
যে ফাইলটা আমার কম্পিউটার থেকে মুছে দিয়েছিলাম, সেটা আবার ফিরে এলো!
আমি অনেক রাত জেগে কাজ করি। অফিসের কাজ, লেখালেখি, আর একটু গেমিং—সবই চলে একসাথে। সেই রাতেও স্বাভাবিক মতো কম্পিউটার চালু করেছিলাম।
কিন্তু হঠাৎ চোখে পড়ল এক অদ্ভুত ফাইল। নাম—“Untitled-0”।
অবাক হলাম। কারণ আমি জানি, আমি কখনো এই নামের ফাইল বানাইনি।
প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো কোনো টেম্প ফাইল। কৌতূহল চাপতে না পেরে ফাইলটা খুললাম।
ভেতরে শুধু একটা কালো স্ক্রিন, আর সেখানে এক লাইন লেখা—
“তুমি কি আমায় শুনতে পাচ্ছ?”
মনে হল কেউ মজা করছে। হ্যাকড? হয়তো।
আমি হাসতে হাসতে ফাইলটা ডিলিট করলাম।
দ্বিতীয় দিন-
পরদিন দুপুরে কম্পিউটার অন করতেই দেখি সেই ফাইল আবার এসেছে। এবার নাম—“Untitled-1”।
আমি অবাক হয়ে গেলাম। আবার খুলে দেখি লেখা—
“তুমি কেন আমাকে মুছতে চাইছো? আমি তো তোমার ভেতরে আছি।”
এবার বুক ধড়ফড় শুরু হয়ে গেল।
“আমার ভেতরে” মানে কী?
আমি ভাইরাস ভেবে অ্যান্টিভাইরাস চালালাম। স্ক্যানের শেষে কিছুই পাওয়া গেল না।
আমি বিরক্ত হয়ে আবার ফাইলটা মুছে দিলাম।
কিন্তু রাত বারোটার পর ডেস্কটপ নিজে থেকেই জ্বলে উঠল, আর স্ক্রিনে দেখা গেল সেই একই ফাইল—এবার নাম—“Untitled-2”।
তৃতীয় দিন-
আমি এবার ভয় পেলাম। কম্পিউটার ফরম্যাট করলাম। সব ড্রাইভ ক্লিন। নতুন উইন্ডোজ ইনস্টল।
কিন্তু যখন সিস্টেম চালু হল, তখনও ডেস্কটপে সেই ফাইল!
ফাইলটা খোলার আগেই আমার ঘরের আলো টিমটিম করে উঠল। বাতাসে একটা গন্ধ ছড়িয়ে পড়ল—পচা মাংসের মতো।
ভয়ে হাত কাঁপছিল। তবু ফাইলটা খুললাম।
ভেতরে লেখা—
“আমি শুধু কম্পিউটারে নেই। আয়নায়ও তাকাও।”
আমি ধীরে ধীরে ঘুরে আয়নার দিকে তাকালাম।
আমার প্রতিচ্ছবি নেই।
বরং সেখানে বসে আছে আমার মতো দেখতে একজন মানুষ—কালো মুখ, গাঢ় লাল চোখ, ঠোঁটে ভয়ানক হাসি।
আমি আতঙ্কে পেছনে তাকালাম, কিন্তু ঘরে আমি ছাড়া কেউ নেই।
তবু আয়নায় সে বসে আমার দিকেই তাকিয়ে ফিসফিস করে বলল—
“তুই আমার জায়গায় এসেছিস। এখন তোর পালা। আমি তোর ভেতরে ঢুকব।”
চতুর্থ দিন-
ঘটনাটা কাউকে বলার সাহস পাইনি। বন্ধুদের কাছে বললে পাগল ভাববে।
আমি ভেবেছিলাম হয়তো স্ট্রেস, হ্যালুসিনেশন।
কিন্তু রাত তিনটায় ঘুম থেকে উঠে দেখি কম্পিউটার নিজে থেকে অন।
ফাইল এবার নাম বদলেছে—“Final”।
ভেতরে শুধু এক লাইন—
“তোর জীবন এক্সিট বাটনে আছে। চাপ দে, নয়তো আমি চাপব।”
এরপর হঠাৎ স্ক্রিন কালো হয়ে গেল।
কিন্তু স্পিকার থেকে ভেসে এলো কানে ফিসফিস করার মতো একটা ভয়ংকর কণ্ঠ—
“Rafiqul… তোমার সময় শেষ হয়ে আসছে…”
আমি চিৎকার করতে চাইলাম, কিন্তু গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হল না।
পঞ্চম দিন-
আমি ভাবলাম এই বাড়িতেই সমস্যা। তাই ল্যাপটপ নিয়ে বন্ধুর বাসায় চলে গেলাম।
কিন্তু সেখানেও একই ঘটনা!
ল্যাপটপ চালু করতেই সেই একই ফাইল হাজির।
কিন্তু এবার আরও ভয়ংকর ব্যাপার ঘটল।
বন্ধুর বাসার ওয়াইফাই বন্ধ ছিল, তবু ব্রাউজার নিজে থেকে খুলে গেল। স্ক্রিনে দেখাচ্ছিল লাইভ ভিডিও—আমার ঘরের ভেতর!
অদ্ভুত ব্যাপার, ভিডিওতে আমি নেই।
বরং সেখানে বসে আছে লালচোখ সেই মানুষটা।
ষষ্ঠ দিন-
আমার দেহে অদ্ভুত পরিবর্তন শুরু হল। রাতে ঘুম থেকে উঠে দেখি নখ লম্বা হয়ে গেছে, চোখে লাল রঙের ছাপ।
মনে হচ্ছে, ধীরে ধীরে আমি-ই ওর মতো হয়ে যাচ্ছি।
আমি আবার ফাইলটা খুললাম।
সেখানে লেখা—
“তুই আমার শরীর হয়ে যাচ্ছিস। আজ রাতে আয়নায় তাকাস না, নয়তো তুই নিজের শেষ দেখবি।”
কিন্তু আমি সাহস করে আয়নায় তাকালাম।
দেখলাম, আয়নায় আমি নই—বরং সেই লালচোখ দানব হাসছে।
আর এবার সে শুধু আয়নায় নেই… ধীরে ধীরে আয়না থেকে বের হয়ে আসছে।
শেষ দিন-
এখন আমি এই লেখাটা লিখছি, আর আমার কম্পিউটারের ডেস্কটপে সেই ফাইল আবার হাজির হয়েছে।
নাম—“Untitled-3 – Rafiqul’s End”।
আমি জানি এবার মুছতে পারব না।
কারণ ঠিক এই মুহূর্তে পেছন থেকে আমার কানে ফিসফিস করছে সেই একই কণ্ঠ—
“Delete Complete.”
ভৌতিকগল্প #রহস্যময় #হররস্টোরি #ভয়ঙ্কর_অভিজ্ঞতা #ভূতেরগল্প #অবিশ্বাস্য
ভৌতিকঅভিজ্ঞতা #হররবাংলা #রহস্যথ্রিলার #অদ্ভুতকাহিনী #ভয়ঙ্কররহস্য
ভূতেরছায়া #বাংলাহরর #মৃত্যুরকাহিনী #অতিপ্রাকৃত
Share On:
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE