অবাধ্য_হৃৎস্পন্দন (০২)
সোফিয়া_সাফা
ব্যান্ডেজ প্যাচানো হাত নিয়েই উদ্যানের হবু বউ মেলোকে মেহেন্দি দিয়ে দিচ্ছে ফুল। বাম হাতের তুলনায় ডান হাতে কয়েকটা কম আঘাত করেছিল উদ্যান। হয়তো মেহেন্দি দিতে হবে সেটা ভেবেই একটু করুণা করেছিল। আচ্ছা এটাকে কি করুণা বলা চলে? উদ্যানের মাঝে কি আদৌ করুণা নামক অনূভুতি আছে? ফুল ঠোঁট চেপে সব যন্ত্রণা সহ্য করে মেহেন্দি দিয়ে দিচ্ছে। হাতটা অনবরত কাপছে,
“তোমার হাতে কি হয়েছে?”
মেলোর প্রশ্নে ফুল মুখ তুলে তার দিকে তাকায়। মেলো নামের মেয়েটা অতিরিক্ত সুন্দর। অবশ্য কিছু সংখ্যক লোকের মতানুসারে যে যত বেশি ফর্সা সে তত বেশি সুন্দর। এটাই তো সৌন্দর্য পরিমাপের মাপকাঠি তাইনা? সেই অনুযায়ী মেলোকে একশব্দে সুন্দরী বলাই যায়। যদিও ফুলের কাছে মেলোকে শ্বেত রোগী বলে মনে হয়। যেখানে ফুলকে তার বান্ধবীরা অতিরিক্ত ফর্সা হওয়ার কারণে শ্বেত রোগী বলে ক্ষেপায় সেখানে মেলো তো তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ফর্সা। সেই জন্য অবশ্য ফুল মেলোকে মুলো আর রসুন বলে ডাকে। যদিও সেটা সবার অগোচরে।
“হোয়াট হ্যাপেন? কি ভাবছো?”
ফুল এবার গাল ফুলিয়ে বলল,
“আপনার তেহ আমাকে পানিশ্ট করেছে।”
মেলোর মুখটা পাংশুটে হয়ে গেল। উদ্যান যে কেন কথায় কথায় মেয়েটার গায়ে হাত তোলে সেটাই সে বুঝে উঠে পারছেনা। দেশে ফেরার পর থেকে উদ্যানের বিহেভিয়ার অত্যন্ত স্ট্রেঞ্জ লাগছে। এই উদ্যান তার পরিচিত তেহ নয়।
“তুমি তাকে বলোনি যে আমার জন্যই তোমার চা নিয়ে যেতে লেট হয়েছে?”
“বলার সুযোগটাই দেয়নি।”
মেলো প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলল,
“এই পোশাকে আমি অকওয়ার্ড ফিল করছি। আর কতোক্ষণ এভাবে জোকার সেজে বসে থাকতে হবে?”
ফুল একবার মেলোর পরণের ডিপ গ্রিন রঙের লেহেঙ্গার দিকে তাকাল। লেহেঙ্গার ডিজাইন টা সে আর তার মামী পছন্দ করেছিল।
“এটা তো এক্সক্লুসিভ এডিশনের লেহেঙ্গা। আপনার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করানো হয়েছে। কাপড়টা তো অনেক সফট।”
ফুল থামে তারপর বিরক্তি মিশিয়ে শুধায়,
“আপনার মনে হচ্ছে আপনাকে জোকারের মতো লাগছে?”
ফুলের কথা বলার ধরন দেখে মেলো বুঝলো সে ভুলভাল কিছু বলে ফেলেছে।
“আমি সেভাবে বলতে চাইনি। এসব পড়ার এক্সপেরিয়েন্স নেইতো তাই আরকি।”
ফুল শ্বাস ফেলে নিজের কাজে মনোযোগ দিল। কিন্তু সে ঠিকঠাক ভাবে মেহেন্দি দিতে পারছেনা।
“ফুল ওঠ দেখি।”
আচানক মামীর গলা শুনে ফুল পাশে ফিরে তাকায়। মাহবুবা সুলতানা পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুজন মেহেন্দি আর্টিস্টকে দেখিয়ে বললেন,
“বাকিটা উনারা দিয়ে দেবেন।”
ফুল শুষ্ক ঢোক গিলল, “কিন্তু, মাস্টার জানলে…
মাহবুবা সুলতানা ফুলের বাহু ধরে টেনে তুললেন,
“আমি সামলে নেবো। আর তুই নিজেও তো রেডি হোসনি। যা রেডি হ গিয়ে।”
ফুলের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল। সে মাথা নেড়ে নিজের রুমে চলে গেল। রুমে এসে দেখল উদ্যান আর আবেশের খালাতো বোনেরা তার মেক-আপ দিয়ে ইচ্ছামতো সাজুগুজু করছে। ড্রেসিং টেবিলে যত্ন করে সাজিয়ে রাখা নামি-দামি ব্রান্ডের মেক-আপ আইটেম গুলো এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। এমন দৃশ্য দেখে ফুলের ভীষণ রাগ উঠল। রেগেমেগে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আবেশের মেজ খালার মেয়ে সুনেরা বলল,
“ফুল কিছু মনে কোরোনা। আসলে আমি ভুল করে মেক-আপ আর অর্নামেন্টেসের ব্যাগটা বাড়িতেই ফেলে এসেছি।”
ফুল এবার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আবেশের ছোট খালার ২ মেয়ের দিকে তাকাল। মেয়ে দুটোর মধ্যে একজন ফুলের সমবয়সী হবে, আরেকজনের বয়স ১৩ হবে হয়তো। ফুলের চাহনি দেখে তারা দুজন জোরপূর্বক হাসল। ফুলের সমবয়সী দেখতে মেয়েটা যার নাম হলো মেহেক; সে বলল,
“তোমার মেক-আপ আইটেম গুলো অনেক ভালো ব্রান্ডের সেই জন্য আমরাও…
এরইমাঝে আবেশের রুক্ষ কন্ঠ ভেসে এলো।
“ভালো ব্রান্ডের হলেই কি অনুমতি ছাড়া অন্য কারো জিনিস ব্যবহার করতে হবে?”
হাতে থাকা মেডিসিনের ব্যাগটা টেবিলের উপর রেখে আবেশ ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাড়াল। সুনেরা, মেহেক আর মাহির উদ্দেশ্যে বলল,
“নিজেদের ভালো চাইলে যতদ্রুত সম্ভব এগুলো পূর্বের জায়গাতে গুছিয়ে রেখে এই রুম থেকে বের হ।”
আবেশের ধমক খেয়ে তিনজনই সবকিছু গোছাতে শুরু করল।
“থাক আবেশ ভাই। আমার সমস্যা নেই। সাজতে দেও তাদেরকে।”
ফুলের কথা শুনে তারা তিনজন বেশ খুশি হলো। আবেশ একটা শ্বাস ফেলে ফুলের সামনে এসে দাঁড়ায়।
“মাঝে মাঝে প্রতিবাদও করতে হয় ফুল। সবকিছু সহ্য করতে নেই।”
“আমি যার কাছ থেকে সব শিখেছি সে যে আমাকে প্রতিবাদ করতে শেখায় নি আবেশ ভাই।”
“ফুপি আসেনি এখনও?”
ফুল জানেনা কেন, কিন্তু তার গলা আটকে এলো। মায়ের কথা মনে পড়তেই কান্না পেয়ে গেলো। তার মা প্রায়ই উধাও হয়ে যায়। কোথায় যায় সে জানেনা। আজকে সারাটা দিন সে মায়ের মুখটা পর্যন্ত দেখেনি। এই ব্যাপারে হাজারবার জিজ্ঞেস করলেও আজ অবধি কোনো উত্তর মেলেনি। বরাবরই তার মা রেহানা বেগম কথাটা এড়িয়ে গেছেন। আবেশ বোধহয় ফুলের মন খারাপ টের পেল। সে আলতো হাতে ফুলকে নিয়ে টেবিলের কাছে এলো। মেডিসিনের পাতা থেকে একটা ট্যাবলেট খুলে ফুলের হাতে ধরিয়ে দিল,
“এটা খেয়ে নে ব্যাথা কমে যাবে।”
আচমকাই ফুলের চোখজোড়া ভরে উঠল। টুপ করে একফোঁটা নোনাজল গড়িয়ে পড়ল। আবেশ তার মুখটা দুহাতের আঁজলায় নিয়ে আদূরে গলায় বলল,
“আমি ফুলের কান্না নয় হাসি দেখতে চাই। ফুলের হাসি আমার ভীষণ প্রিয়।”
মুহূর্তেই ফুল কান্নার মাঝেই হেসে ওঠে, আবেশ ঘুরে যায় টেবিলের দিকে। জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে ফুলের হাতে দিয়ে বলে,
“খেয়ে রেস্ট নে।”
আবেশ রুম থেকে বেরিয়ে গেল। ফুল ট্যাবলেট টা খেয়ে ধপ করে বিছানায় বসে পড়লো। তার ভালো লাগছেনা। তাই ভাবলো, সে আর রেডি হবেনা। নিচে যাওয়ার থেকে রেস্ট নেওয়া উত্তম। ঘড়ির কাটা ১০ টা ছুইছুই। সে রেস্ট নেয়ার লক্ষ্যে বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়া মাত্রই মেহেক চিল্লিয়ে ওঠে,
“এই ফুল! তুমি এভাবে নেতিয়ে পড়ছো কেন? রেডি হবেনা?”
ফুল কোলবালিশে মুখ গুজে বলল,
“না, আমার দায়িত্ব টা মামী সামলে নিয়েছেন। আমার আর যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তোমরা গিয়ে এনজয় করো।”
মেহেকের মুখটা ছোট হয়ে গেল। অভিমানী সুরে বলল,
“এটা কেমন কথা? তুমি হলে গিয়ে আমাদের গুরু। তুমি না গেলে কিভাবে হবে?”
এহেন কথা শুনে ফুল মুখ তুলে সরু চোখে মেহেকের পানে তাকায়। মেহেকের সাথে এবার মাহিও তাল মেলাল।
“হ্যাঁ ফুল আপু তুমি আমাদেরকে গাইড না করলে আমরা তো একদমই নাচতে পারবোনা। চলোনা,”
সুনেরা মলিন গলায় বলল,
“তোমার মেক-আপ প্রোডাক্ট গুলো অনুমতি ব্যতিত ইউজ করার কারণেই কি তুমি রাগ করেছো?”
ফুল তড়িৎ গতিতে উঠে বসল,
“আরে না সুনেরা আপু। আমি কিছু মনে করিনি। আসলে আমি হাতে ব্যাথা পেয়েছি। তাছাড়া আমার শরীর টাও ভালো নেই।”
এবার ৩ জনই ফুলকে জোর করতে লাগল,
“প্লিজ ফুল চলো। দরকার হলে আমরা তোমাকে রেডি হতে সাহায্য করবো।”
কথাটা বলেই মেহেক ফুলের বাহু ধরে টানতে লাগলো। ফুল আর ‘না’ করতে পারলোনা।
বদ্ধ রূমের শীতল তাপমাত্রার মাঝেও শার্টলেস বসে আছে উদ্যান। পুরো নাম তেহজিব উদ্যান খানজাদা। মেক্সিকোতে ১৫ বছরের অধিক সময় কাটানোর ফলস্বরূপ তাকে কিছুটা মেক্সিকানদের মতো লাগে। যদিও জন্মগত ভাবেই তার চোখজোড়া বাদামী রঙের। পুরোপুরি বাদামী নয়। বাদামী-কালোর সংমিশ্রণ। যদিওবা কপালের উপর ছড়িয়ে থাকা চুলগুলোর জন্য তার সেই চোখজোড়া সহসা পরিলক্ষিত হয়না। হানি স্কিন টোন, ছয় ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার সুঠাম দেহের অধিকারী। চোখমুখে গাম্ভীর্য ঠিকরে পড়ছে। মাঝে মাঝে কাজের ফাঁকে ফাঁকেই তার চোয়াল শক্ত হয়ে আসছে। আবার কখনো কখনো জিহ্বার অগ্রভাগ গালের ভেতরের দেয়াল স্পর্শ করছে।
নিঃশব্দ রুমজুড়ে শুধু কি-বোর্ড প্রেসের আওয়াজ। হয়তো খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজে ডুবে আছে সে। এরইমাঝে একদম হঠাৎ করেই তীব্র গানের শব্দ ভেসে এলো। মনোযোগে বিগ্ন ঘটতেই উদ্যানের হাতের আঙুল থেমে গেলো। কিছুক্ষণ স্থির থেকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো কাঠের তৈরি শক্তপোক্ত বন্ধ দরজার দিকে। মুহুর্তেই তার শক্ত চোয়াল পুনরায় দৃশ্যমান হলো। সে বেশ খানিকক্ষণ সেভাবেই থম মেরে বসে রইল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সাউন্ড বক্সের আওয়াজ আরও বেড়ে গেছে। উদ্যান এবার বসা থেকে উঠে দাড়াল। একটা ধূসর রঙা শার্ট গায়ে জড়িয়ে ধুপধাপ পা ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। দোতলার সিঁড়ির কাছে আসতেই সে থেমে যায়। সামনেই আবেশ হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। আবেশের দৃষ্টি অনুসরণ করে উদ্যান বড় লিভিং রুমের দিকে তাকায়। সেদিকে তাকাতেই তার চাহনি নিগূঢ় হলো। নিচে যৌথ ভাবে নাচ পরিবেশন করছে ফুল, মেহেক, মাহি, সুনেরা সহ আরও কয়েকজন মেয়ে। ফুলের পরণে সোনালি রঙা পার্টি ড্রেস। হাটু অবধি লম্বা চুলগুলো কার্ল করার ফলে চুলগুলো কোমড়ের কিছুটা নিচ অবধি গুটিয়ে এসেছে। ফুল গানের তালে নেচে উঠল,
Sabki baaratein aayi
Sabki baaratein aayi doli tu bhi lana
Dulhan banake hum ko raaja ji le jana
Sabki baaratein aayi
অর্থ: সবার বরযাত্রী এসেছে,
সবার বরযাত্রী এসেছে—তুমিও এবার পালকি নিয়ে এসো,
আমাকে বধূ করে, নিজের সাথে নিয়ে যাও।
সবার বরযাত্রী এসেছে…
উদ্যান সেদিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এরইমাঝে আবেশ দ্রুতপায়ে নিচে নেমে ফুলের সাথে নাচতে লাগলো।
Vaade poore main karunga
Thoda wait tu karle baby
Tujhko hi dulhan banaunga
Doli hai ready kabse
Tumne call kiya tha tabse
Sherwani raste mein hai
Sehra bhi order karwaya
Sabki baaratein aayi
Sabki baaratein aayi doli main bhi launga
Dulhan banake tujhko sang apne le jaunga
Sabki baaratein aayi
অর্থ: প্রতিশ্রুতিগুলো আমি-ই পূরণ করব,
কিছুটা অপেক্ষা করো, প্রিয়তমা,
তোমাকেই বধূ বানাবো।
পালকি তো অনেক আগেই প্রস্তুত,
যখন তুমি ফোন করেছিলে, তখন থেকেই।
শেরওয়ানি রাস্তায় আসছে,
সেহরাও অর্ডার করে দিয়েছি।
সবার বরযাত্রী এসেছে,
সবার বরযাত্রী এসেছে—আমিও পালকি নিয়ে আসব,
তোমাকে বধূ বানিয়ে নিজের সাথে নিয়ে যাব।
সবার বরযাত্রী এসেছে…
নাচ শেষ হতেই চারপাশ থেকে করতালির আওয়াজ ভেসে আসে। ফুল তো আবেশের দিকে তাকিয়ে হাসছে। আর আবেশও তার হাসি মন ভরে দেখছে। অনবরত হাততালির আওয়াজে ফুল হাসতে হাসতেই আশেপাশে তাকাল। কিন্তু আশেপাশের সবার হাততালি তো থেমে গেছে। তাহলে কোথা থেকে এই একটানা হাততালির শব্দ আসছে? ফুল হঠাৎ করেই দোতলার দিকে তাকাতেই তার হাসি মিলিয়ে গেল। উদ্যান এখনও একই ছন্দে হাততালি দিয়েই যাচ্ছে। ফুল কয়েকটা শুষ্ক ঢোক গিলল কিন্তু লাভ হলোনা। তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। চারপাশ নিঃস্তব্ধ সেই নিস্তব্ধতার মাঝে হাততালির শব্দগুলো ফুলকে ভীষণ ভাবে প্রভাবিত করছে। তার পুরো শরীর থরথর করে কাপছে কিন্তু পা জোড়া জমে গেছে। তার মন চাইছে পালিয়ে যেতে তবে শরীর চাইছে অবশ হয়ে যেতে। সমস্ত শক্তি হারিয়ে ফুল ফ্লোরেই বসে পড়ল। আবেশ তাকে সামলানোর চেষ্টায় তার কাধে হাত রাখতেই হাততালির শব্দ আরও প্রকোপ হলো। ফুলের চোখজোড়া এখনো উদ্যানের দিকেই নিবদ্ধ। আপাতত চোখ সরানো নিরাপদও নয়। চোখ সরানো মাত্রই যদি উদ্যান এসে তার গলা চেপে ধরে? এতো ভয়ের মাঝেও তার মনে শুধু একটাই প্রশ্ন।
উদ্যান এবাড়িতে আসার দুসপ্তাহ হয়েছে। এর মাঝে উদ্যান বেশি হলে ২-৩ রাত বাড়িতে থেকেছে। সে তো জানে উদ্যান রাতে বাড়িতে থাকেনা। তার উপর মাহবুবা সুলতানা বলেছিলেন উদ্যান এই অনুষ্ঠানে থাকবেনা। সেই হিসেবে ফুল তো ধরেই নিয়েছিল উদ্যান তাকে মা*রার পরপরই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। ফুলের ভাবনার মাঝেই সে লক্ষ্য করলো উদ্যান হাততালি দিতে দিতে নামার জন্য সিঁড়ির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফুল এবার অজান্তেই আবেশের হাত সরিয়ে দিয়ে পিছিয়ে যেতে লাগলো। ভয়ের চোটে সে মেহেন্দি আর্টিস্টের হাত থেকে মেহেন্দির কোণ ছিনিয়ে নিয়ে মেলোর হাতে দিতে লাগলো। কিন্তু তার চোখ তো উদ্যানের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। উদ্যান যত এগিয়ে আসছে তার হৃৎস্পন্দনের গতি তত বাড়ছে। এভাবে বেখেয়ালি হয়ে মেহেন্দি দিতে গিয়ে একপর্যায়ে সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত ভাবে ফুল মেলোর হাত চেপে ধরল। নাচের সুবিধার্থে হাতের ব্যান্ডেজ খুলেই সে নিচে নেমেছিল। যার ফলে মেলোর হাতের তালুর মেহেন্দির ছাপ ফুলের হাতেও লাগল। মেলো চিল্লিয়ে উঠতেই ফুল চেতনা ফিরে পায়। তৎক্ষনাৎ সে মেলোর হাত ছেড়ে দেয়। উদ্যানের থেকে চোখ সরিয়ে নিজের হাতের দিকে তাকাতেই তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। মেলোর হাতের তালুতে ‘তেহ’ লেখা ছিল সেটা পুরোটাই ফুলের হাতেও লেগে গেছে। ফুল এবার ডুকরে কেঁদে উঠল।
চলবে,,,
(নেক্সট পর্ব পেতে লাইক কমেন্ট করুন।)
Share On:
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE