উড়ালমেঘেরভেলায়
লেখনীতে— #ঝিলিক_মল্লিক
পর্ব_৬
[কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।]
আভিয়ান ঢাকা থেকে চলে যা-ও পর আজ দীর্ঘ সপ্তাহখানেক পরে ওর সাথে যোগাযোগ করতে পারলো রানিয়া। লোকটার সাথে যোগাযোগ করা ভীষণ জরুরি ছিল ওর। ও সবখানে হন্যে হয়ে খুঁজেছে। কিন্তু অনলাইন, অফলাইন কোথাও পাওয়া যায়নি আভিয়ানকে। কেন পাওয়া যায়নি, সেটা সম্পর্কেও অবগত নয় রানিয়া। তবে আজ দীর্ঘ এক সপ্তাহ পরে যে আভিয়ান অনলাইনে অ্যাক্টিভ হয়ে ওর মেসেজের রিপ্লাই দিয়েছে, তা দেখে রানিয়া খুশি হবে নাকি রাগ হবে বুঝতে পারছে না। আভিয়ানকে “হাই” লিখেছিল ও। সেটার রিপ্লাইয়ে লোকটা শুধুমাত্র ‘হ্যালো’ বলেছে। রানিয়া তৎক্ষনাৎ মেসেজ সিন করে কল করলো আভিয়ানকে। প্রথমে লোকটা কল রিসিভ করলো না৷ তবু রানিয়া বারবার কল দেওয়ায় একসময় বিরক্ত হয়ে কল রিসিভ করতেই ও সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন করলো, “এতোদিন কোথায় ছিলেন আপনি?”
“বিএএফ বেস জহুরুল হক, চট্টগ্রাম।”
“ত্যাড়া জবাব চাইনি আমি। সরাসরি বলতে কী সমস্যা?”
“আমার কাছ থেকে সোজাসাপ্টা জবাবের আশাও কোরো না রানিয়া। তোমাকে বলেছিলাম, আমাকে আর কল-টেক্সট না দিতে। অথচ বিগত কতগুলো দিনে তুমি কন্টিনিউসলি আমাকে কল-টেক্সট দিয়ে গেছো।”
“কেন আপনার সাথে যোগাযোগ করতে রেস্ট্রিকশন আছে নাকি?”
“রেস্ট্রিকশন তো অবশ্যই আছে। ঢাকা থেকে ফেরার সময়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলাম তোমাকে। তোমার মনে হচ্ছে, মেমোরি খুব বেশি খারাপ।”
“মেমোরি খারাপ না আমার। ভালোভাবেই মনে আছে আপনার কথাগুলো।”
“তাহলে রেস্ট্রিকশন মানছো না কেন?”
আভিয়ানের কাঠখোট্টা প্রশ্নের বিপরীতে রানিয়া এবার আর কোনো ঠাটবাট জবাব দিতে পারলো না। চুপ করে রইলো। আভিয়ান কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো জবাবের আশায়। কিন্তু অপেক্ষমান সময় পেরোনোর পরেও ফোনের ওপাশ থেকে রানিয়ার তরফ হতে কোনো জবাব না পেয়ে আভিয়ান কিঞ্চিৎ গম্ভীর স্বরে প্রশ্ন ছুঁড়লো, “মিসেস রানিয়া, ডু ইউ ফিল উইক ফর মি?”
রানিয়া এতোক্ষণ চুপ করে থাকলেও প্রশ্নটা শোনামাত্র-ই বুক কেঁপে উঠলো ওর। কথা বলতে গিয়ে কন্ঠস্বর কাঁপতে লাগলো। নিজেকে সামলে নিয়ে রানিয়া একটু কঠোরভাবেই জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলো। আভিয়ানকে বললো, “আমি কেন আপনার প্রতি উইক হতে যাবো? এতো সোজা?”
“হু, মনে হচ্ছে তো তাই।”
“একদমই না। আমি আপনার প্রতি কোনো উইক-টুইক কিছু না। আর কখনো হবোও না। তাছাড়াও আপনার সাথে কথা বলারও বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই আমার। এই ক’দিন যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম শুধু একটা কারণে।”
“কী কারণ?”
“আপনি কি আমার ওপর রিভেঞ্জ নিতে চাচ্ছেন?”
“কীসের রিভেঞ্জ?”
“এইযে ডিভোর্সের কথাবার্তা বলে আমাকে…”
“তোমাকে কী?”
রানিয়া আর কিছু বলতে পারলো না। কথাটাও সম্পূর্ণ হলো না। রানিয়া কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে পুনরায় বললো, “আপনি কি সত্যিই ডিভোর্সটা হয়ে যাক— এটা চাচ্ছেন?”
“উহহম, জানা নেই।”
“এটা কোনো জবাব হতে পারে না আভিয়ান। আমি একটা স্পষ্ট জবাব চাইছি।”
“মিসেস রানিয়া, আ’ম বিজি রাইট নাউ। পরে কথা বলছি।”
“না! আপনি আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে যেতে পারবেন না আভিয়ান।”
“আমি তোমার কাছে বাধ্য? তুমি কি আমার অথোরিটি?”
প্রশ্নটা শুনে থতমত খেল রানিয়া। তবে কথা ঘুরে যাচ্ছে বলে ও বললো, “আপনি শুধু আমাকে বলে যান, আপনি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছেন ডিভোর্সের কথা বলে?”
“তোমার সাথে কি আমার ঠাট্টার সম্পর্ক?”
“না।”
“তাহলে ঠাট্টা কেন করবো?”
“আমার মনে হলো।”
“তোমার মনে হওয়া না হওয়াতে আমার কিছু যায় আসে না।”
রানিয়া এবার কিছুটা কঠোরভাবেই বললো, ”আপনি শুধু আমাকে বলুন, এমন কেন করছেন আমার সাথে?”
“লুক রানিয়া, আমি তোমাকে স্পষ্ট বলি, হ্যাঁ আমি রিভেঞ্জ-ই নিচ্ছি। একটা সম্পর্কে থাকা অবস্থায় বিনা কারণে হুটহাট ডিভোর্সের কথা তুললে কেমন লাগে সেটা তোমারও বোঝা উচিত। আর যদি তুমি বুঝতে না পারো, তাহলে তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে অবুঝ মেয়ে। আর তোমাকে বোঝানোর দায়-দায়িত্ব নিয়েও আমি বসে নেই। সুতরাং, আমার থেকে দূরে থাকা-ই শ্রেয় তোমার জন্য।”
“তাহলে ওসব কেন করলেন?”
রানিয়ার উদ্বিগ্ন কন্ঠস্বর। আভিয়ান ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো, “কীসব?”
“ওইযে সেদিন রাতে…”
রানিয়ার কথা শুনে আভিয়ান এবার ক্রুর হাসলো। ঠোঁটের কোণে সেই সুক্ষ্ম হাসি বজায় রেখেই বললো, “মিসেস রানিয়া! তোমাকে সেদিন রাতেই একটা কথা বলেছিলাম মনে আছে?
“মনে নেই।”
“নো প্রবলেম। আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি। তোমার যা জেদ, তার চাইতেও শতগুণ বেশি জেদ আমার। জানো তো, ছোটবেলায় মাঠে খেলতে গেলে কেউ যদি আমার কাছ থেকে ফুটবলটা একবার সরিয়ে নিতো তখন আমি তাকে খেলার সুযোগ-ই দিতাম না আর। তার পায়ের কাছে বল-ই পৌঁছাতো না। একবার আমার এক দূরসম্পর্কের আত্মীয় আম্মাকে বলেছিলেন, তোমার ছেলে তো বেয়ারা। ওকে দিয়ে ওসব ডিসেন্ট অফিসার-টফিসার হবে না। সেই আমি, শাহ আহমেদ আভিয়ান আজ এয়ার ফোর্সের একজন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট। একজন এয়ার অফিসার। তাহলে বুঝো, আমার জেদটা কোন মাত্রায়। সেই আমার সাথে কিনা তুমি এতোটুকু মেয়ে জেদ দেখানোর সাহস করো! এখন করেই ফেলেছো যখন, তখন আমার জেদটাও দেখে নাও ডিয়ার ওয়াইফ। আমার জিতের জন্য আমি সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত যেতে পারি। সেখানে ওসব আমার কাছে খুব সামান্য। তবে, তুমি কখনো নিজের কৃতকর্মের জন্য আমার কাছে আন্তরিকতার সাথে ক্ষমা চাও, তখন নাহয় আমি সবকিছু ঠিক করে নেওয়ার কথা ভাবতে পারি। স্যরি বললে…”
“স্যরি মাই ফুট! আপনার কথাবার্তা শুনে যা বোঝার বোঝা হয়ে গেছে আমার। আপনার মতো জঘন্য লোককে আমি কখনো স্যরি বলবোও না। আর আপনার সাথে কনট্যাক্ট করারও প্রয়োজন বোধ করবো না আভিয়ান। আপনি নিজেকে খু্ব বেশি চালাক মনে করেন। কিন্তু আভিয়ার, আমাকে সেরকম বেহায়া মেয়ে মনে করলে ভুল করছেন আপনি। ভাববেন না, আপনার ওসব কাজের জন্য আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে আমি হাতে-পায়ে ধরে আপনার কাছে থাকতে চাইবো। ছিহ! ভাবলেও ঘৃণা লাগে আমার। আপনার-আমার সম্পর্ক আনঅফিসিয়ালি এখানেই শেষ। আর অফিসিয়ালি শেষ করার প্রয়োজন হলে আপনি এসে করে যাবেন। এসব নিয়ে সময় নষ্ট করার মতো সময়ও আমার জীবনে নেই। গুড বাই।”
রানিয়া ফোনটা কেটে দিলো। আভিয়ান ফোনের এপাশ থেকে চুপচাপ এতোক্ষণ ওর কথা শুনছিল। রানিয়া কল কাটতেই ক্রুর হাসলো ও। হাতের ফোনটা ডেস্কের ওপর ছুঁড়ে ফেলে চেয়ারে বসে মাথা এলিয়ে দিলো। তখনই একটা মেয়ে কোনোপ্রকার নক করা ছাড়াই ওর কেবিন রুমে আসলো। মেয়েটাকে দেখে উঠে বসলো আভিয়ান। মেয়েটা এগিয়ে এসে বললো, “সবকিছু ঠিকঠাক তো? ঝামেলা করবে নাকি আবার?”
আভিয়ান মুচকি হেঁসে জবাব দিলো, “উঁহু। করবে না। ভীষণ বোকা ও। বোকা-ই থাকুক।”
মেয়েটাও হাসলো। এই ছেলেটা সহজে হাসে না। ওর এই ছেলেটার বিরল হাসি দেখতে বড্ড ভালো লাগে। শান্তি অনুভব হয়। একটা প্রাসঙ্গিক কারণে হাসছে দেখে ভেতরে ভেতরে ভীষণ আনন্দ অনুভূত হচ্ছে মেয়েটার।
.
.
আজ প্রায় দিন পঁচিশের মতো কেটে গেছে আভিয়ানের চট্টগ্রাম ফিরে যাওয়ার। রানিয়া নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হতে চাইছে। মুভ অন করতে চাইছে। কিন্তু মাঝেমধ্যে ওই দিনটা খুব বাজেভাবে মনে পরে যায় ওর। নিজেকে অপরাধী মনে হয় ভীষণ। কারণ ওর নিজেরও দোষ ছিল। ও সায় না দিলে আভিয়ান ওর কাছেও ঘেঁষতে পারতো না। কিন্তু বড় বোকামি করে ফেলেছে রানিয়া। অনেক বড় বোকামি। এখন তার ফল হাতেনাতে টের পাচ্ছে। এই যে, ওই স্মৃতি ওকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে যেন৷ না, স্মৃতিটা যে খুব ভালো তা-ও নয়। অনেক সময় মানুষের জীবনকে সুন্দর স্মৃতিগুলোর চাইতে বাজে স্মৃতিগুলো দখল করে রাখে বেশি। রানিয়ার সাথেও হয়েছে তাই। ওর জীবনের এতোসব ঘটনা কাকে বলবে ও? সবাইকে সব কথা বলা যায় না। চাইলেও বলে উঠতে পারে না। রানিয়া এখন আবারও অ্যাডমিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এক বছর গ্যাপ দেওয়া তো কম কথা নয়। তবে রানিয়ার নিজের ওপর ভরসা আছে। ওর মনে হয়, ও চেষ্টা করলেই পারবে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে বেশ ভালো ছাত্রী ও। ওকে দিয়ে সম্ভব হবে। সেই সম্ভবনা নিয়েই পড়াশোনা করছে রানিয়া। আর ক’মাস পরেই অ্যাডমিশন শুরু।
রানিয়ার ইদানীং শরীর একদমই ভালো যাচ্ছে না। কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে, ঘুম অনেক বেশি হচ্ছে। ওর গত কিছুদিন যাবত মনে হচ্ছে, সারাদিন ঘুমাতে পারলে বোধহয় অনেক ভালো লাগতো ওর। শুধু ঘুমাতে ইচ্ছা করে, যেকোনো সময়ে প্রচুর ঘুম পায়। এছাড়াও এই কটাদিন প্রসাবের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে গেছে, মন-মেজাজ প্রচন্ড খারাপ থাকছে সবসময় আর প্রায়সময় বমি বমি ভাব আর হালকা পেটে ব্যাথাও হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, রানিয়ার পিরিয়ডের ডেট চলে গেলেও পিরিয়ড হচ্ছে না ওর। ওর ভেবেছিল, এবার বোধহয় দুই-চারদিন দেরি করে পিরিয়ড হবে। কিন্তু সপ্তাহখানেক কেটে গেলেও পিরিয়ড হয়নি ওর। তবে, ওর কাছে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, পিরিয়ড না হলেও ওর হালকা স্পটিং হয়েছে। যেটা ঠিক র’ক্তের মতোও নয়। কেমন অদ্ভুত জানি। রানিয়া ব্যাপারটা দেখেও কাউকে কিছু বলেনি প্রথমে। ভেবেছিল, এই বোধহয় দু-একদিনের মধ্যে পিরিয়ড শুরু হবে। এটা তার পূর্বলক্ষ্মণ। কিন্তু এমন কিছুই হলো না। আজ গোটা চারটা দিন কেটে গেছে। রানিয়া বুঝদার মেয়ে। ওর অনেককিছু সম্পর্কেই মোটামুটি ধারণা যে একেবারে নেই, তা নয়। সেই ধারণা থেকেই আজ এসব নিয়ে অনেকক্ষণ যাবত ভাবতে বসে আঁতকে উঠলো অজানা এক আশংকায়। মনের ভ্রান্তি ভেবে তাড়িয়ে দিতে চাইলেও একটা দ্বিধা মনে থেকেই গেল। সেই দ্বিধাটাকে কোনোভাবেই সরাতে পারছে না রানিয়া, যতক্ষণ পর্যন্ত নিজে নিশ্চিত না হচ্ছে। ও মনে-প্রাণে দোয়া করতে লাগলো, ও যেই আশংকা করছে, সেটা যেন ভুল প্রমাণিত হয়।
.
.
রানিয়া আজ বিকালে কোচিং ছুটি শেষে দেরি করেই ফিরলো বাসায়। ফার্মেসি থেকে একটা জিনিস কিনে এনেছে ও। জিনিসটার নাম— প্রেগন্যান্সি সেল্ফ টেস্ট কিট। রানিয়া বাসায় এসেই সোজা নিজের রুমে এসে দরজা আঁটকে দিলো৷ কাঁপা কাঁপা হাতে ব্যাগ হতে জিনিসটা বের করে সেটা চোখের সামনে ধরলো৷ বুক দুরুদুরু করতে লাগলো রানিয়ার। ঘরের দরজা বন্ধ। তবুও রানিয়ার স্বস্তি হলো না। ও আরেকবার চেক করে এসে ফোনটা হাতে নিয়ে ইউটিউবে ঢুকলো। তারপর সার্চবারে গিয়ে সার্চ করতে লিখলো— “প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার ঘরোয়া উপায়।” ভিডিওটা ভালোভাবে দেখে এরপর ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা আঁটকে দিলো ভেতর থেকে।
রানিয়া ওয়াশরুম থেকে বের হলো ঠিক বারো মিনিট পরে। হাতে ওর সেই প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিটটা৷ রানিয়া ঘামছে অনবরত। হাত কাঁপছে ওর। দ্রুত দৌড়ে বিছানার ওপরে গিয়ে বসলো ও। মাথা ঘুরাচ্ছে প্রচন্ড। বমি বমি পাচ্ছে। রানিয়া মুখ চেপে ধরে রাখলো। পায়ের কাছে রাখা কম্বলটা গায়ে টেনে নিলো। রানিয়া কি করবে বুঝতে পারছে না ও। প্যানিক অ্যাটাক আসছে রানিয়ার। পুরো শরীর ধরে কাঁপছে ওর৷ রানিয়া ভাবলো, এখন বাসার কাউকে বলবে না। কিছুই বলবে না ও। রানিয়ার তৎক্ষনাৎ মিশার নামটা মাথায় আসলো। এতোদিনে মিশার সাথে বেস্টফ্রেন্ডের মতো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে রানিয়ার। তুমি থেকে তুইতে এসেছে ওদের বন্ধুত্ব। মিশাকে সব কথা বলে রানিয়া। জাহিনকেও বলে। কিন্তু জাহিন ছেলেমানুষ। ওকে এসব বলা সমীচীন হবে না।
রানিয়া কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা হাতে নিয়ে মিশার নাম্বার ডায়াল করে কল দিলো৷ মিশা কল রিসিভ করতেই রানিয়া ফোন কানের কাছে নিয়ে বললো, “তুই কোথায় মিশা?”
“বাসায় আছি। কী হয়েছে রানি? তোর কন্ঠস্বর এমন লাগে কেন?”
“তুই একটু আমার বাসায় আসতে পারবি মিশা? ইমিডিয়েটলি।”
রানিয়ার কন্ঠস্বর শুনে ভালো ঠেকলো না। ও পনেরো মিনিটের মধ্যে আসার কথা বলে কল কেটে দিলো। তখনই বাসায় যেভাবে ছিল, সেই অবস্থায়-ই রওয়ানা দিলো।
.
.
মিশা এসেছে সকাল এগারোটার দিকে। রানিয়ার মায়ের সাথে দেখা হয়ে গেল ড্রয়িংরুমেই। মিশাকে দেখে রানিয়ার মা ডেকে কথা বললেন। এরপর মিশা রানিয়ার ঘরে যেতেই উনি নাস্তা দিয়ে গেলেন সাথে সাথে এসে। রানিয়া বিছানার একপাশে বসে ছিল। মা’কে দেখে মুখ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলো। মিশা ব্যাপারটা খেয়াল করেছে। রানিয়ার আম্মা রুম থেকে বের হতেই রানিয়া উঠে গিয়ে দরজা আঁটকে দিয়ে আসলো। এরপর সোজা এসে বিছানার ওপরে বসলো৷ মিশা ওকে উদ্বিগ্ন স্বরে প্রশ্ন করলো, “কী হয়েছে দোস্ত?”
রানিয়া কাঁপা কাঁপা হাতে টেস্ট কিটটা মিশার সামনে ধরলো৷ মিশা সেটা দেখলো হতভম্বের মতো। টেস্ট লাইন দেখা যাচ্ছে! রানিয়ার দিকে তাকাতেই রানিয়া এবার মিশাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললো, “আমি প্রেগন্যান্ট মিশা। প্রেগন্যান্ট আমি!”
চলবে
📌 গল্প তো সবে শুরু! এখন আসবে গল্পের আসল ক্লাইম্যাক্স। জাস্ট দেখতে থাকুন। যাদের গল্পটা ভালো লাগবে না, তারা এড়িয়ে চলুন। আর হ্যাঁ, একটা কথা— আমার সব গল্পেই নতুনত্ব থাকে। একটা আরেকটার সাথে মিলে না। সেটা পড়লেই বুঝতে পারবেন আপনারা। আমার লেখ্ সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তারাও ভালোভাবেই চলেন। তবুও সমস্যা হলে বারবার বলছি, এড়িয়ে চলুন। পড়তে হবে না।
Share On:
TAGS: উড়াল মেঘের ভেলায়, ঝিলিক মল্লিক
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৮
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৭
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ১১
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৫
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৪
-
উড়াল মেঘের ভেলায় গল্পের লিংক
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৩
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ২
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৯
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ১০