সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব_১১৮
অফিসের ঝামেলা মিট করার পর এখনো বড় একটা ঝামেলা রয়ে গেছে ।১৫ দিন সময়।১৫ দিনের মধ্যে এই শিপমেন্ট আবার নতুন করে করতে হবে ।সাদাফ ফারদিনকে ডেকে বললো,” জরুরী প্রোডাকশনের মিটিং ডাকো।
এইচা আর থেকেও ম্যানেজার ডাকো।আমাদের প্রচুর সংখ্যক লোক নিয়োগ দিতে হবে এবং কর্মীরা যারা কর্মরত আছে তাদেরকে ওভার নাইট ডিউটি করতে হবে ।প্রয়োজনে তাদের বেতনের থেকে ডবল দেওয়া হবে পার আওয়ার বেতন।
১৫ দিনে এই শিপমেন্ট সম্পূর্ণ করতেই হবে ।”
হুমায়ুন রহমান বললেন ,”হ্যাঁ ঠিক বলেছ কিছু টাকা বেশি খরচ হলে হোক কিন্তু মান-সম্মান নষ্ট করা যাবে না ।ব্যবসায় একবার মান সম্মান শেষ হয়ে গেলে ঘুরে দাঁড়াতে অনেক সময় লাগে। সুনাম যা আমাদের কামাই করতে ৩০ থেকে ৩৫ বছর লেগে গিয়েছে তা যদি এক দিনে শেষ হয়ে যায় তাহলে ঘুরে দাঁড়াতে আমাদের অনেক কষ্ট পেতে হবে ।আমি চাইনা কিছু টাকার জন্য আমাদের সুনাম নষ্ট হয়ে যাক।”
সাদাফ বললো,” হয়ে যাবে সব এখন শুধু এইচ আর এবং প্রোডাকশন টিমের মিটিংটা শেষ হয়ে গেলে পুরোপুরি উদ্যমে কাজ শুরু করে দিতে হবে।
মাত্র ১৫ দিন দেখতে দেখতে এমনি চলে যাবে।”
ফজলুর রহমান সাদাফের দিকে তাকিয়ে বললেন,” আচ্ছা সাজিদকে কিভাবে কি করলি ?পুরো ঘটনা তো আমাদের খুলে বলিস নি !”
সাদাফ মুচকি হাসলো । বললো,” ওসব তোমাদের শুনতে হবে না ।শুধু এটা জেনে রাখো ওদের অনেকগুলো বিজনেস এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে জাস্ট একটাতে হাত দিয়েছি বাকিগুলো তো ও দিব ।এভিডেন্স আমার কাছে প্রায় অনেকগুলোই চলে এসেছে বাকিগুলো চলে আসবে।যদি ও না থামে ওকে আমি থামাবে।”
হুমায়ূন রহমান বললেন ,”আমাদের তো সমস্যা শেষ হয়ে গেছে এরপর আর ওর সাথে বাড়াবাড়ির করে লাভ কি?”
সাদাফ বললো,” তোমরা বুঝবে না ওর সাথে আমার সমস্যা সবসময় পার্সোনাল ছিল প্রফেশনাল না।”
যেহেতু সাজিদের চেহারা পরিবর্তন হয়েছে তাই হুমায়ূন রহমান চিনতে পারেনি ।না হলে উনি বুঝে যেতেন আসলে সমস্যাটা কোন ধরনের সমস্যা ?
কিন্তু সাদাফ পুরোটাই গোপন করে গেল এইমুহুর্তে চায়না এই বয়সে বাবাকে বা ছোট বাবাকে কোন টেনশন দিতে।
তাই সাদাফ নিজেই সব হ্যান্ডেল করবে মনে মনে ঠিক করে ফেলল।
ঘন্টা খানেক মিটিং চলল ।মিটিং এর সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হলো প্রায় ৫০০ জন করে নতুন অপারেটর নিয়োগ দিতে হবে ৫০০ জন হেল্পার এবং যারা এক্সিসটিং আছে তাদের মিনিমাম তিন ঘন্টা করে ওভার ডিউটি করতে হবে তার জন্য বর্তমান যে বেতন পাচ্ছে তার দেড়গুণ বেশি পার আওয়ার বেতন ধরা হবে।
মিটিং শেষ করতে করতে বেজে গেল প্রায় পাঁচটা ।হুমায়ুন রহমান ফজলুর রহমান বাসায় চলে যাবেন ।সাদাফের দিকে তাকিয়ে বললো,” চল বাসায় চল গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে তারপর যাস।”
সাদাফ বললো,”না এই মুহূর্তে যাওয়া সম্ভব না ।আমার একটু বন্ধুদের সাথে গেট টুগেদার আছে ।ওইখানে যেতে হবে ।”
বলেই সাদাফ অফিস থেকে বের হয়ে গেল ।ফজলুর রহমান তাকিয়ে রইলেন । ফজলুর রহমান হুমায়ূন রহমানের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”ভাইজান আপনি কি আমার উপরে রাগ করে আছেন ?সাদাফ বাড়িতে আসতে পারছে না আমার জন্য তাই?”
ফজলুর রহমান হাসলেন ।হেসে বললেন ,”না সত্যি রাগ করে নেই ।রাগ কেন করব? ছেলের সাথে তো আর আমাদের দূরত্ব নেই ।হ্যাঁ অন্য বাড়িতে থাকছে ওর রাগ কমলে ও চলে আসবে চল বাসায়।”
বলেই হঠাৎ হুমায়ূন রহমানের মনে পরল ফজলুর রহমানের সাথে কিছু কথা বলতে চেয়েছিল ।তাই সাদাফের ক্যাবিন ত্যাগ না করে বললো,” ফজলুর দাড়া এক মিনিট তোর সাথে আমার অন্য বিষয়ে একটি কথা আছে।”
ফজলুর রহমানের বুকটা ধক করে উঠল ।কেন যেন মনে হচ্ছে ফজলুর রহমানের হুমায়ূন রহমান হয়তো সেই বিষয় নিয়েই কথা বলবে ।তাই বললো,” খুব জরুরী কথা ভাইজান?”
হুমায়ুন রহমান বলল ,”হ্যাঁ জরুরী কথা ।এক মিনিট দাঁড়া ।”
বলে দরজা চাপিয়ে ফজলুর রহমানের দিকে মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ালেন ।তারপর বললেন ,”তুই আমার কাছে কি লুকোচছিস নূরের ব্যাপারে ?সব খোলাসা করে বল ।একটা কথা ও গোপন করবি না সত্যি করে বল।”
ফজলুর রহমান একদম ভরকালের না ।চমকালের না ।উনি তো জানতেন হুমায়ূন রহমান এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করবেন।দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে ফজলুর রহমান চেয়ারে বসে পড়লেন ।হুমায়র রহমান ও মুখোমুখি চেয়ারে বসে বললো,” একটি কথা ও গোপন করিস না ফজলুর ।সত্যি করে বল নূরের কি কিছু হয়েছে ?তুই কি লুকাচ্ছিস ?হসপিটাল থেকে দেখছি তোর বিষন্ন চেহারা।”
ফজলুর রহমান চোখ তুলে তাকালেন হুমান রহমানের দিকে ।চোখ দুটো যেন অস্রু তে টলমল করছে ।হুমায়ুন রহমান অবাক হয়ে গেলেন ।বললেন ,”এই ফজলুর কি হয়েছে তোর ?এভাবে কান্না করছিস কেন ?আমি কিন্তু ভয় পাচ্ছি আমাকে সব খুলে বল।”
“আমার মেয়েটা ,মেয়েটা ভাইজান আমার মেয়েটার কপাল যে পুড়ে গেল ।চারটা বছর ধরে এই আগুন আমি জ্ব*লছি।আমার ভিতরে জমা করে রেখেছি আমি যে কাউকে বলতেও পারছি না সহ্য করতে পারছি না।”
হুমায়ূন রহমান বললেন,” হেয়ালি করিস না কি হয়েছে আমাকে খুলে বল ।”
ফজলুর রহমান চার বছর আগের ঘটনা খুলে বললেন ।এমনকি তিন দিন আগে হসপিটালে ডক্টর কি বলেছে সেগুলো খুলে বললেন।
হুমায়ণ রহমান যেনো পাথর হয়ে গেলেন। ফজলুর রহমান হুমায়ূন রহমানের হাত ধরে বললেন,” এই বিয়ে নিয়ে আমার কখনো কোন দ্বিমত ছিল না ভাইজান। শুধু চেয়েছিলাম যে আমার মেয়েটা মা হতে পারবেনা এটা শুনে যদি সাদাফ গ্রহন করে তাহলে ঠিকআছে। কিন্ত সাদাফ কোনদিন নুরকে অস্বীকার করলে ওদের দুজনের জীবনটা কেমন হবে এটা ভেবে আমার কলিজা কেঁপে উঠতো ভাইজান।
বিভিন্ন বাহানায় আমি চেয়েছি নূরের কাছ থেকে সাদাফ কে দূরে রাখতে এমনকি সাদাফ কে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার কথা বলে বাড়ির বাইরে বের করেছি যাতে সাদাফের সাথে নূরের দেখা কম হয় ।কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস ভাইজান ওদের বিয়ে হয়ে গেছে আমি আটকাতে পারলাম না।
আমার রুহুটা কেঁপে ওঠে ভাইজান একবার খালি চিন্তা করি নূর যদি জানতে পারে ও হয়তো কখনো মা হতে পারবেনা ও কি করবে ?আর সাদাফ কি মেনে নিবে সাদাফ কখনো বাবা হতে পারবেনা ?যদি মেনে নেয় ও যদি ওর ভিতরে কোথাও কোনো আশা থাকে বাবা হওয়ার নূরের সাথেও সংসারটা কেমন হবে এগুলো ভাবতে আমার কলিজা কেঁপে উঠে ভাইজান।”
এগুলো শুনতেই হুমায়ুন রহমানের চোখ দিয়ে আপনি গড়গড়িয়ে জল ঝরে পড়ল ।নূরের কষ্টের কারণে পড়ল এমনকি সাদাফের কথা ভেবেও পড়ল ।এমনটা নয় যে সাদাফ নুরকে গ্রহণ করবে না বা করা উচিত না ।দুজনই করবে কিন্তু দুজনের একটা সন্তান হবে না ভেবেই কলিজাটা কেঁপে উঠল হুমায়ন রহমানের।
বারবার শুধু চিন্তা করছে সাদাফ ম্যাচিউর নিজেকে বুঝিয়ে নিবে কিন্তু নূর যে অনেক পাগ*লামি করবে নুরকে কিভাবে বুঝাবো?
প্রায় পাঁচ মিনিট দুই ভাই চুপচাপ নীরবতা পালন করল ।হুমায়র রহমান বললেন,” ভুলেও এটা চিন্তা করবি না যে সাদাফ আর নুর কে তুই আলাদা করবি এই কারণে ।হ্যাঁ আমিও চিন্তা করছি নূর যখন জানতে পারবে নুর কি রিয়াকশন দিবে ?
সাদাফ নুর কে বুঝানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ।সাদাফের মনে যদি কোথাও কোন কষ্ট থেকেও থাকে ও নূরের মুখের দিকে তাকিয়ে সব ভুলে যাবে ।কিন্তু সমস্যা হচ্ছে নূর ।নুরকে মানানো কঠিন হয়ে যাবে। আমার পাগল মেয়েটা যে বুঝবে না ! পাগল মেয়েটাকে তো কিছু দিয়ে বোঝাতে পারবো না!”
চলবে__
Neela Rahman
বেশি বেশি রিয়েকশন না দিলে রাতের পড়বে যা বলেছি তাই করব রোমান্স দিব না।
সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব_১১৯
বিকেলে বাসায় ফিরে এলেন ফজলুর রহমান এবং হুমায়ূন রহমান ।এসে দেখলেন ড্রয়িং রুমে বসে রিমা নুর টিভি দেখছে এবং খাবার টেবিলে বসে রাতের জন্য কিছু সবজি কা*টছিলেন নওরিন আফরোজ এবং সামিহা বেগম।
হুমায়ূন রহমান এবং ফজলুর রহমান কে আসতে দেখি রিমা সাথে সাথে উঠল পানি আনার জন্য ।নূর একটু অসুস্থ তাই দৌড়াদৌড়ি করে ওঠা ওর নিষেধ ।তাই বসে রইলো।হুমায়ূন রহমান ফজলুর রহমান নূরের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”এখন আমার মা কেমন আছে ?শরীর কেমন লাগছে?”
নুর মুচকি হেসে জানালো এখন একটু ভালো লাগছে ।সমস্যা নেই ।তারপর আস্তে ধীরে উঠে হুমায়ুন রহমান দিকে তাকিয়ে বললো,” বড় বাবা তোমার জন্য চা করে নিয়ে আসি ?”হুমায়ূন রহমান নূরের দিকে এক পলক তাকালেন ।এক দৃষ্টিতে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে দেখলেন ।শুধু নামই নূর না দেখতেও যে নূরের মত মেয়েটি কিন্তু জীবনে এমন অন্ধকার নেমে আসবে কে জানত ?হুমায়ূন রহমানের মনটা যেন ভিতরে ভিতরে কেঁদে উঠলেন ।মোড়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,” ঠিক আছে মা নিয়ে আসো ।”
নুর বললো,” সাথে আর কি নিয়ে আসবো ?”
হুমায়ুন রহমান মুচকি হেসে নুরের মাথায় হাত রেখে বললো,” যা আমার মা আনতে চায় যা আমার মা পছন্দ করে তাই।”
ফজলুর রহমানের চোখ দুটো যেন ভরে আসছিল ।সাথে সাথে বললো,”শুধু বড় বাবাকে জিজ্ঞেস করলেই হবে ?আমিও যে বাবা আছি বাবাকে তো ভুলে গিয়েছে আমার মা ।”অভিমানের স্বরে বললো ফজলুর রহমান।
নুর বললো,” মোটেও না আমি জানি বড় বাবা যা খাবে তুমি তাই খাবে।”
নূর হাসতে হাসতে ধীরে ধীরে কদম ফেলে রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে গেল ।সামিহা বেগম এবং নওরিন আফরোজে উঠে রান্না ঘরে গেল নাস্তা তৈরি করার জন্য ।মেয়ে দুইটা কি একা পারবে নাকি তাই নওরিন আফরোজ উঠে গেল।সামিহা বেগম বললো তাহলে তুমি নাস্তা তৈরি করো আমি সবজি গুলো কেটে নেই।
সবকিছু রেডি করে রেখেছিলেন নওরিন আফরোজ। এখন মেরিনেট করা সবজি পাকোড়া ভাজার জন্যই কড়াইতে তেল দিলেন ।নূর সাথে সাথে বললো,” বড় আম্মু আমি ভাজি।”
নওরিন আফরোজ বললো,”তুই পারবি ?”
রিমা বললো,” পারব আম্মু তোমরা যাও আমরা দুজন ভেজে নিয়ে আসছি আজকে নাস্তার দায়িত্ব আমাদের।”
নওরিন আফরোজ সব কিছু দেখিয়ে বুঝিয়ে আবার খাবার টেবিলে চলে গেলেন সবজি কা*টার জন্য ।এদিকে রিমা ও নুর ধীরে ধীরে পাকোড়া ভাজতে লাগলো আর চা বসিয়ে ফেলল।
রিমা নুরের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ করে মুচকি হেসে বললো,” আমার ভাবির কি খবর?”
নুর সাথে সাথে লজ্জায় বললো,” ছিঃ ভাবি করে বললি কেন ?”
রিমা বললো,”ও মা ভাবি বলবো না তো কি বলবো ?তুই তো আমার বড় ভাইয়ের বউ ই?”
নুর বললো,”ইস বললেই হল ?আমি তোমার ছোট বোন ।আমাকে নুর বলে ডাকবে ।কোন ভাবিটাবি না ।”রিমা বললো,” বুঝে দেখ আর কিন্তু নেই কেউ যে তোকে ভাবি বলে ডাকতে পারবে ।একমাত্র আমি আছি যে তোকে ভাবি বলে ডাকতে পারবো ।না হলে সারা জীবন ভাবি ডাকের থেকে বঞ্চিত হবি।”
রিমা একটু কাছে এসে বললো,” আচ্ছা বিবাহিত জীবন কেমন লাগছে রে?”
অবাক হয়ে জানতে চাইলো নুর কেমন লাগবে ?
রিমা বললো,” না একটু আলাদা আলাদা লাগছে নাকি?”
নুর সাথে সাথে লজ্জা পেয়ে গেল ।তারপর বললো,” জানিনা যাও ।খবরদার আমাকে এসব কিছু জিজ্ঞেস করবে না ।সাথে সাথে চুলা বন্ধ করে দিল নুর ।পাকোড়া ভাজা হয়ে গেছে ।একটি প্লেটে পাকোড়াগুলো তুলে নিয়ে বললো,” চা নিয়ে এসো আমি এগুলো নিয়ে যাচ্ছি।”
“আরে এটা তো বলে যা আমার ভাই স্বামী হিসেবে কেমন ?কিছুই তো বলছিস না।”জানতে চাইলো রিমা।
নুর বললো,”আমার বয়েই গেছে বলতে ।তোমার ভাইকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর।”
নওরিন আফরোজ এবং সামিহা বেগম সাথে সাথে টেবিল থেকে উঠে গিয়ে ড্রয়িং রুমে হুমায়ুন রহমান এবং ফজলুর রহমানের সাথে বসলেন চা নাস্তা করার জন্য ।নওরিন আফরোজ বসে জিজ্ঞেস করলেন ,”অফিসের ঝামেলা সব মিটলো ?কি হয়েছিল কিছু তো বললেন না আমাদের।”
হুমায়ূন রহমান কিছু বলার আগে ফজলুর রহমান বলে উঠলো ,”মিটবে না মানে আমার ছেলে আছে না ছেলে সব কিছু মিটিয়ে দিয়েছে ।জিনিয়াস একটা ছেলে আমার ।”
সামিহা বেগম তাকালেন ফজলুর রহমানের দিকে।
মনে মনে বললেন ,”ছেলেকে জিনিয়াস জিনিয়াস বলে এত মুখে ফেনা তুলে ফেলছে অথচ নিজের মেয়েকে বিয়ে করেছে জামাই হিসেবে মানছে না এখনো। সাদাফের এত তারিফ করছে এই বা কম কি ?নিশ্চয়ই উনার মন গলে গিয়েছে না হলে তো এত তারিফ করত না। ছেলে বলুক আর জামাই বলুক সাদাফ তো একজনই ।তাই সমস্যা নেই ।একজনের তারিফ করলেই হল।”
এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে উপর থেকে নিচে নেমে এলো সায়মন নাস্তা খাওয়ার জন্য ।ভাজা পোড়া গন্ধ ওর নাকে উপরে পর্যন্ত চলে গিয়েছে ।তাই বললো,” কি ব্যাপার আমাকে কেউ ডাকলো না কেন ?আমার কি পেটের ভিতর খুদা লাগে না নাকি?”
নওরিন আফরোজ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন সাইমনের দিকে ।সাইমন ছেলেটা ভালো অত্যাধিক ভালো ।বরং মেয়েটাই পাজি ।কিন্তু কি করে দুজনের সম্পর্ক হয়ে গেল ?এমনি সাদাফ নুর এর সম্পর্কের জন্য এত ঝামেলা তার উপরে যদি শুনে ছোট দুইটা প্রেম করে বসে আছে তাহলে কিভাবে কি করে বুঝাবে?
এভাবে কথায় কথায় বিকেলটা পার হয়ে গেল ।নাস্তা খাওয়া শেষে নুর উপরে চলে গেল রেস্ট করার জন্য ।আজকে অনেকক্ষণ আগে নিচে এসেছিল এখন একটু বিছানায় গিয়ে শুতেই মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখলো ফোন এসেছিল সাদাফের ।একবার রিং হয়ে কেটে গিয়েছে আবারো সাথে সাথে ফোন আসলো ।রিং হওয়ার সাথে সাথে ফোন রিসিভ করল নূর।
ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে সাদাফ বলে উঠলো ,”কোথায় ছিলি ফোন সাথে নিয়ে যাস নি কেন ?আমি ফোন দিলাম কে দেখে?”
নূর বললো,” নিচে সবার সাথে ছিলাম নাস্তা করছিলাম বড় বাবা আর বাবা ও ছিল ।”
সাদাফ বললো,” ও আচ্ছা তোর জন্য একটা খুশির সংবাদ আছে ।”
নুর জানতে চাইলো কি ?সাদাফ বললো,” আগামীকাল তোর বাবারা দুজনেই ঢাকার বাইরে যাবে।”
নুর সাথে সাথে জিজ্ঞেস করলো,” আপনিও সাথে যাবেন ?”
সাদাফ বললো,” না আমি যাব না তোর বাবাদেরকে পাঠাবো আগামীকাল যাবে।”
নূর বললো,” তাহলে এটা আমার জন্য খুশির সংবাদ কি করে হলো? “
সাদা বললো ,”আগামীকাল তোকে নাকে ফুল কিনে দিতে বাহিরে নিয়ে যাব।”
নূর খুশি হয়ে গেল । বললো,” সত্যি ?”
সাদাফ বললো ,”হ্যাঁ সত্যি আগামী কালকে তোকে শপিংয়ে নিয়ে যাব ।নাকে ফুল কিনে দিবো নিজে পছন্দ করে কিনবি আর আগামীকাল তুই আমার বাসায় আসবি ।আমার বাসায় থাকবি।”
শেষের কথাটি শুনে নুরু লজ্জা পেয়ে গেল ।আগামীকাল সাদাফ ভাইয়ের বাসায় গিয়ে থাকবে শুনে নুর বললো,” বাবা রাজি হবে না।”
সাদা বললো,” তোর বাবাদের রাজি করানোর জন্য কি তোর বাবাকে ঢাকার বাইরে পাঠাচ্ছি নাকি?কাউকে রাজি করাতে হবে না ।আগামীকাল তোকে শপিংয়ে নিয়ে যাবো সেখান থেকে তুই আমার বাড়িতে এসে থাকবি। তোর বাবারা ছাড়া বাকি সবাই জানবে ।আমি সবার সাথে কথা বলে নেব ।তোর কারো সাথে কথা বলতে হবে না। আর শোন আগামীকাল শুধু নাকে ফুল না আরো অনেক কিছু কিনব ।”
নূর জিজ্ঞেস করলো,” আর কি কিনে দিবেন ?”
সাদাফ সাথে সাথে বললো,” এই ধর একটা রয়েল অফ হোয়াইট কালারের শাড়ি কয়েকটা কাঠগোলাপের ফুল কয়েকটা বেলি ফুলের মালা।”
নুর যেন বুঝতে পারল সাদাফ ভাই কি বলতে চায় ।লজ্জায় সাথে সাথে চুপ হয়ে গেল নুর ।সাদাফ মুচকি মুচকি হাসছে ।বললো,” ঠিক আছে তাহলে কালকে রেডি থাকিস কেমন?”
চলবে__
Neela Rahman
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৮
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭১
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪২
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯৪
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭৭
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১১৬+১১৭
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৯
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪৫
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৯০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬১