সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি
neela_rahman
পর্ব_৭০
এখন আমি অনেক কিছুই বুঝি ।সাদাফ বললো,”তা আর কি কি বুঝিস শুনি ?এই যে ১৫-১৬ দিন পর যে তোর আমার বিয়ে হবে।
বিয়ে হলে কি কি হয় ?এগুলো বুঝিস? দেখি কতখানি পেকেছিস? উত্তর দে।”
নুর ল*জ্জা পেয়ে গেল ।সাদাফের বুকে আঙুল দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বলতে লাগলো ,”বিয়ে হলে আপনি আর আমি এক ঘরে থাকবো।”
সাদাফ নিজের বুকে অনুভব করছে নুরের ল*জ্জা নত মুখে প্রত্যেকটি কথা ।আঙুল দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নুর কথাগুলো বললেও যে কতখানি ল*জ্জা পাচ্ছে তা অনুভব করতে পারছে সাদাফ।
আরো একটু ল*জ্জা দেওয়ার জন্য সাদাফ নূরকে বললো ,”আচ্ছা তাই ?তা আমার ঘরের থেকে কি করবি শুনি? মানে স্বামী স্ত্রী এক ঘরে কেন থাকে কি করে বলতে পারবি?”
প্রশ্নটি শুনে সাথে সাথে নুর সাদাফের বুকে শার্টের অংশ খা*মচে ধরল ।সাদাফ অনুভব করলো নূরের আরো ল*জ্জা পাওয়া ।লজ*জায় গুটিয়ে যাওয়া।সাদাফ আর কিছুই বলল না ।বলল ,”ঠিক আছে বুঝতে পেরেছি বাকি ক্লাস পরে নেওয়া যাবে। এখন রুম থেকে যা না হলে কিন্তু আরো স*র্বনাশ হয়ে যাবে।
আর তোর বাপ এসে যদি দেখে তুই আমার রুমে তখন যে আরো কি কান্ড বাঁধিয়া বসবে তার ঠিক নেই।”
নূর সাথে সাথে মাথা তুলে বলল ,”আমার বাবা আপনার কি হয় ?”নীলা রহমান
সাদাফ মুচকি হেসে বলল,” শ্বশুর হয় ।বাবা হলে মির*জাফর এর মতো করতো না।যা এখন রুম থেকে বাহিরে যা।
আর শোন কফি তো ঠান্ডা হয়ে গেছে কফিটা আরেকটু কষ্ট করে গরম করে টেবিলে রেখে চলে যাবি আর আমার কাছে আসবি না যা।”
নুর বলল ,”ঠিক আছে আমি এখনি গরম করে দিচ্ছি ।”
বলেই বাহিরে চলে যাবে ওমনি সাদাফের দিকে তাকিয়ে কফির মগ টা হাতে নিয়ে বলল,” শুনুন?”
সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”কিছু বলবি নুর ?”
নুর বলল ,”বিয়ে হলে এক ঘরে থাকলে বাচ্চা হয় ।আমার অনেকগুলো বাচ্চা হবে আমার শখ।”
সাদাফের কাশি উঠে গেল নূরের কথাটি শুনে ।সাথে সাথে কাশতে কাশতে জিজ্ঞেস করলো,” এখন ঘরে থাকলেই বাচ্চা হয়?আর অনেকগুলো মানে ?কতগুলো ?”
নূর বলল ,”অনেকগুলো পুরো বাড়ি ভর্তি বাচ্চাকাচ্চা থাকবে আবার খুব শখ।”
সাদাফ বলল ,”তোকে তো আমি আসলে ভালো মনে করতাম। তুই তো অনেক ডে*ঞ্জারাস মেয়ে ।কি বুদ্ধি করেছিস আমার বুকে শুয়ে শুয়ে তাই না ?আমাকে দিন রাত খা*টিয়ে মা*রার ধান্দা ?ওসব চলবে না যা এক্ষুনি রুম থেকে বের হো ইচরে পাকা কোথাকার।”
নুর মন খারাপ করে বললো, ” আমি চাই মানে চাই।”
“তোর মামার বাড়ি মোয়া চাই মানে চাই? যা বের হো।তোর মতিগতি ঠিক নেই।পাকা মেয়ে কোথাকার।”কাশতে কাশতে বললো সাদাফ। নীলা রহমান
এদিকে আজ দুপুর লাঞ্চের পর অফিসে এসেছে হুমায়ুর রহমান ও ফজলুর রহমান ।কয়েকদিন ধরে সাদাফ যেতে না পারায় অফিসে কিছু জরুরী কাজ পেন্ডিং আছে তাই দুজন বাধ্য হয়ে এসেছে।
কিছু কিছু ফাইল দেখছিল ফজলুর রহমান দেখে বলল ,”এই মাত্র কয়েক দিনের সাদাফের উপর এত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি ভাইজান দেখেন এখন আর কোন কাজে হাত লাগাতে ইচ্ছে করছে না ।ছেলেটা একাই দেখেন সব কাজ কত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে রেখেছে ।”
হুমায়ুন রহমানের যেন গর্বে বুক টা ফুলে গেল ।যতই হোক ছেলের ভালো শুনলে কার না ভালো লাগে।
ছেলে মেয়ে যদি জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয় বা সে ছেলে মেয়ের কাজে যদি কেউ এতটা খুশি হয় যে সুনাম করে তাহলে যে কোন বাবা মায়ের গর্বে বুকটা চওড়া হয়ে যাবে । হুমায়ন রহমানেরও তাই হল ।
বিশেষ করে ফজলুর রহমানের মুখ থেকে শুনে কারণ এখন ফজলুর রহমানকে শুধুমাত্র ছেলের বাবা বলে মনে করে না হুমায়ুন রহমান কে সাদাফের হবু শ্বশুর ও মনে করে।
হুমায়ূন রহমান ফজলুর রহমানের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছিলেন ।খেয়াল করলেন ফজলুর রহমান ।মাথা তুলে বললেন ,”ভাইজান হাসছেন কেন কিছু বলবেন?”
হুমায়ূন রহমান বলল ,”না তোর মুখ থেকে সাদাফের তারিফ শুনে খুব ভালো লাগছে ।”ফজলুর রহমান বলল ,”আপনি মনে হয় ভুলে যাচ্ছেন ও আমার ছেলে ভাইজান ।যত কিছুই হয়ে যাক ও আমাদের বাড়ির ছেলে ওর একটা ভালো কাজ আমি কেন ভালো বলবো না ?হ্যাঁ ওর রাগ একটু বেশি সেটা ঠিক হয়ে যাবে আস্তে আস্তে।”
হুমায়ূন রহমান একটু সিরিয়াস হয়ে ফজলুরের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”ফজলুর একটা কথা উত্তর দিবি সত্যি করে ?”
ফজলুর রহমান জানে ভাইজান কি জিজ্ঞেস করতে পারে তাও বলল ,”জি ভাইজান বলেন ।”
হুমায়ূন রহমান ফজলুর রহমানের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”তুই কি সাদাফের উপর এখনো রাগ ?”
ফজলুর রহমান মুচকি হাসলেন। হেসে বললেন ,”সাদাফের উপর আমি কখনোই রাগ ছিলাম না ভাইজান ।আপনি বিশ্বাস করবেন না সাদাফ আসলে আমার প্রথম সন্তানের মত ।প্রথম বাবা ডাক আমি ওর মুখ থেকে শুনেছি আর ও আমার অনেক আদরের।তাই কখনোই আমি ওর উপরে রাগ ছিলাম না।
ছেলে মেয়ের যদি কোন কিছু একটা ভুল হয় সে ভুলটা শুধরে দেওয়া উচিত। ওর একটা কাজ ভুল হয়েছে ভাইজান সেটা শুধরে দেওয়া আপনার এবং আমার দুজনেরই কর্তব্য এবং সেটাই করার চেষ্টা করছি।
আর এটা আমার মাথায় আছে ভাইজান আমি জানি আমার মেয়েটা ছোট্ট তবে ও সাদাফ কে ভালোবাসে এটা আমি জানি ভাইজান।
তাই আমার উপরে বিশ্বাস রাখেন আমি এমন কিছু করবো না যেন ছেলে মেয়ে দুইটা কষ্ট পায় ।তবে ছেলেটার একটু শিক্ষা হওয়া দরকার আছে ।সেটা আমি দিবো আপনি কোন ভাবে নাক গলাতে আসবেন না ।বলেছেন ও আমার সন্তান আমার উপরে ছেড়ে দিবেন।”
হুমায়ূন রহমান হাসলেন ।বললেন ,”আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে এবার তোর যা ইচ্ছা করতে পারিস তবে দিনশেষে যা বলেছি তাই।”
এদিকে সন্ধ্যা আটটা নাগাদ সাইমন বাড়িতে ফিরেছে ।ফিরে রুমের ভিতর রুমের অবস্থা দেখে অবাক হয়ে গেল ।সত্যি সত্যি শয়*তান মেয়েটা রুমে কিছু গোছগাছ করে দিয়ে যায়নি । সায়মন বড় আম্মু বড় আম্মু বলে কিছুক্ষন চেচাতেই সামিহা বেগম কাছে আসতে বলল ,”আম্মু আমার রুমের কি অবস্থা ?রিমা এগুলি গোছগাছ করেনি কেন ?”
সামিহা বেগম বললো,” তুই না বললি তুই এগুলো নিজে করবি? তো এখন নিজে নিজে করে নে ।রিমা কেনো করবে?”
বলে সামিহা বেগম নিচে চলে গেল রান্না ঘরের উদ্দেশ্যে।সায়মন তেড়ে গেল রিমার রুমের দিকে ।রিমার রুমের দরজা খোলাই ছিল ।সাথে সাথে রুমে ঢুকে জোরে দরজা পাল্লাটি লাগিয়ে দিল ।রিমা অবাক হয়ে তাকালো সাইমনের দিকে ।বলল ,”এটা কি ধরনের ব্যবহার? এতো জোরে দরজা লা*গালে কেন ?দরজা যদি ভে*ঙে যেত?”
সাইমন রাগে ক্ষোবে হিস শিস করতে করতে বলল ,”ভে*ঙে গেলে ভে*ঙে যেত ।তুই আমার রুমের অবস্থা এরকম করে রেখেছিস কেন ?তুই জানিস না আমার একদম পরিষ্কার গুছানো রুম পছন্দ?”
রিমা অব*জ্ঞা সুরে বলল ,”পছন্দ যখন যাও গুছিয়ে নাও আমার তো আর ঠেকা পড়ে নি তোমার রুম গুছিয়ে দেবার জন্য ।”
সাইমন বলল ,”ভেবে বলছিস তো?”
রিমা বলল ,”এত ভাবাভাবির কি আছে ?তুমি তো বলেছ আমি কি আর এমন কাজ করি ?যাও নিজেরটা নিজে করে নাও ।গুছিয়ে নাও ।”
সাইমন বলল ,”যা তোর সাথে আমার যা চুক্তি হয়েছিল সব বাতিল ।”
বলে ফোন হাতে নিয়ে প্রীতিকে ফোন লা*গালো ।ফোন ধরেই বলল ,”হ্যালো প্রীতি আমার বাসায় একটু জরুরী কাজ আছে আসতে পারবি?”
প্রীতি মেয়েটা সাইমনের সাথে পড়ে। একটু গায়ে পড়া স্বভাব ।সায়মনের প্রতি এট্রাকটেড। একটু চান্স দিলেই গলে যায় তাই সেই সুযোগটাই সাইমন আজ নিতে চাইল শুধুমাত্র রিমাকে জা*লানোর জন্য ।রিমা ফোন কা*টার সাথে সাথে সাইমনের দিকে রাগে তেড়ে গেল ।বলল ,”কি করলি তুই এটা?
তোকে তো আজক আমি …….বলেই সায়মনের উপরে চড়াও হলো রিমা ।সাথে সাথে সাইমন পা পিছলে পড়ে গেল বেডে। রিমা পরলো সায়মনের বুকের উপরে। এলোপাতাড়ি চ*রঘুষি মা*রতে লাগলো সায়মনের বুকে গলায়।
চলবে……….
Neela Rahman
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৩
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৯
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৯
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৯+১০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৫+৩৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৭+২৮
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪৮