সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব_১০৩
মিটিং রুমে বসে আছে সাদাফ । কিছুক্ষণ পর পর তাকাচ্ছে হুমায়ূন রহমান এবং ফজলুর রহমানের দিকে ।দুজন খুবই চিন্তিত দেখে বুঝা যাচ্ছে।
সাদাফ ফজলুর রহমান দিকে তাকিয়ে বলল ,”না হয় একটু বাসায় গিয়ে রেস্ট নাও ।বাকিটুকু আমি দেখছি ।”ফজলুর রহমান বলল ,”না তুই একা কেন দেখবি আমরা একসাথে মিটিং শেষ করব।”
এদিকে ফজলুর রহমানের মাথা ব্যথা করছে ।ফারদিন কে ডেকে আরেক কাপ কফি চেয়ে পাঠালেন ।ফারদিন কফি নিয়ে আসলো সবার জন্যই। সাদাফ কফি খেতে খেতে আকাশের ফাইলটি দেখছিল ।কিছুক্ষণ আগে ফারদিন ফাইলটি দিয়ে গিয়েছে ।আকাশ আহমেদ কোথায় যেন নামটা শুনেছে কিন্তু অন্য কোন নাম না থাকায় চিনতে পারছেনা।
স্কুল কলেজ সাদাফের স্কুল কলেজেই তাই পরিচিত হওয়াটাই স্বাভাবিক কিন্তু তারপরও কেন আকাশ আহমেদ কে চিনতে পারছে না সাদাফ।
এমন চেহারার কাউকে তো সাদাফ চিনত না।
প্রোডাকশন টিমের সবার সাথে কথা বলল সাদাফ।সাদাফের তেমন কিছু অদ্ভুত মনে হলো না ।সবার তথ্য অনুযায়ী সবার কাজ ঠিক আছে সবাই যার যার ফাইল জমা দিয়েছে সব জায়গায় সবকিছু ঠিক আছে কিন্তু গড়মিলটা হলো কোথায়।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এখনো পর্যন্ত কিছু সনাক্ত করা যায়নি ।অফিস আওয়ারে এমন কেউ কম্পিউটারের সামনে আসা-যাওয়া করেনি যা দেখে সন্দেহজনক মনে হবে হঠাৎ সাদাফের মনে হল অফিস আওয়ার বাদে অন্যান্য সময় গুলো সিসি ক্যামেরা চেক করা হোক তিনদিনের।
ফারদিন জানালো ,”স্যার একটু দেরি হবে ।যেহেতু তিনদিনের তাই একটু সময় লাগবে ঘন্টাখানেক সময় দেন কয়েকজন সিকিউরিটি দিয়ে চেক করাচ্ছি এক ঘন্টার মধ্যে আশা করি হয়ে যাবে।”
সাদাফ বলল ,”এন্ট্রান্স থেকে শুরু করে প্রোডাকশনের প্রত্যেকটা কম্পিউটারের কাছাকাছি কে কে গিয়েছে কার কার এক্সেস আছে সবকিছু চেক করবে।
আকাশ আহমেদের কোথায় কোথায় এক্সেস আছে সে কোথায় কোথায় যেতে পারে অফিস আওয়ার এর ভিতর এবং বাইরে প্রত্যেকটা ফুটেজ আমাকে এনে দিবে।”
মিটিং শেষ করে ঘন্টা খানেক আরও অপেক্ষা করতে হবে সিসি ফুটেজের জন্য তাই সাদাফ জোর করে ফজলুর রহমান এবং হুমায়ুন রহমানকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন ।বললো ,”বাসায় চলে যাও এই মুহূর্তে তোমাদের এখানে কোন কাজ নেই ।কি কি হচ্ছে আমি তোমাদের ফোনে ইনফর্ম করব এখানে থেকে চিন্তা করে কোন কাজ হবে না।
বরং বাসায় যাও তোমাদের জন্য বাসার সবাই চিন্তা করছে।”
ফজলুর রহমান ও হুমায়ুন রহমান আর কথা বাড়ালেন না ।যেহেতু মিটিং শেষ এই মুহূর্তে আর এখানে থেকে কোন লাভ হবে না বরং বাসায় গিয়ে একটু রেষ্ট করা যাক মাথা প্রচন্ড ব্যথা করছে।
এদিকে নুরের অবস্থা খুবই খারাপ ।জ্বর ১০২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছে ।ব্যথায় কোকাচ্ছে মেয়েটি ।এখন যেন পানি মাথার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে ।নওরিন আফরোজ সামিহার দিকে তাকিয়ে বললেন ,”সায়মন কে গাড়ি বের করতে বল ।হসপিটালে নিতে হবে ।অফিসে কাউকে কিছু জানানোর প্রয়োজন নেই এই মুহূর্তে ।হসপিটাল নেওয়াটা জরুরি আমি মনে করছি।”
নুর ব্যথা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে কিন্তু লজ্জা হচ্ছে পিরিয়ডের ব্যথার জন্য হসপিটালে যাবে তাই বলছে থাক লাগবে না ।নওরিন আফরোজ বললো,”একবারে থা*প্পড় দিব লাগবে না মানে ?কতটুকু যন্ত্রণা হচ্ছে দুইদিন ধরে তুই যন্ত্রণা সহ্য করছিস এখন বলছিস লাগবেনা ?”
সামিহা তুই কথা শুনিস না তাড়াতাড়ি গাড়ি বের করতে বল এক্ষুনি আমার মেয়েকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।
সামিহা দৌড়ে দৌড়ে তাড়াতাড়ি সায়মন এর কাছে গিয়ে বলল ,”সাইমন তাড়াতাড়ি গাড়ি বের কর নুরকে হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে ।”
সাইমন টেবিলে বসে পড়ছিল একটু আগে তো রিমার সাথে কথা বলছিল এরপর পরে মনোযোগ দিয়েছিল পড়ায়।অবাক হয়ে গেল ,”নূরকে হাসপাতাল নিতে হবে মানে বাসায় থেকে ও সায়মন কিছু জানে না ?অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল ,”কি হয়েছে নূরের?”
“নুরের জ্বর এবং শরীর ব্যথা এত কিছু জানতে হবে না এক্ষুনি গাড়ি বের কর ।আর সাদাফ বা অন্য কাউকে কিছু জানানোর প্রয়োজন নেই ।আমরা আগে হসপিটালে নিয়ে যাই দেখি তারপরে জানাবো ।”
বলে সামিহা বেগম নুরের সবকিছু গোছগাছ করতে গেলেন ।হসপিটালে আজকে রাতটা তো থাকতেই হবে।
এদিকে রিমা মাথার কাছে বসে বারবার পানি পট্টি দিচ্ছে ।নরিন আফরোজ কিছুক্ষণ পর পর হট ওয়াটার ব্যাগ চেঞ্জ করে তলপেটে চেপে ধরে রেখেছে ।নূর বলে বুঝাতে পারবে না কেমন লাগছে বারবার শুধু সাদাফের কথা মনে পড়ছে ।সাদাফ ভাইকে কি আর দেখতে পারবে না নুর?অসম্ভব ব্যথা বারবার ওর মন যেন ভয় শিহরিত হয়ে যাচ্ছে। আর শুধু সাদাফ ভাইকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে।
এদিকে সবাইকে বিদায় করে দিয়ে ফারদিন আর সাদাফ বসে সিসি ফুটেজ খেয়াল করছিল ।ঠিক এমন সময় একটি ফোন আসলো সাদাফের মোবাইলে ।সাদাফ ফোন ধরে হ্যালো বলতে ওপাশ থেকে বলে উঠলো সাজিদ বলছি মানে আকাশ আহমেদ বলছি।
সাজিত নামটা শুনতেই বুকের ভিতর ধক করে উঠলো সাদাফের ।
আকাশ আহমেদ আর সাজিদ তাহলে একজন ! সাদাফ অবাক হলেও অবাকের রেশ সাজিদকে বুঝতে দিল না ।কোমল কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল ,”কি চাই ?আমার অফিসে কেন জয়েন করেছিস ?তোর তো অবস্থা এমন না তুই কোন অফিসে চাকরি করতে হবে তোর?”
সাজিদ হাসলো প্রাণ খুলে হাসলো ।মনে হয় অনেকদিন পর ।তারপর বলল ,”চাওয়া একটাই আগেও যে চাওয়া ছিল এখনো সেই চাওয়াই। আগে শুধু চাইতাম এখন ভয়ংকর ভাবে চাই।”
সাদাফের চোয়াল শক্ত হলো ।তারপর বলল ,”আগেও ফল ভোগ করেছিস এখনো ফল ভোগ করবি ।”
সাজিদ হাসতে হাসতে বলল ,”আগের বার ফল ভোগ করেছিলাম আমি এবার ফল তোর ভোগ করার পালা ।সব সময় আমি একাই কেন ভোগ করবো তুইও কর।”
চলবে__
Neela Rahmann
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৭
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৩
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪১
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৭+২৮
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৪
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯৭