#তখনও_সন্ধ্যা_নামেনি
#ফারহানা_কবীর_মানাল
রাতের বাকি অংশে দু’চোখের পাতা এক করতে পারলাম না। কোথাও খুব বড় একটা সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা ধরতে পারছি না। সমস্যার ভেতরে জড়িয়ে যাচ্ছি। নানান চিন্তার শেষে ভোর ভোর চোখটা একটু লেগে এসেছিল। মা এসে ডেকে তুললেন। অসম্ভব কোমল গলায় বললেন, “ফজরের নামাজ পড়। আল্লাহর রহমত ছাড়া কিছু হয় না।”
বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করল না। কোল বালিশ জড়িয়ে ধরে চোখ মেললাম। মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মুচকি হাসলেন। সেই হাসি দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগল। আমি আমার জীবনে এত সুন্দর হাসি দেখিনি।
বাথরুমের কলের পানি ঠান্ডা। ভোরের দিকে শীত পড়তে শুরু করেছে। খালি গায়ে দাঁড়ানো যাচ্ছে না।
ফজরের নামাজ শেষে মা আবারও আমার ঘরে এলেন। হাত ধরে আমাকে একটা জায়গায় নিয়ে গেলেন। বাড়ির সামনের এই দিকটায় প্রতিদিন ঝাঁট দেওয়া হয়। আব্বার ক’ব’রের আশপাশ খুব পরিষ্কার থাকে। মা নিজের হাতে পরিষ্কার করে রাখেন। একটু হেঁটে বাবার ক’ব’রের সামনে এসে দাঁড়ালাম। মনের ভেতরে কেমন একটা লাগছে। শীতল বাতাস বইছে যেন। চোখজোড়া আদ্র হয়ে আসছে। দু’হাতে নিজের মুখ ডেকে ফেললাম। মা বললেন, “তোর আব্বা বেঁচে থাকলে আজ খুব খুশি হতো। তার কত শখ ছিল দু’টো ছেলের কামাই রোজগার দেখবে। সংসার ছেলেপুলে দেখবে। কপালে হলো না।”
মায়ের কথা জবাব দিলাম না। চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। ছোট বেলার স্মৃতি খুব একটা মনে নেই। আব্বা সবসময় যে কোন দুই ভাইবোনকে নিয়ে ঘুরতে যেতেন। আমি তার ডান হাত ধরে থাকতাম। সবসময়ই ডান হাত ধরতাম। সেবার এই ছোট আপা সাথে খুব মা’রা’মা’রি লাগল। আপা কিছুতেই আমাকে আব্বার ডান হাত ধরতে দেবে না। রেগেমেগে মাঝ রাস্তায় শুয়ে পড়লাম। সে কী কাহিনি! আব্বা নেই অনেকদিন হলো। তাকে মনে পড়লেও বুকে লাগেনি। আজ খুব বেশি মনে পড়ছে না। বুকে লাগছে।
অফিসে আমার জন্য যে রুমটা বরাদ্দ করা হয়েছে তাতে এসি লাগানো আছে। এই মুহুর্তে এসিটা বন্ধ করে রাখা। আমার কাছে রিমোট নেই। মঞ্জুর রিমোট আনতে গিয়েছে। এখনও ফেরেনি। তুহিন ভাই দরজা ঠেলে ঘরের ভেতরে ঢুকল।
“তুহিন ভাই আপনি! অফিসে কখন এলেন?”
“মাত্রই এসেছি। ভাবলাম তোমার সাথে দেখা করে যাই।”
“তা ভালো করেছেন। চা খাবেন? চা আনিয়ে দেব।”
“নজু, তুমি বোধহয় ভুলে যাচ্ছ আমিও এই অফিসে চাকরি করি। ইচ্ছে করলে নিজেই এক কাপ চায়ের অর্ডার দিতে পারি। তোমার বলার প্রয়োজন নেই।”
“তা নিশ্চয়ই পারেন। তবুও সৌজন্যতা দেখাতে ভালো লাগে।”
“তোমার আপা কেমন আছে?”
“ভালো আছে। জারিফের শরীরও বেশ ভালো। সারাদিন হেলেদুলে বেড়ায়।”
“তা বেশ। শাশুড়ি আম্মার শরীর কেমন?”
“মায়ের শরীর ভালো। আজকাল মনও ভালো মনে হচ্ছে। নিজের পোষা মুরগির ধরে ধরে জ’বা’ই করছে।”
“তোমাকে একটা কথা বলি। নিজের ছোট ভাই মনে করেই বলছি। অন্যভাবে নিও না।”
“জ্বি বলুন।”
“তুমি অফিসে নতুন এসেছ। সব বিষয়ে কৌতুহল দেখাবে না।”
“দেখাব না।”
“মেয়ে কলিগদের থেকে একটু দূরে দূরে থাকবে। অবিবাহিত ছেলেপেলেদের বিশ্বাস হয় না। যে কোন সময় যে কোন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারে।”
“বিবাহিতরা পারে না?”
“না, তাদের বউ সংসার থাকে। ইচ্ছে করলেও সব সম্ভব হয় না।”
“তুহিন ভাই, অনুরিমাকে আমার ভালো লাগে।”
তুহিন ভাই চমকে আমার দিকে তাকাল। ব্যস্ত গলায় বলল, “তোমার যা ভালো লাগে করতে পারো। কাউকে আমার পরিচয় দিবে না। মানসম্মান গেলে তোমার যাক।”
আমি ফিকফিক করে হেঁসে ফেললাম। তুহিন ভাই ভ্রু কুঁচকে ফেলল। হাসতে হাসতে বললাম, “মজা করেছি। আপনি তো সবকিছু সিরিয়াসলি নিয়ে নিয়েছেন।”
তুহিন ভাই ছোট্ট করে ওহ আচ্ছা বলল। তারপর বেরিয়ে গেল। এসির রিমোট পাওয়া গেছে। রিমোট কাজ করছে না। মঞ্জুর ব্যাটারি কিনতে বাজারে ছুটেছে। যাওয়ার আগে চিবুক বুকের সাথে ঠেকিয়ে বলেছে, “বড় স্যারকে বলে দিয়েন না। যেতে আসতে দুই মিনিট লাগবে।”
তুহিন ভাই নিজের টেবিলে বসে আছে। তাকে দেখে ভীষণ উদাস মনে হচ্ছে। সরল সরল চেহারা। এই চেহারা সত্যি না। সরল রূপের পেছনে একটা কুৎসিত রূপ আছে। ছোট আপা সেই রূপটা জানে। তবে কাউকে বলছে না। কেন বলছে না সে-ও এক রহস্য। মাঝরাতে কে আমাকে হুমকি দিচ্ছে সে-ও এক রহস্য। ওই নম্বরের মালিকের কূল কিনারা করতে হবে। আমার এক বন্ধু আছে, সে এসব ব্যাপার খুব ভাল বোঝে। অফিস শেষ ওর কাছে একবার যাব। ছেলেটা ভালো। অমায়িক মানুষ।
দুপুরে খাওয়ার সময় অনুরিমার সাথে দেখা হলো। তবে সে আমার সাথে কোন কথা বলল না। তুহিন ভাইয়ের সাথেও না। দু’জনে চুপচাপ খেয়ে বেরিয়ে গেল। ওরা বের হয়ে যেতেই কবির আমার কাছে এসে বসল। চোখ নাচিয়ে বলল, “ওভাবে কী দেখছ? পাখি অলরেডি খাঁচায় ব’ন্দী।”
“এ কথা মানে কী?”
“দেখো নজু। তুমি আমাদের সহকর্মী। ভাইয়ের মত। ভাইদের মধ্যে আপনি আজ্ঞে ব্যাপারটা আমার সাথে যায় না। তাই তুমি করেই বলছি।”
“বলুন।”
“অনুরিমার দিকে ওভাবে তাকিয়ে খুব একটা লাভ হবে না।”
“এ কথা কেন বলছেন? মেয়েটা বিবাহিত?”
“বাগদান হয়ে গেছে। অফিসের সবাইকে বলেছিল। আমিও গিয়েছিলাম।”
“ওহ আচ্ছা!”
“আজকাল তুহিনের সাথে খুব মিশছে। তবে আমার মনে হয় ব্যাপারটা লোক দেখানো।”
কবির আর কিছু বলল না। চুপচাপ উঠে চলে গেল।
অফিসে সবার সাথে কথা বলেছি। কর্মী ছাঁটাই-এর ব্যাপারটা এখনও কেউ জানে না। আমিও আগ বাড়িয়ে বলতে যাইনি। নিজের কাজকর্ম করে চলে এসেছি। সাজ্জাদের সাথে দেখা করতে হবে। নম্বরের ব্যাপারটা খোঁজ নেওয়া খুব জরুরি।
মিনিট দশেক দাঁড়ানোর পর সাজ্জাদের দেখা মিলল। পান খেয়ে দাঁত লাল করে ফেলেছে। কে বলবে এই ছেলে আর্মিতে চাকরি করে। সে আমাকে দেখে লালচে দাঁত বের করে হাসল। রসালো গলায় বলল, “হঠাৎ আমার কথা মনে পড়ল কেন?”
“কাজে এসেছি।”
“খুচরো আলাপের লোক তুই না। বল কী কাজে এসেছিস।”
“মাঝরাতে কেউ একজন আমাকে কল দিচ্ছে। পরপর দুই রাত দিয়েছে।”
“উঁহু! মেয়ে মানুষ নাকি?”
“মেয়ে মানুষ। তবে প্রেমালাপ করে না। হুমকি দিয়েছে।”
সাজ্জাদ ভ্রু কুঁচকে ফেলল। বিস্মিত গলায় বলল, “কী দেয়?”
তাকে গোটা ঘটনা খুলে বললাম। চাকরি পাওয়া, দুলাভাইয়ের সাথে দেখা, সবকিছুই বললাম। শুধু আপার ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলাম। সব শুনে সাজ্জাদ বলল, “নম্বরটা আমার কাছে রেখে যা। এই নম্বরে বিকাশ একাউন্ট খোলা থাকলে খুব সহজে দেখতে পারব। না হয় অন্য ব্যবস্থা করতে হবে। চিন্তা করিস না। খোঁজ নিয়ে দিতে পারব।”
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। যখন বলেছে খোঁজ নিয়ে দেবে, তখন দেবে। কার নম্বর জানলে ব্যাপারটা একটু পরিষ্কার হতো।
আকাশে মেঘ জমতে শুরু করেছে। বৃষ্টির আগে বাড়ি ফিরতে হবে। বাড়ির পাশের মুদি দোকান থেকে দুই প্যাকেট চানাচুর কিনে বাড়ির ভেতরে ঢুকলাম। তুহিন ভাই এসেছে। বিরিয়ানি এবং মিষ্টি কিনে নিয়ে এসেছে। মা খুব হাসিহাসি মুখ করে বললেন, “দেখ! ছোট জামাই কী করেছে। তোর চাকরি পাওয়া উপলক্ষে মিষ্টি কিনে নিয়ে এসেছে। ঘরে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আয়। খেতে দিচ্ছি।”
হাতমুখ ধুয়ে খেতে বসলাম। বড় আপা আমার পাশে এসে বসল। ফিসফিসিয়ে বলল, “তুহিন সাথে মিনুর কী ঝামেলা হয়েছে রে?”
“এ কথা কেন বলছ আপা? কী হবে!”
“কিছু একটা হয়েছে। মিনু কেমন কম কথা বলছে। তুহিন যে-সব খাবার দাবার এনেছে সেগুলোর কিছু ছুঁয়ে দেখেনি।”
“খায়নি বলছ?”
“শুধু নিজে খায়নি এমন না। জারিফকেও খেতে দিচ্ছে না।”
প্লেটের দিকে তাকালাম। বিরিয়ানির স্বাদ ভালো। ছোট আপা বিরিয়ানি খেতে খুব পছন্দ করে। ঝামেলা তাহলে বেশ ভালোই লেগেছে।
“কী হয়েছে কিছু জানিস নাকি?”
“তেমন কিছু জানি না।”
“তুহিনের ভাবসাবও ভালো ঠেকছে না।”
“কী বলতে চাইছ?”
“কিছু বলতে চাইছি না ভাই। তবে আমার খুব স’ন্দে’হ লাগছে। আচ্ছা এই বিরিয়ানিতে কোন ঝামেলা নেই তো?”
“কীসব বলছ? বিরিয়ানিতে কী ঝামেলা থাকবে? দোকান থেকে কিনে এসেছে। সবাই তো খেলো।”
“ভাবী খায়নি। বলেছে তার শরীর খারাপ।”
“আপা তুমি তো জানো, ভাবী এইসব তেলমশলার খাবার খায় না। ডাক্তার নিষেধ করেছে। পেটে চর্বি জমলে বাচ্চা হতে সমস্যা হবে।”
বড় আপা মুখ কালো করে ঘরের ভেতরে চলে গেল। ধীরেসুস্থে খাওয়া শেষ করলাম। বিরিয়ানিটা চমৎকার। পরপর দু’প্লেট খেয়ে ফেলা যায়।
বড় আপা স’ন্দে’হপ্রবণ মানুষ। সবকিছুতেই তার স’ন্দে’হ। ছোট ছোট বিষয়কেও খুব বড় করে দেখে। তবে এবার তার স’ন্দে’হ সত্যি হলো। সকাল হতেই বাড়ির সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো। রাতভর টয়লেটে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। মায়ের অবস্থা খুব খারাপ। একদম নেতিয়ে পড়েছে। স্যালাইন চলছে। বাকিদের অবস্থাও খুব একটা ভালো না। ছোট আপা, জারিফ আর ভাবী সুস্থ আছে। ছোট আপা বাড়িতে। রান্নাবান্না করে হাসপাতালে ভাত তরকারি পাঠাবে। ভাবী মায়ের পা চেপে দিচ্ছে। চোখ-মুখ মনে হচ্ছে সে ভীষণ ক্লান্ত।
আমার শরীর বাকিদের চেয়ে ভালো। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছি। নিজের ইমিউনিটি সিস্টেমকে নিয়ে গর্ব করতে ইচ্ছে করছে। সবাই কাহিল হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। আমি বিছানার সাথে হেলান দিয়ে বসে আছি।
অফিসে সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। নতুন চাকরি। এর মধ্যে কামাই হয়ে গেলে নিজের রেপুটেশন নষ্ট হবে। কিন্তু যাওয়ার উপায় নেই৷ স্যালাইন চলছে। শেষ হলে দুপুর। তাড়াহুড়ো করে ফোনটাও সাথে নিয়ে আসতে পারিনি। বাড়ির কেউ ফোন আনেনি। ভাবীও না। মহা সমস্যা পড়ে গেল।
আশেপাশে আর কাউকে দেখছি না। ওয়ার্ডের এই ঘরটায় একজনই বাইরের লোক। ভদ্রলোকের নাম আফজাল। হাড্ডিসার চেহারা। চোখ গর্ভের ভেতরে ঢুকে গেছে। সকাল থেকে বিরতিহীনভাবে কলা খাচ্ছে। আফজালের কাছ থেকেও তার মোবাইল ফোনটা ধার করার চেষ্টা করেছি। তার ফোনে টাকা নেই। ইমার্জেন্সি ব্যালেন্সও শেষ করে রেখেছে। বিরক্তিকর ব্যাপার।
বেলা এগারোটার দিকে আফজাল নিজের মোবাইলটা এগিয়ে দিলো। ক্লান্ত গলায় বলল, “আমার ছেলে টাকা রিচার্জ করে দিয়েছে। কথা বলতে চাইলেন বলেন।”
তার কণ্ঠস্বর খুব দূর্বল। এতটুকু কথা বলতেই হাঁপিয়ে গেছে। ফোন নিয়ে ছোট আপাকে কল দিলাম। আপা শরিফুল সাহেবের নম্বর জোগাড় করে দিলেন।
শরিফুল সাহেব অসুস্থতার খবর শুনে শোক প্রকাশ করলেন। আফসোস করে বললেন, “অফিস নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। হাসপাতালে থাকুন। বিশ্রাম করুন। ওষুধপত্র ঠিকঠাক খাবেন। সুস্থ হলে না হয় ওভার টাইম করে পুষিয়ে দিবেন।”
“জ্বি আচ্ছা স্যার।”
“কাঁচকলা খান বেশি করে। সেদ্ধ করে লবন দিয়ে খাবেন। কাঁচা চি’বি’য়ে খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। চিঁড়ে খান।”
“জ্বি স্যার।”
“দুশ্চিন্তা করবেন না। সময় পেলে আমি নিজে এসে দেখা করে যাব।”
“অনেক ধন্যবাদ স্যার।”
কথা শেষ। ফোন ফেরত দিয়ে মুচকি হাসলাম। আফজাল তার মুখখানা বিরস করে ফেলল। কাঠখোট্টা গলায় বলল, “ছয় টাকা নব্বই পয়সা খরচ হয়েছে। সাত টাকা দিবেন। দশ পয়সা ফোন চার্জ। টাকা পয়সা সাথে এনেছেন তো?”
“এনেছি।”
মানিব্যাগ থেকে দশ টাকার একটা নোট বের করে তার হাতে দিলাম। কৃতজ্ঞতার সুরে বললাম, “ফেরত দিতে হবে না।”
আফজাল থলে থেকে এক টাকার তিনটে কয়েন বের দিলো।
স্যালাইন শেষ হতে দুপুর। ছোট আপা ভাত তরকারি নিয়ে এসেছে। কাঁচকলা সেদ্ধ, কাঁঠালি কলা দিয়ে চিংড়ি মাছ, কাঁচা সাগরকলা দিয়ে মুরগির মাংস। পাকা কলাও এসেছি কিছু। খাবার দেখে হেসে ফেললাম।
“বাজারের কলা শেষ নাকি আপা? আরও ক’পদের নিয়ে আসতে পারলি না।”
ছোট আপা মুচকি হেসে বলল, “মলপোয়া কলা খুঁজেছিলাম। পেলাম না। নামটা তোদের সাথে বেশ যেত, কি বলিস?”
মা কঠিন মুখে আপার দিকে তাকালেন। ভাবী মুখে ঢেকে হাসতে শুরু করল।
বিকেলের দিকে সাজ্জাত দেখা করতে এলো। চোখ টিপে বলল, “পেট ঢিলে করে ফেললি কীভাবে?”
তারপরই মা দিকে তাকিয়ে লজ্জা পেল। চি’ম’টি কে’টে বলল, “আন্টি আছে আগে বলবি না?”
“বললে কী হতো?”
সাজ্জাদ দাঁত চিবিয়ে তাকাল। ফিসফিসিয়ে বলল, “নম্বরের মালিকের খোঁজ পেয়েছি।”
“বারান্দায় চল।”
বারান্দায় লোকজন নেই। একটা বাচ্চা ছেলে বল নিয়ে খেলা করছে। এককোণায় সরে দাঁড়ালাম। সাজ্জাদ বলল, “ওই নম্বর ‘মনোয়ারা খাতুন’ নামে কোন এক মহিলার নামে।”
চমকে ওর দিকে তাকালাম। ছোট আপার ভালো নাম মনোয়ারা খাতুন। ডাকনাম মিনু।
“কি হলো? ওভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?”
“আর কিছু বের করতে পেয়েছিস?”
“নাহ।”
আকাশে মেঘ জমেছে। চারপাশ অন্ধকার হয়ে এসেছে। সাজ্জাদ বেরিয়ে গেল। ছোট আপা জারিফকে কোলে নিয়ে মায়ের বেডে বসে আছে। তার চোখ-মুখ শান্ত। এই শান্ত মুখের পেছনে এমন কুৎসিত রহস্য লুকিয়ে রেখেছ? বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করল না।
চলবে
Share On:
TAGS: তখনও সন্ধ্যা নামেনি, ফারহানা কবীর মানাল
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE