সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি
neela_rahman
পর্ব_৫৫
পরদিন সকাল ভোরবেলা হোটেলে গিয়ে উঠল সাদাফ ।এর মধ্যে পথে চারবার ফোন দিয়েছিল নুর ।থেকে থেকে খোঁজখবর নিয়েছে সাদাফ ।ঠিক আছে কিনা রাস্তায় কোথাও ক্ষুধা পেয়েছে কিনা খেতে পারছে কিনা।
হোটেলে এসে প্রথমে রুমের চারদিকে চোখ বুলালো সাদাফ ।অন্য কোথাও তেমন একটা ঘুম আসে না যখন বিদেশে ছিল তখন সেটা ওর নিজের বাড়ির মত হয়ে গিয়েছিল ।এখন হঠাৎ করে হোটেলে এসে উঠায় কেমন কেমন যেন লাগছে ।
সচিবায়ুগ্রস্ত কিনা একটু। বিছানা টেবিল চেয়ার সবকিছু চেক করে দেখলো কোথাও কোন ধুলাবালি আছে কিনা ।পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কিনা ।তারপর ব্যাগ থেকে কাপড় চোপড় বের করে ওয়াশরুমে গেল গোসল করার জন্য ।গোসল করতে হবে সারারাত জার্নি করে শরীরটা কেমন ঘামা ঘামা লাগছে ।
টানা ১০ মিনিট সময় নিয়ে গোসল করে ওয়াশরুম থেকে বের হল সাদাফ।বের হতেই দেখল বিছানার উপর মোবাইলটা জ্বলজ্বল করছে ।বাসে থাকার কারণে সাউন্ড মিউট করে রেখেছিল কিন্তু মোবাইল দেখে বুঝতে পারছে অবশ্যই নূর ফোন দিয়েছে।
সাদাফ সাথে সাথে হেঁটে এসে ফোনটি রিসিভ করে হ্যালো বলল এখনো সাদা শুধুমাত্র টাউয়েল পড়া চুল মুছেনি ।চুল বেয়ে বেয়ে টুপটুপ করে গাল বেয়ে গলায় বুকে পানি পড়ছে ।সাদাফের ক্লান্ত লাগছিল শরীরটা এসিয়ে দিল বিছানায়।
তারপর বলল হ্যালো ।কিন্তু ওপাশ থেকে নূর চুপচাপ শুধু ঘনঘন নিঃশ্বাসের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ।সাদাফ বুঝলো নূরের ভীষণ মন খারাপ সারারাত ঘুমাতে পারিনি হয়তো এখন ঘুম পাচ্ছে তাই সাদাফ ধীরে ধীরে বলল,”তোর নিঃশ্বাস এই শব্দ যে আমাকে মাতাল করে দেয়। you are my own personal brand of heroine only i consume you.
নূর সাথে সাথে জিজ্ঞেস করল মানে ?
সাদাফ মুচকি হাসলো ।তারপর বলল ,”আজকে সারাদিন এর মানে খুঁজে বের করবি খুঁজে তারপর আমাকে জানাবে কি বুঝতে পেরেছিস।
নুর সরল মনে প্রশ্ন করলো,”যদি বুঝতে না পারি ?”
সাদাফ হাসলো। হেসে বলল ,”তাহলে আই উইল কনজিউম ইউ ।”
নুর বলল ,”আর যদি পারি ?”
সাদাফ আবার বলল ,”তাহলে ইউ উইল কনজিউম মি।”
“আচ্ছা এখন ঘুমা ।সারারাত জেগে ছিলি ।আমিও ঘুমাবো ।ঘুম থেকে উঠে ফোন দিবি ।কেমন?”বললো সাদাফ।
নূর ঠিক আছে বলে ফোন রেখে দিল ।ফোনটি বালিশের পাশে রেখে ফোনের স্ক্রিনে একবার হাত দিল ।আজ রাতে ফোনের স্ক্রিনে সাদাফের ছবি সেভ করেছে নূর।
সাদাফের ছবিটি দেখতে দেখতে নূর ঘুমিয়ে গেল ।আসলেই সারারাত চোখের পাতা এক করেনি নুর।ঘুমাতে পারেনি বারবার শুধু সাদাফের কথা চিন্তা হচ্ছিল ।যখন কাছে ছিল তখন আসলে বুঝতে পারত না কিন্তু একটু দূরে গিয়েছে এখন যেন বুঝতে পারছে চাইলেই পাশের ঘরে আর সাদাফ ভাইকে এক সপ্তাহের জন্য পাওয়া যাবে না ।নূরের এই চিন্তাটাই যেন কেমন মনের ভিতরে বিঁধছে বারবার।
সকাল দশটা নূর এখনো ঘুম থেকে উঠেনি । স্কুল ছিলো।সাদাফ নেই তাই আজ যাবে না।কাল থেকে ড্রাইভার নিয়ে যাবে।নওরিন আফরোজ নুরের দরজা নক করছে খুলছে না নুর ।এখনো ঘুম এমন গভীর ঘুমিয়েছে টের ই পাচ্ছে না কেউ যে দরজা নক করছে ।সামিহা বেগম বললো ,”কি হয়েছে ভাবি ?”নওরিন আফরোজ বলল ,”দেখ না নুরকে এত ডাকছি উঠছে না।ও তো এরকম করে ঘুমায় না।”
সামিহা বেগম বললো ,”হয়তো তাহলে রাত জেগেছে ।”
নওরিন আফরোজ বলল ,”ঠিক আছে তাই বলে এত ঘুমাবে ?মনে তো হচ্ছে সারারাত ঘুমাইনি।”
কথাগুলো পাশে থেকে শুনতে পেল হুমায়ুন রহমান । হুমায়ূন রহমান তো জানে নূর কেন ঘুমায়নি সারারাত ।অন্য কেউ জানে না ।তাই দরজা কাছে এসে বলল ,”ওকে ঘুমাতে দাও ।রাত্রে বেলা ঘুম টুম আসেনি হয়তো।ডিস্টার্ব করোনা ।আর এক দেড় ঘন্টা ঘুমাক তারপর ওকে ডেকো।”
মনে মনে ভাবলো ,”ঘুমাবে কি করে ?একটু পর পর যে সাদাফের খোঁজখবর নিয়েছে ।”
এদিকে নিজের রুমে আজকে বসে আছে ফজলুর রহমান ।চিন্তায় পড়ে গেলেন রাতের বেলা একটার দিকে ঘুম ভেঙ্গে গেলে উনি নূরের দরজার কাছে এসেছিলেন ।কাছে এসেই শুনতে পেয়েছে নূর ফোনে কথা বলছে কারো সাথে ।কার সাথে কথা বলছে সেটা জানে না দরজা লাগানো ছিল তাই অতটা শুনতে পাইনি।
নুর কি কোন ভাবে সাদাফের সাথে কথা বলছিল নাকি অন্য কারো সাথে ?সাদাফের সাথে কথা বললে সমস্যা নাই বাড়ির ছেলে নিজের ভাইয়ের ছেলে কিন্তু যদি অন্য কারো সাথে কথা বলে থাকে ?আর এমনি যে সারাদিন সাদাফের জন্য পা*গলামো করলো এসব তাহলে কি ছিল ?বুঝতে পারছেন না ফজলুর রহমান।
সাদাফের মনে নূরের জন্য ঠিক কি ধরনের স্থান ? কেমন অনুভূতি?এখনো ফজলুর রহমান জানেন না ।তবে ওনার মনে হচ্ছে হয়তোবা সাদাফ ভালবাসে নূরকে ।ছোটবেলা থেকেই তো ভালবাসে কিভাবে সকলের সামনে নূরকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে ।সমস্ত দায়িত্ব নিজে পালন করেছে এক কথায় নিজেই বড় করেছে নুরকে।
ওনার এখনো মনে পড়ে সাদাফ বিদেশে যেতে চাইছিল না ।কত বাহানা করেছিল কত রাগ কত ঝগড়া করেছিল ।শেষে এমন কি হলো সাদাফ যাওয়ার জন্য এক পায়ে রেডি হয়ে গেল।
নুর যে পুরোপুরি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিল সাদাফের প্রতি।তারপর ও নূরকে কিভাবে ফেলে গেল।
ধীরে ধীরে নূর বড় হল সাদাফের প্রতি অভ্যস্ততা একটু একটু কমে আসলো।
এখন আবার সাদাফের প্রতি চরমভাবে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে বা এক কথায় বলা চলে আসক্ত হয়ে পড়েছে নূর।
আচ্ছা ভাইজান কি কিছু জানে ?ওদের ব্যাপারে কথা বলবে বড় ভাইয়ের সাথে ?”মনে মনে ভাবতে লাগলো ফজলুর রহমান।
এদিকে ড্রয়িংরুমে বসে বসে গেম খেলছিল সাইমন ।রিমা ছিল রান্নাঘরে ।সায়মনের জন্য কফি আনতে গিয়েছিল ।বস আবার কফি খাবে হুকুম করেছে কফি নিয়ে আসার জন্য ।
রিমা কফি এনে পাশে বসতে সাইমন বলল ,”আচ্ছা বাসায় কেমন কেমন যেন সবার ভিতর একটা চিন্তা মনে হচ্ছে ।যখনই যাকে দেখে মনে হয় সে গভীর কিছু ভাবছে ।তুই কিছু নোটিশ করেছিস?”
রিমা বিরক্তি নিয়ে তাকালো সায়মনের দিকে ।একটা মানুষ এত আলা ভোলা কিভাবে হতে পারে ?রিমা ছোট হয়েও বুঝতে পারছে কি ধরনের চিন্তাভাবনা সবার মনে আর ও কিছুই নোটিশ করেনি।
চলবে………
তাবীরের_তেহজীব
দুঃখিত একটু কম্পোজের কাজ বাকি থাকায় পোস্ট করতে দেরি হয়ে গেল।
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি গল্পের লিংক
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৯
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫১
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬২
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৭+১৮+১৯
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৩+৩৪
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭+৮
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৩
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১