। আজকে তাকে বিদেশে পাচার করা হবে।
যদি আনুকে বাঁচাতে চাও তাহলে দুই ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে যাও সেখানে।

মেসেজের সাথে আনুর কিছু ফটোও পাঠায় নুপুরের হোয়াটসঅ্যাপে।
কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে ছিলো সবে নুপুর। তখনই এমন একটা নিউজ পেয়ে পাগল হয়ে যায়। কোনদিন চিন্তা ভাবনা না করেই ছুটতে থাকে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে। সিফাত কিংবা নেহাল অভি কেউ একজনকে জানিয়ে যাওয়ার কথা বেমালুম ভুলেই যায়।
একটা সিএনজি ভাড়া করে আধ ঘন্টার মধ্যে পাটুরিয়া উপস্থিত হয়। সেখান থেকে স্পিডবোর্টে ওঠে। আগে থেকেই বোর্ড ভর্তি ছিল তাই নুপুর উঠতেই সেটা চলতে শুরু করে। কোথায় যাচ্ছে সেটা জানা নেই। আর নূপুর যেহেতু প্রথমবারের দিকে যাচ্ছে সেজন্য সেও বুঝতে পারে না সঠিক রাস্তায় যাচ্ছে কিনা।
মাঝ নদীতে যেতেই একটা মহিলা নুপুরের হাত থেকে তার ফোনটা নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয় নদীতে। ভুরু কুঁচকে মহিলাদের মুখপানে তাকাই ও।দেখতে কেমন অদ্ভুত। তবে বড্ড চেনা চেনা লাগছে। কোথাও একটা দেখেছিল তাকে।
কিন্তু কোথায় দেখেছি সেটা অ্যাকচুয়ালি মনে পড়ছে না।
ঘন্টাখানেকের মধ্যে স্পিডবোট এসে থামে অজানা একটা জায়গায়। এটা নিশ্চয়ই কোন ফেরিঘাট নয়।
আশেপাশেও কোন মানুষ নেই বাড়ি ঘর তো নেই ই। নুপুর শুধু চোখ ঘুরিয়ে চারিপাশটা দেখতে থাকে।
একে একে সবাই নেমে পড়ে স্পিডবোট থেকে। নুপুর কেউ নামতে বলা হয়। গন্তব্য নাকি এখানেই শেষ।
নুপুর মৃদু হেসে জবাব দেয়
“গন্তব্য সবে শুরু
এর শেষটা গিয়ে থামবে মৃত্যুর দার প্রান্তে।

ছোট্ট জঙ্গলটা পেরুলেই মেইনরোড দেখা যাচ্ছে। সেখান দিয়ে শতশত গাড়ি চলাচল করছে।
বিশাল বড় আকারের একটা ট্রাক। সে ট্রাকে উঠতে বলা হয় ওকে। এবং এটাও বলা হয়
“ভেতরে আনু রয়েছে।

নুপুর কোন দিক চিন্তা ভাবনা না করেই ট্র্যাকের ভিতরে উঠে পড়ে। দেখতে পায় অনেকগুলো মেয়ে রয়েছে। সকলেরই হাতমুখ বাঁধা। এক কোনায় অনুকেও দেখা যায়। নুপুরের কান্না পায়। সে কান্না গিলে এগিয়ে যায় আনুর দিকে।
তাকে জড়িয়ে ধরে বসে পড়ে। নুপুরের স্পর্শে আনু বুঝতে পারে তার প্রাণপ্রিয় সখি চলে এসেছে। অনেক কথা বলার থাকলেও একটা কথাও বলতে পারেনা সে। শুধু চুপচাপ অনুভব করতে থাকে সখীর স্পর্শ।


গন্তব্যে পৌঁছতে পৌঁছতে অনেকটা সময় লেগে যায়। রাত আনুমানিক কয়টা বাজে জানা নেই নুপুরের। তবে অনুভব করতে পারে গাড়ি থেমে গেছে। কেউ একজন কথা বলছে গাড়ি ড্রাইভার এর সঙ্গে। নুপুর কান পেতে শোনার চেষ্টা করে তাদের কথা। তবে শুনতে সক্ষম হয় না।
এতক্ষণ খুব কনফিডেন্স থাকলেও এবার ভয় করছে নূপুরের। তাড়াহুড়ো করে এখানে চলে এসে ভুল করে ফেললে না তো?
তার জীবনটাও আনু এবং বাকি মেয়েদের মত হয়ে যাবে কি?
না না এটা হতে পারে না।
এই বিপদের মুহূর্তে নুপুরের মনে পড়ে নওয়ানের কথা। আবারও ভরসা করতে ইচ্ছে করছে মানুষটাকে। মনে হচ্ছে সে আসবে
নুপুর সহ সবগুলো মেয়েকে বাঁচিয়ে নিতে মানুষটাকে আসতেই হবে।
গতকাল রাতে লোকটা নুপুরকে বুকে জড়িয়ে বলেছিল
“আমি আছি তো”
তার ওই কথাটা এক আকাশ সমান ভরসা জোগাচ্ছে নুপুরের মনে।


নুপুর শিকদারের নিখোঁজ বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা মানিকগঞ্জ জুড়ে। অভি ঢাকা থেকে ছুটে এসেছে মানিকগঞ্জ। তাকে মূলত সিফাত কল করেছিল। এবং এটাও জানিয়েছে নুপুর কোথায় থাকতে পারে।
নাসির সবে একটু সুস্থ হয়েছিল মেয়ের নিখোঁজ বার্তা শুনে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। নেহাল পাগলের মতো এদিক ওদিক খুঁজে চলেছে নুপুরকে। যাকে পাচ্ছে তাকে ধরেই নুপুরের ফটো দেখাচ্ছে এবং জিজ্ঞেস করছে এই মেয়েটিকে দেখেছে কিনা।
বসে নেই নওয়ান।
সে নায়েব তালুকদারের কাছে গিয়ে বলে
“বাবা আমার চাঁদকে লাগবে। আমি ওকে ভীষণ ভালোবাসি।
কোথায় রেখেছো ওকে?
ফিরিয়ে দাও বাবা। আই প্রমিজ আমার চাঁদ রাজনীতির ব্যাপারে একটা কথাও বলবে না।।

নায়েব ব্যথিত সরি বলে
“আব্বা আমি সত্যি জানিনা মেয়েটা কোথায় আছে। ভোট শেষ হয়ে গিয়েছে আমিও জিতে গেছি। এখন আর ওই মেয়েটা বা তার পরিবারের উপর আমার কোন রাগ নেই।
আমি তো ভেবেছিলাম কাল-পরশু ওদের বাড়িতে গিয়ে সরি বলে আসবো। কিন্তু মেয়েটা কোথায় চলে গেল?

নওয়ানের যা বোঝার তা বোঝা হয়ে যায়। সে সিগারেট টানতে টানতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। স্নেহা তাকিয়ে থাকে। মেইন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকে নওয়ানের চলে যাওয়া। কতটা কষ্ট পাচ্ছে লোকটা। তোর চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। চাঁদকে হারানোর দুঃখে কেঁদেছে বোধহয় সে?
আল্লাহ মানুষটার চাঁদকে পাইয়ে দিন।
তার ভাগ্যের সবটুকু দুঃখ আমায় দিয়ে পৃথিবীর সর্ব সুখী করে দিন তাকে।।
তার দুঃখ বা মন খারাপ আমার হৃদয়টাকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।

মিরা মেয়ে শুকনো মুখখানা দেখতে থাকে। কেন জানি বড্ড মায়া হচ্ছে মেয়েটার। এই প্রথমবার তার মনে হচ্ছে
“আল্লাহ তার মেয়েটাকে একটু সুখ দিলেও পারতো। নওয়ান তালুকদার স্নেহা তালুকদারের হলে মন্দ হতো না।


রাত আড়াইটা বেজে গেছে। ঘুম নেই কারো চোখেই। অভি সিফাত এবং নেহাল ছুটে এসেছে দৌলতদিয়া। সেই খারাপ পাড়ায় আসতেই দেখতে পায় নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। মানুষ তো দূরের কথা একটা পশু পাখিও এখানে উপস্থিত নেই।
হতা শুয়ে পড়ে ওরা তিনজন। নেহাল চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। হাঁটু মুরে বসে পড়ে মাটিতে। সাফিনেরও কান্না পাচ্ছে তবে বহু কষ্টে কান্না আটকে রেখেছে।
অভির হাত পা কাঁপছে। কাঁপাকাঁপি হাতে সে কল করে বাবার নাম্বারে।
ওপাশ থেকে বলে
“আমি পুলিশ ফোর্স লাগিয়ে দিয়েছি। ওনারা যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। কিন্তু মেয়েটার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

অভি চিল্লিয়ে বলে ওঠে
“পাচ্ছিনা পাবো না
হচ্ছে না হবে না
এসব বলে কিচ্ছু হবে না। আমার নুপুর কে চাই। কোথা থেকে খুঁজে আনবে আমি জানিনা। কিন্তু আমার ওকে সেফলি চাই।

“বাবু তুমি একটু রিলাক্স হও। আমরা পেয়ে যাব ইনশাল্লাহ।

কল কেটে দেয় অভি। মাথা খাটিয়ে চিন্তা করতে থাকে কোথায় যেতে পারে এতগুলো মেয়ে?
আর নূপুর তো শান্ত থাকার মেয়ে নয়।

চলবে

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply