সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি
neela_rahman
পর্ব_৬৭
নূর দৌড়ে পালাতে গিয়েও থেমে গেল ব্যান্ডেজ টাইট করার কথা শুনে ।তারপর পিছনে তাকিয়ে বলল ,”সত্যি সেজন্য ডেকেছিলেন ?আমি ভাবলাম…….
সাদাফ মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললো,” এদিকে আয় ব্যান্ডেজ টাইট করে বেধে দে না হলে দেখব রাতে খুলে গিয়েছে।”
নুর সরল মনে বিশ্বাস করে সাদাফের দিকে এগিয়ে গেল ।গিয়ে হাটু ভেঙে নিচে বসে সাদাফের ব্যান্ডেজ করা হাতটি ধীরে ধীরে নিজের হাতে নিল ।যেহেতু সাদাফ বিছানায় বসে ছিল পা ঝুলিয়ে তাই নুর নিচে এভাবে বসেছে ।
সাদাফ নুর কে দেখে মনে মনে ভাবছে ,”আসলেই অনেক চালাক হয়ে গিয়েছে ।আসলে একটু চু*মু খাওয়ার জন্য ডেকেছিল কিন্তু এখন কিছু করার নেই নিজের কথাকে সত্য বোঝাতে ব্যান্ডেজ টাইট করাতে হবে।
নুর ধীরে ধীরে সাদাফ এর হাতের ব্যান্ডেজ টা খুললো ।ব্যান্ডেজটা খুলে সাদাফের দিকে তাকিয়ে বলল ,”আচ্ছা এটা চেঞ্জ করে দেই ?দেখুন না একটু একটু ব্লাড লেগে গিয়েছে ।”নীলা রহমান লেখিকা
সাদাফ তাকিয়ে দেখলে আসলে একটু র*ক্ত তাই বলল ,”ঠিক আছে যা আলমারিতে ড্রেসিং এর সব উপকরণ আছে নামিয়ে নিয়ে আয়।”
নুর সাদাফের কথামতো এগিয়ে গেল আলমারির দিকে ।আলমারি খুলে ফার্স্ট এইড বক্সটা নামিয়ে এনে আবার নিচে বসতে গেলে সাদাফ বললো ,”বিছানার উপরে বস।এখানে বসে কম্ফোর্টেবল ফিল করবি ।”
নুর বিছানার উপরে বসে সাদাফের হাতটা ধীরে ধীরে ড্রেসিং করতে লাগলো।
ড্রেসিং করার সময় হঠাৎ সাদা ব্যথা পেলে নুর সাথে সাথে ক্ষত জায়গায় ফু দিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বললো,” কেন সেদিন নিজের হাতে এভাবে কষ্ট দিতে গেলেন ?
একটিবার আমাকে জিজ্ঞেস করতেন কি হয়েছিল ?তাহলে তো এত কষ্ট পেতে হতো না ।নিশ্চয় অনেক ব্যথা করছে নিশ্চয় অনেক জ্বালা করছে আপনার।”
বলে ঝরঝরিয়ে চোখের পানি ফেলে দিল নুর ।সাদাফ অবাক হয়ে গেল নুরের হঠাৎ কান্না দেখে ।ধীরে ধীরে ঝুকে এসে ভালো হাতে দিয়ে নুরের চোখে পানি মুছে বলল ,”পা*গলি কাদছিস কেন ?
তখন ব্যথা পেয়েছিলাম কিন্তু এখন এত ব্যথা হচ্ছে না ।আর এই যে তুই এত ভালোবেসে ফু দিয়ে দিলি সব জ্বা*লা শেষ হয়ে গেছে আমার।”
১০ মিনিট ধরে সাদাফের হাতের ব্যান্ডেজ টা চেঞ্জ করে নুর যেই ফার্স্ট এইড বক্সটি বিছানা থেকে তুলে আলমারিতে রাখতে যাবে ওমনি সাদাফ নুরের হাত ধরে ফেলল।
নূর জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সাদাফের দিকে ।ভেবেছে হয়তো কিছু প্রয়োজন সাদাফ এক হেচকা টানে নূরকে নিজের বুকে ফেলে পিছনের চুলগুলো মুঠি করে ধরে বলল ,” তুই একটু আগে ঠিকই ভেবেছিলি তোকে আমি একটু আ*দর করার জন্যই ডেকেছিলাম ।এত চালাক তুই কিভাবে হয়ে গেলি রে?
এখন বুঝতে যখন পেরেছিস তাহলে একটু আদর করে দেই না হলে আমার রাতে ঘুম ঠিকঠাক হবে না ।”
নুর বললো,” দেখুন আপনি…………আর বলে শেষ করতে পারলো না নুর।সাদাফ নূরকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ঠোঁটে একটি চুমু খেয়ে বসলো ।কিছুক্ষণ পর ধীরে ধীরে নূর পিটপিট করে চোখ খুলল ।সাদাফ নুর কে ছেড়ে দিয়ে নূরকে বললো ,”যা এবার ঘুমাতে যা।অনেক পেকেছিস।কিছু বলার আগেই সব বুঝে যাস।তাই বেশি বুঝার জন্য শাস্তি দিলাম।
একা নির্ঘুম রাত আমার কেন কাঁটবে?তোরও একটু কাটুক নির্ঘুম রাত।”বলেই নুরের চুল ছেড়ে দিলো সাদাফ।
নূর কাচুমাচু হয়ে কোনমতে সাদাফের বুক থেকে ঠিকঠাক মতো উঠে বসল ।বসে সাদাফের দিকে এক নজর তাকালো তাকিয়ে সাথে সাথে বলল ,”আপনি অনেক বড় একটা খারাপ লোক ।”
বলেই সাথে সাথে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল।
সাদাফ নুরের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থেকে হাসলো ।আর মনে মনে বলল ,”পা*গলি একটা আসলেই অনেক বুদ্ধিমতী হয়ে যাচ্ছে কে বলবে কদিন আগে এত বোকাসোকা ছিল নূর।”নীলা রহমান
পরদিন দুপুরে খাওয়ার সময় সামিহা বেগম ও নওরিন আফরোজ টেবিল গোছাতে গোছাতে সবাইকে তাড়া দিয়ে বললো,” সবাই তাড়াতাড়ি খেতে আসেন ।”সবাই তাড়াতাড়ি ড্রয়িং রুম থেকে উঠে খাবার টেবিলে চেয়ার টেনে বসলো।
নূর এসে আগের মতোই চেয়ার টেনে বসল সাদাফের পাশে ।আর নূর তো এখন জানে সাদাফকে খাইয়ে দিতে হবে যেহেতু সাদাফের হাত ভালো না।
সবাই একসাথে বসলে সায়মন ওরিমা পাশাপাশি বসলো ।সায়মন রিমার পায়ে একটি খোঁচা মারলে রিমা খুব জোরে সায়মনকে একটি লা*থি বসিয়ে দিল ।তবে আজ রিএকশন দেখালে ধরা খেয়ে যাবে তাই চুপচাপ ব্যথা হজম করে নিল আর মনে মনে ভাবল এর শাস্তি তুই পাবি রিমার দিকে তাকিয়ে।”
এদিকে সবাই কে নওরিন আফরোজ খাবার সার্ভ করছে ।সামিহা বেগম সাদাফের কাছে এসেই বলল ,”দেশি মুরগির ঝোল করেছি আর দেখ রান দুটো তুই খা । শরীর থেকে অনেক র*ক্ত গিয়েছে তোর এখন ভালো ভালো জিনিস খেতে হবে শরীরের র*ক্ত ফিরিয়ে আনার জন্য।সাথে সাথে সাদাফ বলল ,”আম্মু রান তো সায়মনের খুব প্রিয় ওকেই দাও।”
সাইমন ও সাথে সাথে বলল ,”হ্যাঁ আম্মু আমাকে দাও আমার রান ভীষণ পছন্দ যেহেতু সাদাফ ভাই খাবে না।”
সাথে সাথে সামিহা বেগম বলে উঠলেন ,”চুপ কর দিনভর খালি খাওয়া আর খাওয়া কি কা*জটা করিস তুই সারাদিন শুনি ?তোর সমস্ত কাজ তো রিমা করে দেয় ।দিতে হলে রি মাকে দিব তোকে কেন দিব?”
সাইমন মায়ের ব্যবহার দেখে অবাক হয়ে গেল ।তাও রিমার সামনে ।এরকম অপমান সহ্য হলো না সাইমনের ।বলল ,”ও কি এমন কাজ করে সারাদিন ?শুধু একটু ঘরটা গোছায় আর আমার কাপড়চোপড় গুলো পরিষ্কার করে গুছিয়ে রাখে ।এই তো ?এই কাজের জন্য এতগুলো কথা শুনতে হবে আর মুরগি রান ও দিতে হবে?”
রিমা সাথে সাথে বলল ,”ও এগুলো শুধুমাত্র একটু কাজ ?ঠিক আছে আগামী কালকে থেকে আগামী কালকে থেকে কেন আজকে থেকে এই সমস্ত কাজ তুমি করবে ।আর সবাই সাক্ষী আমাকে যেন না ডাকে কাজ করার জন্য।”
সাইমন রিমার দিকে তাকিয়ে বলল ,”ওকে তুই কাজ না করলে সাইমন মরে যাবে না ।ঠিকঠাক আমি আমার কাজ করে নিতে পারবো ।যেই না একটু কাজ করিস তার জন্য অনেক ভাব বেড়েছে তোর।”
সামিহা বেগম ধমক লাগিয়ে বললেন ,”চুপ বে*য়াদব সামনে কত মুরুব্বিরা আছে আর ঝগড়া শুরু করে দিয়েছে।এই সবাই খাও তো ।বলেই সাদাফ কে আবার বলল ,”তুই খা বাবা রান ন দুটো তুই খা ।ওদেরকে দিলে এখন ঝগড়াঝাঁটি কারাকারি শুরু হয়ে যাবে ।”
বলেই সাদাফ কে দুটো রান পাতে তুলে দিল ।নূর ধীরে ধীরে প্লেট টা নিয়ে মাংস বেছে বেছে সাদাফ কে ভাত খাইয়ে দিতে লাগলো ।ফজলুর রহমান আড় চোখে সবই খেয়াল করলো কিন্তু এখন বলার কিছুই নেই। প্রতিদিন নূর খাইয়ে দিচ্ছে তাই আজ হঠাৎ না করলে নূরের সন্দেহ হবে তাই চুপচাপ মাথা নিচু করে খাওয়ায় মনোযোগ দিল।
হুমায়ূন রহমান সাদাফ আর নুর কে এইভাবে দেখে তাকালো হতাশ হয়ে ফজলুর রহমানের দিকে ।তারপর দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে নিজেও খাওয়ায় মনোযোগ দিল ।আর মনে মনে ভাবল এই ছেলের জন্য যার কত কিছু দেখতে হবে আল্লাহই জানে।
চলবে………..
Neela Rahman
দুই একটা বানান ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন অথবা কমেন্টসে ধরিয়ে দিবেন ।পরে ঠিক করে নিব এই মুহূর্তে মাথা ব্যথা তাই বানান রিচেক করতে পারলাম না।
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৭+১৮+১৯
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১১+১২
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৮
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৫+১৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৫+২৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৫+৩৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি গল্পের লিংক